প্রযুক্তি

বাংলাদেশে পরীক্ষামূলকভাবে চালু হলো স্টারলিংকের ইন্টারনেট, গতি ১০০–১২০ এমবিপিএস

বিশ্বখ্যাত প্রযুক্তি উদ্যোক্তা ইলন মাস্কের মালিকানাধীন স্যাটেলাইট-ভিত্তিক ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান স্টারলিংক অবশেষে বাংলাদেশে পরীক্ষামূলক ইন্টারনেট সেবা চালু করেছে। রাজধানী ঢাকায় চলমান বাংলাদেশ বিনিয়োগ সম্মেলনের তৃতীয় দিনে, এই উচ্চগতির স্যাটেলাইট ইন্টারনেট প্রযুক্তি সাধারণ দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে।

স্টারলিংকের সেবা এখন ঢাকায়, তবে সীমিত পরিসরে

বুধবার (৯ এপ্রিল) ঢাকার ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে অনুষ্ঠিত বিনিয়োগ সম্মেলনে স্টারলিংকের ইন্টারনেট ব্যবহার করতে দেখা গেছে অনেক দর্শনার্থীকে। বাংলাদেশ স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেড (BSCL) সম্মেলনে স্টারলিংকের একটি বুথ স্থাপন করে সেখানে চারটি টার্মিনালের মাধ্যমে পাঁচটি ওয়াই–ফাই সংযোগ চালু করেছে। প্রতিটি রাউটারের মাধ্যমে একই সঙ্গে ৭০ থেকে ১০০ ব্যবহারকারী ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারছেন।

স্টারলিংকের ইন্টারনেট গতি সম্পর্কে বিএসসিএলের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করে জানান, “আজকের সেবায় ডাউনলোড স্পিড ছিল প্রায় ১০০ থেকে ১২০ এমবিপিএস। তবে একসঙ্গে ব্যবহারকারী বাড়লে কিছুটা গতি কমে যাচ্ছে।”

মালয়েশিয়ান গেটওয়ে দিয়ে সংযোগ

বিএসসিএলের সহকারী ব্যবস্থাপক তৌহিদুল ইসলাম জানিয়েছেন, বর্তমানে স্টারলিংকের গেটওয়ে হিসেবে মালয়েশিয়ার অবকাঠামো ব্যবহার করা হচ্ছে। তবে ভবিষ্যতে বাংলাদেশে নিজস্ব গেটওয়ে স্টেশন স্থাপন করা হবে। কারণ, বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) নীতিমালা অনুসারে স্যাটেলাইট ইন্টারনেট চালুর জন্য গেটওয়ে স্টেশন থাকা আবশ্যক।

বিনিয়োগ অনুমোদন মিলেছে, নিবন্ধনের প্রক্রিয়ায় স্টারলিংক

বাংলাদেশে স্টারলিংকের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু না হলেও প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে আগেই। গত ২৯ মার্চ বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (BIDA) স্টারলিংককে বিনিয়োগ নিবন্ধনের অনুমোদন দিয়েছে। এখন কোম্পানিটি ৯০ কার্যদিবসের মধ্যে পূর্ণ কার্যক্রম শুরুর প্রস্তুতি নিচ্ছে।

এছাড়া, বাণিজ্যিকভাবে ইন্টারনেট সেবা চালু করতে হলে স্টারলিংককে NGSO (Non-Geostationary Satellite Orbit) লাইসেন্স নিতে হবে। এই লাইসেন্সের জন্য চলতি সপ্তাহেই বিটিআরসিতে আনুষ্ঠানিক আবেদন জমা দিয়েছে কোম্পানিটি।

বাংলাদেশের জন্য সম্ভাবনার নতুন দুয়ার?

বিশ্বব্যাপী প্রত্যন্ত অঞ্চলে উচ্চগতির ইন্টারনেট পৌঁছে দিতে স্টারলিংকের খ্যাতি রয়েছে। বাংলাদেশের মতো ঘনবসতিপূর্ণ ও দুর্যোগপ্রবণ দেশের জন্য এই প্রযুক্তি হতে পারে একটি বড় সম্ভাবনার দুয়ার। বিশেষ করে দুর্গম ও দূরবর্তী অঞ্চলে যেখানে ফাইবার বা মোবাইল নেটওয়ার্ক পৌঁছায় না, সেখানে স্যাটেলাইট ইন্টারনেট হতে পারে কার্যকর সমাধান।

সম্মেলনে সরাসরি অভিজ্ঞতা নিচ্ছেন অংশগ্রহণকারীরা

সম্মেলনের প্রবেশপথে স্টারলিংকের বুথে দুপুরের পর থেকেই দর্শনার্থীদের ভিড় লক্ষ্য করা যায়। অনেকে মোবাইল ও ল্যাপটপে স্টারলিংকের সংযোগ ব্যবহার করে ভিডিও স্ট্রিমিং, ফাইল ডাউনলোড ও ব্রাউজিংয়ের মাধ্যমে প্রযুক্তির কার্যকারিতা যাচাই করছেন।

মন্তব্য করুন

Related Articles

Back to top button