বাংলাদেশিদের তেহরান থেকে পাকিস্তান হয়ে ফেরত পাঠানো হবে

ইরান ও ইসরায়েলের চলমান সংঘাতের প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের সরকার ইতোমধ্যেই তেহরান থেকে নিরাপদে দেশের নাগরিকদের ফিরিয়ে আনার জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। তেহরানে অবস্থানরত প্রায় ৪০০ বাংলাদেশির মধ্যে অন্তত ১০০ জন দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন এবং তাঁদের নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে।

তেহরান থেকে পাকিস্তান হয়ে দেশে ফেরার পরিকল্পনা

বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তেহরানে থাকা বাংলাদেশিরা প্রথমে স্থলপথে ইরান-পাকিস্তান সীমান্তে নিয়ে যাওয়া হতে পারে। এরপর পাকিস্তান থেকে বিমান পথে তাঁদের দেশে ফিরিয়ে আনা হবে। এই পরিকল্পনার আওতায় কয়েকদিনের মধ্যে ২০০ জনের বেশি বাংলাদেশি দেশে ফেরানো সম্ভব হবে বলে মনে করা হচ্ছে।

তেহরানে পরিস্থিতির সাম্প্রতিক অবস্থা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা

গতকাল বুধবার দুপুরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একাধিক কর্মকর্তা জানান, যারা দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন, তাদের মধ্যে প্রায় অর্ধেক নিরাপদ স্থানে সরে গেছেন। যদিও তাদের একসঙ্গে থাকার ব্যবস্থা করা এখন কঠিন, তবে দূতাবাস প্রয়োজনীয় আর্থিক ও অন্যান্য সহায়তা দিচ্ছে।

দূতাবাসের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বর্তমানে তেহরান থেকে বেশ কিছু বাংলাদেশি তাদের স্বতঃস্ফূর্ত উদ্যোগে দলবদ্ধ হয়ে নিরাপদ স্থানে সরে গেছেন। এ ছাড়া দূতাবাসের কূটনীতিক এবং কর্মচারীরাও নিরাপদ স্থানে অবস্থান করছেন।

ইরানে বাংলাদেশিদের অবস্থান ও নিরাপত্তা

বর্তমানে ইরানে প্রায় দুই হাজার বাংলাদেশি রয়েছেন। তাদের মধ্যে রাজধানী তেহরানে অবস্থানরত নাগরিকের সংখ্যা প্রায় ৪০০। সরকারের সকল প্রচেশার ফলে এখন পর্যন্ত কোনো বাংলাদেশি হতাহত হয়নি।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. নজরুল ইসলাম বলেছেন, “সব মিলিয়ে ৫০ জনের বেশি বাংলাদেশি তেহরান থেকে দূরে সরে গেছেন এবং নিরাপদ অবস্থানে রয়েছেন। এখনো তাদের নিরাপত্তা বজায় রাখা এবং প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দেওয়ার চেষ্টা চলছে।”

অর্থনৈতিক ও লজিস্টিক সমস্যা মোকাবিলা

ইরানের ওপর আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা এবং চলমান সংঘাতের কারণে সেখানে থেকে বাংলাদেশে টাকা পাঠানো জটিল হয়ে পড়েছে। তবে মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যেই প্রতিবেশী দেশ থেকে অর্থ লেনদেনের ব্যবস্থা করেছে। এছাড়া বন্ধুরাষ্ট্রগুলোর সহায়তায় বাংলাদেশিদের নিরাপদ সরানো ও দেশে ফেরানো নিয়ে বাড়তি তহবিলের বিষয়টি দ্রুত সমাধানের চেষ্টা চলছে।

দূতাবাসের ভূমিকা ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা

তেহরানে বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, পরিস্থিতি আরও খারাপ হলে দূতাবাসের কার্যক্রম স্থগিত বা অন্যত্র স্থানান্তরের বিষয়টি বিবেচনা করা হবে। তবে আপাতত দূতাবাস পুরোদমে কাজ করছে এবং প্রবাসীদের সহায়তায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

তারা আরও জানিয়েছেন, “ইরানের রাজধানী ধীরে ধীরে খালি হতে শুরু করেছে। যারা দেশে ফিরে যেতে চান, তাঁদের সমস্যার দ্রুত সমাধান করা হবে।”

সংক্ষিপ্তসার:

• ইরানে বাংলাদেশির সংখ্যা: প্রায় ২,০০০, যার মধ্যে তেহরানে ৪০০
• দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ: ১০০ জনের মতো
• নিরাপদে সরে যাওয়া: ৫০ জনের বেশি
• দেশে ফেরানো হবে: প্রায় ২০০ জন
• ফেরানোর পথ: তেহরান থেকে স্থলপথে ইরান-পাকিস্তান সীমান্ত, এরপর পাকিস্তান থেকে বিমানে
• অর্থ লেনদেন: প্রতিবেশী দেশ থেকে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে
• দূতাবাসের কাজ: চালু ও প্রবাসীদের সহায়তায় সম্পৃক্ত