ফ্রি মোবাইল-ফ্রিজ আনুন বিদেশ থেকে – জেনে নিন ১৯ পণ্যের তালিকা

বিদেশ থেকে দেশে ফিরে আসার সময় যাত্রীরা প্রিয়জনদের জন্য উপহার নিয়ে আসেন, আবার নিজেদের গৃহস্থালির প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রও আনেন। এইসব পণ্য আনতে সরকারের পক্ষ থেকে বিশেষ ব্যাগেজ রুল সুবিধা দেওয়া হয়।
সর্বশেষ সরকারিক ব্যাগেজ রুল অনুযায়ী, বিদেশ থেকে ফেরার সময় ১৯ ধরনের পণ্য বিনা শুল্কে আনা যাবে এবং আরও ১১ ধরনের পণ্য শুল্ক-কর পরিশোধ করে আনা সম্ভব হবে।
বিনা শুল্কে বিদেশ থেকে আনা যাবে এমন পণ্যের তালিকা
১২ বছর বা তার বেশি বয়সী একজন যাত্রী সর্বোচ্চ ৬৫ কেজি পর্যন্ত ব্যাগেজ শুল্ক মুক্তে আনতে পারবেন। অন্যদিকে, ১২ বছরের নিচের বয়সী যাত্রী ৪০ কেজি পর্যন্ত বিনা শুল্কে পণ্য আনতে পারবেন।
বিনা শুল্কে আনা যাবে নিম্নলিখিত ১৯ ধরনের পণ্য:
- দুটি ব্যবহৃত মুঠোফোন
- একটি নতুন মোবাইল ফোন
- ১৫ বর্গমিটার আয়তনের কার্পেট
- ২৯ ইঞ্চি পর্যন্ত টেলিভিশন
- ডেস্কটপ বা ল্যাপটপ কম্পিউটার
- কম্পিউটার স্ক্যানার ও প্রিন্টার
- ভিডিও ক্যামেরা, স্টিল বা ডিজিটাল ক্যামেরা
- ওভেন ও মাইক্রোওয়েভ ওভেন
- রাইস কুকার, প্রেসার কুকার, গ্যাস ওভেন
- টোস্টার, স্যান্ডউইচ মেকার, ব্লেন্ডার, ফুড প্রসেসর, জুসার, কফি মেকার
- সেলাই মেশিন
- টেবিল ফ্যান
- ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য খেলার সামগ্রী
- ১০০ গ্রাম ওজনের সোনার গয়না
- এক কার্টন সিগারেট
- সিডি ও স্পিকারসহ মিউজিক সিস্টেম
শুল্ক-কর পরিশোধ করে আনা যাবে এমন পণ্য
নিচে উল্লেখিত ১১ ধরনের পণ্য বিদেশ থেকে এনে শুল্ক-কর পরিশোধের মাধ্যমে আনা যাবে:
- ১১৭ গ্রাম ওজনের সোনার বার (৪০ হাজার টাকা শুল্ক-কর)
- ২৩৪ গ্রাম বা ২০ তোলা রৌপ্যবার
- ৩০ ইঞ্চি ও তদূর্ধ্ব টেলিভিশন
- হোম থিয়েটার সিস্টেম
- রেফ্রিজারেটর ও ডিপ ফ্রিজার
- এয়ারকন্ডিশনার
- ডিশ অ্যানটেনা
- এইচডি ক্যামেরা
- ঝাড়বাতি
- বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমতি নিয়ে এয়ারগান
- ডিশওয়াশার, ওয়াশিং মেশিন ও ক্লথ ড্রায়ার
এই পণ্যের উপর শুল্ক-কর ৩০০ টাকা থেকে ৯০ হাজার টাকা পর্যন্ত হতে পারে।
এবার নতুন কিছু পরিবর্তন ও নিয়মাবলী
২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে বিদেশ থেকে সোনার বার আনার ক্ষেত্রে নতুন নিয়ম আরোপ করা হয়েছে। এখন থেকে বছরে একজন যাত্রী সর্বোচ্চ ১১৭ গ্রাম ওজনের একটি সোনার বার আনতে পারবেন। এর শুল্ক নির্ধারণ করা হয়েছে প্রতি ভরিতে (১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম) ৫ হাজার টাকা।
আগে যাত্রী যতবার খুশি ততবার ১০০ গ্রাম ওজনের সোনার গয়না বিনা শুল্কে আনতে পারতেন, তবে এখন এটি সীমাবদ্ধ করে বছরে মাত্র ১০০ গ্রাম ওজনের গয়না আনাই যাবে।
এছাড়া, বিদেশফেরত যাত্রী বছরে দুইটি ব্যবহৃত মুঠোফোন ও মাত্র একবার একটি নতুন মোবাইল ফোন শুল্ক-করমুক্ত আনতে পারবেন।
ব্যাগেজ রুলের প্রাসঙ্গিকতা ও গুরুত্ব
বাংলাদেশে বিদেশ থেকে ফেরার সময় ব্যাগেজ রুলের নিয়ম কানুন নির্ধারণ দেশের অর্থনীতি ও বাণিজ্য নীতির সঙ্গে সরাসরি জড়িত। সরকারের লক্ষ্য হলো অবৈধ পণ্য আমদানি রোধ করা এবং দেশের অর্থনৈতিক স্বার্থ সংরক্ষণ করা।
শুল্ক-কর সংক্রান্ত এই নিয়মাবলী বিদেশ থেকে আসা যাত্রীদের জন্য একটি স্বচ্ছ ও সুবিধাজনক পরিবেশ সৃষ্টি করে, যাতে তারা প্রয়োজনীয় পণ্যগুলি আনতে পারেন সহজেই। একই সাথে দেশের বাজারে অবৈধ পণ্যের প্রবেশ রোধে এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
বিদেশফেরত যাত্রীদের জন্য টিপস ও নির্দেশনা
- যাত্রীদের উচিত ব্যাগেজে যে সব পণ্য আনবেন, সেগুলো সম্পর্কে পূর্বেই জানাশোনা রাখা।
- ব্যাগেজের মধ্যে নির্দিষ্ট পরিমাণ ও ধরনের পণ্যের সীমা ও শুল্কের বিষয়গুলো খেয়াল রাখা প্রয়োজন।
- সরকার নির্ধারিত শুল্ক-কর সময়মতো পরিশোধ করা উচিত, যাতে ফাঁকফোকর না থাকে।
- বিদেশ থেকে নতুন মোবাইল বা ইলেকট্রনিক্স পণ্য আনলে অবশ্যই দেশের বিদ্যমান আইন ও নিয়ন্ত্রণ মেনে চলা জরুরি।
বিদেশ থেকে দেশে ফিরে আসার সময় বিভিন্ন ধরনের গৃহস্থালি ও ব্যক্তিগত প্রয়োজনের পণ্য আনার সুযোগ বর্তমানে সরকারি নিয়ম অনুযায়ী বেশ স্পষ্ট। ১৯ ধরনের পণ্য বিনা শুল্কে এবং আরও ১১ ধরনের পণ্য শুল্ক-কর পরিশোধের মাধ্যমে আনা সম্ভব। এসব নিয়ম নিয়মিত আপডেট হয়, যার মাধ্যমে দেশের অর্থনীতি সুরক্ষিত হয় এবং যাত্রীদের সুবিধা নিশ্চিত করা হয়।
দেশের বাইরে থেকে দেশে আসা যাত্রীদের এই নিয়মাবলী সম্পর্কে সম্পূর্ণ সচেতন থাকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, যাতে দেশে প্রবেশকালে কোনো ধরনের জটিলতায় পড়তে না হয়। সরকারের এই ব্যাগেজ রুল পরিবর্তন দেশের বাণিজ্য এবং জনজীবনের সঙ্গে সমন্বয় রেখে গঠিত, যা দেশের উন্নয়নে সহায়ক ভূমিকা রাখবে।
সর্বশেষ তথ্যের জন্য ভিজিট করুন:
Singnalbd.com