বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করলে নির্বাচন কাদের নিয়ে হবে তা স্পষ্ট নয়। তিনি সতর্ক করেছেন, এক বা দুটি দলের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে সামগ্রিক নির্বাচনী প্রক্রিয়ার স্থিতিশীলতা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
ঘটনার বিস্তারিত
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর গুলশানে নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে সালাহউদ্দিন আহমেদ এ মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, “স্বৈরাচার ও ফ্যাসিবাদের দোসর হিসেবে যদি কোনো দল নিষিদ্ধ করতে চাওয়া হয়, তাহলে ২৮টি দলের কর্মকাণ্ডও নিষিদ্ধ হওয়া উচিত। তাহলে নির্বাচনটা কাদের নিয়ে হবে?”
তিনি আরও বলেন, যারা রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করতে চাচ্ছে, তারা যদি পরে নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করে, তাহলে দেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া কীভাবে চলবে তা প্রশ্নবিদ্ধ হবে।
বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে বিভিন্ন সময়ে কিছু দল বা সংগঠনকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তবে সাধারণত রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা রক্ষার স্বার্থে এ ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়। বিএনপির মতে, এক বা দু’টি দলের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার পেছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য থাকতে পারে।
সালাহউদ্দিন আহমেদ উল্লেখ করেন, “বিচারের প্রক্রিয়ার মধ্যে থাকা দলগুলোকে আদালতের মাধ্যমে বিচার করা উচিত। এটি রাজনৈতিক বৈষম্য বা অনিয়মের সুযোগ কমাবে। তবে, অতিরিক্ত সুবিধা লাভের জন্য কিছু পক্ষের উদ্দেশ্য থাকতে পারে।”
প্রভাব ও প্রতিক্রিয়া
সালাহউদ্দিনের মতে, দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা নষ্ট হলে জাতীয় ঐক্যও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। এটি আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক নিরাপত্তার জন্যও ঝুঁকি তৈরি করতে পারে। তিনি বলেন, “একটি বৈশ্বিক শক্তি এই সুযোগ নিতে পারে। তাই নির্বাচনকে স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ রাখতে সকল রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণ জরুরি।”
এছাড়া, তিনি বলেন, আদালতে মামলা চলমান রয়েছে এবং আরও মামলা হতে পারে। আদালতের মাধ্যমে নির্ধারিত হবে কোন দল নির্বাচন করতে পারবে এবং কোন দল পারবে না।
বিশেষজ্ঞ মতামত
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এক বা দুটি দলের নিষিদ্ধকরণ নির্বাচন প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা এবং জনগণের আস্থা কমাতে পারে। তারা বলেন, “নির্বাচনের স্বচ্ছতা বজায় রাখতে সব দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা উচিত। যদি কোনো দলকে অবাধে নিষিদ্ধ করা হয়, তবে তা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার জন্য হুমকি সৃষ্টি করতে পারে।”
বিশেষজ্ঞরা আরও বলেন, নির্বাচনের সময় রাজনৈতিক বৈচিত্র্য বজায় রাখাই দেশের জন্য স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তার ভিত্তি।
তুলনা ও পরিসংখ্যান
দেশে মোট রাজনৈতিক দল ৪০টির বেশি। এর মধ্যে নির্বাচনে সক্রিয় ২০–২৫টি দল। এক বা দুটি দলের নিষিদ্ধকরণ নির্বাচনের ফলাফলের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে। অতীত নির্বাচনে দেখা গেছে, দল নিষিদ্ধ হলে ভোটের অংশগ্রহণ কমে যায় এবং বিরোধী দলের কার্যক্রম সীমিত হয়।
সালাহউদ্দিনের বক্তব্য অনুযায়ী, নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ সকল দলের জন্য সমান হওয়া উচিত।
সালাহউদ্দিন আহমেদের বক্তব্যে স্পষ্ট হয়েছে, রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধকরণ যদি কার্যকরভাবে পরিচালিত না হয়, তবে দেশের নির্বাচনী প্রক্রিয়া, জাতীয় ঐক্য এবং স্থিতিশীলতা বিপন্ন হতে পারে। তিনি মনে করান, আদালতের মাধ্যমে বিচার প্রক্রিয়া পরিচালিত হওয়া উচিত এবং নির্বাচন স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ হওয়া জরুরি।
বিশ্লেষকরা মনে করেন, দেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার জন্য সমস্ত রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করাই স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে।
এম আর এম – ১৩৭৫,Signalbd.com



