মাইক্রোসফটের পূর্বাভাস, সবাইকে ‘বস’ বানাবে এআই

মাইক্রোসফটের সাম্প্রতিক পূর্বাভাসে বলা হচ্ছে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ভবিষ্যতে প্রত্যেক কর্মীকে তাদের নিজস্ব এআই প্রতিনিধিদের ‘বস’ বানাবে। এই দৃষ্টিভঙ্গি কর্মক্ষেত্রে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনবে বলে মনে করা হচ্ছে। মাইক্রোসফটের নির্বাহী জ্যারেড স্পাতারো বলেছেন, “এআই প্রতিনিধিরা কর্মী বাহিনীতে যোগ দিচ্ছে, এবং এদের পরিচালনাকারী বসদের উত্থান আমরা দেখব।”
যাঁরা কর্মীদের বস বা প্রধান হওয়ার আকাঙ্ক্ষা রাখেন, তাঁদের জন্য সুখবর দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান মাইক্রোসফট। প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, ‘ভবিষ্যতে আমরা সবাই বস হতে পারি। আমাদের অধীনে থাকবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই কর্মী বাহিনী।’
মাইক্রোসফটের পক্ষ থেকে নতুন ধরনের ব্যবসার উত্থানের পূর্বাভাস দেওয়া হচ্ছে। একে বলা হচ্ছে ‘ফ্রন্টায়ার ফার্ম’। এর আওতায় একজন কর্মী স্বয়ংক্রিয় কৃত্রিম বুদ্ধিমান এজেন্ট বা প্রতিনিধিকে কাজ করার জন্য নির্দেশনা দেবেন। মাইক্রোসফটের মতে, প্রত্যেকে এআই প্রতিনিধির বস হয়ে যাবেন।
এ সপ্তাহে মাইক্রোসফটের নির্বাহী জ্যারেড স্পাতারো এক ব্লগ পোস্টে লিখেছেন, ‘এআই প্রতিনিধিদের কর্মী বাহিনীতে যোগদানের হার ক্রমবর্ধমান। এর সঙ্গে সঙ্গে আমরা এসব প্রতিনিধির বসের উত্থান দেখতে পাব। এই বস এমন একজন হবেন, যিনি এআই প্রতিনিধি তৈরি করবেন, তাঁদের প্রতিনিধিত্ব করার পাশাপাশি এগুলো পরিচালনা করবেন। তিনি বিভিন্ন ক্ষেত্রে এআইয়ের প্রভাব বাড়াবেন এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার যুগে নিজের ক্যারিয়ারের নিয়ন্ত্রণ নিতে পারবেন।’
মাইক্রোসফটের নির্বাহী আরও বলেন, ‘বোর্ডরুম থেকে শুরু করে সম্মুখসারির কর্মী পর্যন্ত প্রত্যেক কর্মীকে এআই প্রতিনিধি-চালিত স্টার্টআপের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার (সিইও) মতো চিন্তা করতে হবে।’
মাইক্রোসফট তাদের বার্ষিক ওয়ার্ক ট্রেন্ড ইনডেক্স প্রতিবেদনে বলেছে, এআই প্রতিনিধি চালিত কোম্পানিগুলো দ্রুত বড় হয়ে উঠবে, তৎপরতার সঙ্গে কাজের পাশাপাশি এবং দ্রুত প্রতিষ্ঠানের মূল্যায়ন বাড়ায়।
মাইক্রোসফট বলেছে, জ্ঞানী থেকে শুরু করে শিক্ষাবিদ এবং আইনজীবী পর্যন্ত বিভিন্ন পেশার লোকজন সাধারণত জ্ঞান খাটানোর কাজ করে থাকেন। এই জ্ঞান খাটানোর কাজে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রভাব সফটওয়্যার উন্নয়নের মতোই হবে। কোডিং সহায়তা থেকে শুরু করে প্রতিনিধিদের কাজ সম্পাদনের দিকে বিবর্তিত হবে।
সরবরাহ শৃঙ্খলে একজন কর্মীর ভূমিকার উদাহরণ ব্যবহার করে মাইক্রোসফট বলেছে, এই প্রতিনিধিরা শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সব ধাপের কাজ পরিচালনা করতে পারে। আর কর্মীরা এ সিস্টেমকে পরিচালনা করেন এবং সরবরাহকারীদের সঙ্গে সম্পর্ক ঠিক রাখেন।
ফ্রন্টায়ার ফার্ম: নতুন ব্যবসায়িক মডেল
মাইক্রোসফট ‘ফ্রন্টায়ার ফার্ম’ নামে একটি নতুন ধরনের ব্যবসার কথা বলছে, যেখানে এআই প্রতিনিধিরা স্বয়ংক্রিয়ভাবে কাজ সম্পাদন করবে। এই প্রতিনিধিরা কর্মীদের নির্দেশনায় কাজ করবে, যার ফলে প্রত্যেকে একটি স্টার্টআপের সিইওর মতো ভূমিকা পালন করবে।
কর্মক্ষেত্রে এআইয়ের প্রভাব
জ্ঞানভিত্তিক পেশা থেকে শুরু করে সরবরাহ শৃঙ্খল পর্যন্ত, এআই প্রতিনিধিরা কাজের দক্ষতা বাড়াবে। উদাহরণস্বরূপ, সরবরাহ শৃঙ্খলে এআই শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত কাজ পরিচালনা করতে পারে, আর কর্মীরা এই সিস্টেম তদারকি করবেন।
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট
বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাত এবং স্টার্টআপগুলো এআইয়ের এই সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে পারে। তবে, এর জন্য দক্ষতা উন্নয়ন এবং নীতিগত কাঠামো প্রয়োজন।