শিল্পে ২৫০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ বাড়ানো হচ্ছে : জ্বালানি উপদেষ্টা

শিল্পকারখানায় চলমান গ্যাস সংকট মোকাবিলায় জ্বালানি বিভাগ বাড়তি ২৫০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই গ্যাস বিদ্যুৎ খাতের বরাদ্দ থেকে এবং অতিরিক্ত তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানির মাধ্যমে শিল্প খাতে সরবরাহ করা হবে। এই সিদ্ধান্তের ফলে শিল্প উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা হচ্ছে, তবে এলএনজি আমদানির কারণে প্রায় ১১ হাজার কোটি টাকার ঘাটতি সৃষ্টি হবে।
সিদ্ধান্তের বিস্তারিত
বুধবার (৭ মে) সচিবালয়ে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে এক সভায় জ্বালানি উপদেষ্টা মো. ফাওজুল কবির খান এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, “দেশীয় গ্যাস উৎপাদন হ্রাস পাওয়ায় ঘাটতি পূরণে এলএনজি আমদানি বাড়ানো হচ্ছে। বিদ্যুৎকেন্দ্রে গ্যাস সরবরাহ কমিয়ে ১৫০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস শিল্পে দেওয়া হবে, এবং বাকি গ্যাস এলএনজি আমদানির মাধ্যমে সরবরাহ করা হবে।”
উপদেষ্টা আরও জানান, জনস্বার্থ ও শিল্পখাতের কথা বিবেচনায় গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। তবে গ্রীষ্মে লোডশেডিং মোকাবিলায় প্রয়োজনে তেলভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন বাড়ানো হবে।
গ্যাস অনুসন্ধানে নতুন উদ্যোগ
সরকার নতুন গ্যাস অনুসন্ধানে গুরুত্ব দিচ্ছে। ফাওজুল কবির জানান, চলতি বছর ৫০টি এবং আগামী বছর ১০০টি কূপে অনুসন্ধানের পরিকল্পনা রয়েছে। ইতোমধ্যে তিনটি গ্যাসক্ষেত্র থেকে দৈনিক ২৭ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস পাওয়া গেছে, যা পাইপলাইনে যুক্ত হয়েছে। এছাড়া, স্থলভাগে গ্যাস অনুসন্ধানের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হচ্ছে, এবং গভীর সমুদ্রে অনুসন্ধানের জন্য পুনঃদরপত্রের প্রক্রিয়া চলছে।
শিল্পখাতে প্রভাব
হামীম গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ কে আজাদ বলেন, “শিল্পখাতে গ্যাস সমস্যার সমাধানে সরকারের এই উদ্যোগ আমাদের জন্য সন্তোষজনক। এই পরিকল্পনা অব্যাহত থাকলে আমরা সংকট কাটিয়ে উঠতে পারব।” শিল্পকারখানাগুলোতে গ্যাস সরবরাহ বৃদ্ধি উৎপাদন ক্ষমতা বাড়াতে এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা।
অর্থনৈতিক ও পরিবেশগত বিবেচনা
এলএনজি আমদানির ফলে সৃষ্ট ঘাটতি অর্থনীতির ওপর চাপ সৃষ্টি করতে পারে। তবে সরকার জনসাধারণের স্বার্থে দাম বাড়ানো থেকে বিরত থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এছাড়া, তেলভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন বৃদ্ধি পরিবেশের ওপর কী প্রভাব ফেলতে পারে, তা নিয়েও আলোচনা প্রয়োজন।
শিল্পকারখানায় চলমান গ্যাস সংকট মোকাবিলায় জ্বালানি বিভাগ বাড়তি ২৫০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই গ্যাস বিদ্যুৎ খাতের বরাদ্দ থেকে এবং অতিরিক্ত তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানির মাধ্যমে শিল্প খাতে সরবরাহ করা হবে। এই সিদ্ধান্তের ফলে শিল্প উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা হচ্ছে, তবে এলএনজি আমদানির কারণে প্রায় ১১ হাজার কোটি টাকার ঘাটতি সৃষ্টি হবে।