বাংলাদেশ

২৪ ঘণ্টায় ২২৪টি নমুনা পরীক্ষায় ৩ জনের করোনা ভাইরাস শনাক্ত

দেশজুড়ে আবারও করোনা সংক্রমণের হালকা ঊর্ধ্বগতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ২২৪টি নমুনা পরীক্ষায় নতুন করে তিনজনের শরীরে শনাক্ত হয়েছে করোনাভাইরাস। স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্য বলছে, চলতি বছর এখন পর্যন্ত ৬২৬ জন আক্রান্ত এবং ২৪ জনের মৃত্যু হয়েছে।

করোনা শনাক্তের সর্বশেষ আপডেট

দেশে আবারও করোনাভাইরাস সংক্রমণের চিহ্ন দেখা দিচ্ছে। স্বাস্থ্য অধিদফতর জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ২২৪টি নমুনা পরীক্ষার মাধ্যমে তিনজনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে।

রবিবার (৬ জুলাই) সকালে পাঠানো স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের সর্বশেষ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

শনাক্তের হার দাঁড়িয়েছে প্রায় ১.৩৪ শতাংশ। যদিও পূর্বের তুলনায় সংখ্যাটি কম, তবে এটি সংক্রমণের সম্ভাব্য পুনরাবৃত্তি নির্দেশ করতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

চট্টগ্রামে নতুন করে শনাক্ত ৩ জন

চট্টগ্রাম জেলা থেকেও এসেছে করোনা সংক্রমণের নতুন খবর। চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় জেলার বিভিন্ন হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে মোট ১৩৬টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়।

এর মধ্যে তিনজনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়। এদের দুজন শেভরন ডায়াগনস্টিক সেন্টার এবং একজন এপিক হেলথ কেয়ারে নমুনা জমা দেন।

চট্টগ্রাম জেলায় জুন মাস থেকে সংক্রমণ আবার বাড়তে শুরু করেছে। চলতি বছর এখন পর্যন্ত শুধুমাত্র চট্টগ্রামেই ১৭৮ জন আক্রান্ত হয়েছেন এবং সাতজনের মৃত্যু হয়েছে।

চলতি বছরের পরিসংখ্যান: আক্রান্ত ও মৃত্যু

স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্যমতে, ২০২৫ সালের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত দেশে করোনাভাইরাসে মোট ৬২৬ জন আক্রান্ত হয়েছেন। মৃত্যুর সংখ্যা ২৪-এ পৌঁছেছে, যা চলতি বছরের তুলনায় অনেকটাই নিয়ন্ত্রিত মনে হচ্ছে।

তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সংক্রমণের বর্তমান হার কম হলেও উদাসীনতার সুযোগ নেই। করোনা সংক্রমণ এখনও sporadic আকারে চলছে।

অতীতের প্রেক্ষাপট: কোথা থেকে শুরু, কতদূর এসেছি

২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহান শহর থেকে ছড়িয়ে পড়া এই ভাইরাস বাংলাদেশে প্রথম শনাক্ত হয় ২০২০ সালের ৮ মার্চ। আর প্রথম মৃত্যু ঘটে ১৮ মার্চ।

২০২১ সালের ৫ ও ১০ আগস্ট ছিল ভয়াবহতম দিন—এই দুই দিনে সর্বোচ্চ ২৬৪ জন করে মৃত্যুর রেকর্ড হয়েছিল। তখন থেকে শুরু হয় কঠোর বিধিনিষেধ, লকডাউন ও টিকাদান কর্মসূচি।

বর্তমানে পরিস্থিতি অনেকটাই স্বাভাবিক হলেও মাঝে মাঝে নতুন করে সংক্রমণ দেখা দিচ্ছে।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরামর্শ ও সতর্কতা

স্বাস্থ্য অধিদফতর সতর্কবার্তায় জানিয়েছে, উপসর্গ দেখা দিলে অবশ্যই নমুনা পরীক্ষা করতে হবে। বিশেষ করে যাদের জ্বর, সর্দি, কাশি বা শ্বাসকষ্ট রয়েছে, তাদের দ্রুত স্বাস্থ্যসেবার আওতায় আসতে হবে।

সংক্রমণ এড়াতে জনসমাগম এড়িয়ে চলা, নিয়মিত মাস্ক পরা ও হাত ধোয়ার অভ্যাস বজায় রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

সংক্রমণ বৃদ্ধির কারণ কী হতে পারে?

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, সাধারণ মানুষের মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি মানার প্রবণতা কমে গেছে। অনেকেই করোনাকে ‘অতীতের রোগ’ বলে এড়িয়ে যাচ্ছেন।

এছাড়া বড় কোনো আউটব্রেক না থাকলেও sporadic সংক্রমণ চলতে থাকা নতুন করে উদ্বেগের কারণ হতে পারে, বিশেষ করে যাদের প্রতিরোধ ক্ষমতা কম।

ভবিষ্যতের প্রস্তুতি: আরও কি আসছে?

বিশ্লেষকদের মতে, নতুন কোনো ভ্যারিয়েন্টের আগমন না ঘটলেও সময়মতো সতর্ক না হলে সংক্রমণ বাড়তে পারে।

এখনই প্রয়োজন সচেতনতা এবং দ্রুত শনাক্তকরণ ও আইসোলেশনের ব্যবস্থা। তবে জনসচেতনতা ছাড়া সরকারের একার পক্ষে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়।

“গত ২৪ ঘণ্টার করোনা শনাক্তের তথ্য আমাদের আরও সতর্ক করে দেয়। জনসাধারণকে এখনই সাবধান হতে হবে”—স্বাস্থ্য অধিদফতরের এক কর্মকর্তা।

সারসংক্ষেপ 

গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনা শনাক্তের সংখ্যা কম হলেও এটি উপেক্ষার সুযোগ নেই। স্বাস্থ্যবিধি মানা, মাস্ক পরা ও সংক্রমণ এড়াতে সচেতনতা বজায় রাখা এখন সময়ের দাবি।

বিশেষজ্ঞদের মতে, পরিস্থিতি কীভাবে মোড় নেবে তা নির্ভর করছে জনগণের আচরণ ও পরবর্তী প্রতিক্রিয়ার ওপর। এখনই সময়—সতর্ক হই, সচেতন থাকি।

এম আর এম – ০১৯২, Signalbd.com

মন্তব্য করুন

Related Articles

Back to top button