মার্চে রপ্তানি আয় ৪২৪ কোটি ডলার, শঙ্কা মার্কিন পাল্টা শুল্কে

চলতি বছরের মার্চ মাসে বাংলাদেশ থেকে ৪২৪ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে, যা দেশীয় মুদ্রায় প্রায় ৫১ হাজার ৭২৮ কোটি টাকা। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের একই সময়ের তুলনায় এ আয় ১১ দশমিক ১৬ শতাংশ বেশি।
ঈদের আগেই রপ্তানির চাপ
রপ্তানিকারকদের মতে, সাধারণত ঈদের দীর্ঘ ছুটির আগেই বিপুল পরিমাণ পণ্য জাহাজীকরণের চাপ পড়ে। কারণ ছুটির সময় ও পরবর্তীতে ডেলিভারির শর্ত থাকায় পণ্য আগেভাগেই পাঠাতে হয়। এ কারণেই মার্চে রপ্তানির পরিমাণ বাড়তে দেখা গেছে।
তথ্য বিশ্লেষণ:
সময়কাল | রপ্তানি আয় | প্রবৃদ্ধি |
---|---|---|
মার্চ ২০২৪ | ৩৮১ কোটি ২২ লাখ ডলার | — |
মার্চ ২০২৫ | ৪২৩ কোটি ৭৭ লাখ ডলার | ১১.১৬% (এনবিআর অনুযায়ী) |
তবে, রপ্তানির এই প্রবৃদ্ধির মাঝেই যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্কনীতি উদ্বেগ বাড়াচ্ছে। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘোষণায় বাংলাদেশি পণ্যে ৩৭ শতাংশ শুল্ক আরোপ করায় বড় ধরনের ধাক্কার আশঙ্কা করছেন উদ্যোক্তারা।
যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানিতে বাড়তি শুল্ক: কে কত হারে ক্ষতিগ্রস্ত?
- বাংলাদেশ: ৩৭%
- ভারত: ২৬%
- পাকিস্তান: ২৯%
- চীন: ৫৪% (২০% + ৩৪%)
- ভিয়েতনাম: ৪৬%
২০২৪ সালে বাংলাদেশ ৮৩৬ কোটি ডলারের পণ্য যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি করেছে। বিপরীতে আমদানি ছিল মাত্র ২২১ কোটি ডলার, অর্থাৎ বাণিজ্য ঘাটতি ৬১৫ কোটি ডলার—যা যুক্তরাষ্ট্রের কাছে নেতিবাচক ইঙ্গিত হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।
পোশাক খাত সবচেয়ে ঝুঁকিতে
বাংলাদেশের রপ্তানির প্রায় ৮০ শতাংশই তৈরি পোশাক, যার অন্যতম প্রধান বাজার যুক্তরাষ্ট্র। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ১৮ শতাংশ পোশাক রপ্তানি হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে। পোশাক ছাড়াও জুতা, চামড়াজাত পণ্য, হোম টেক্সটাইল ও হিমায়িত খাদ্য রপ্তানিকারকরাও অনিশ্চয়তায় পড়েছেন।
রপ্তানিকারকদের অভিযোগ, বাড়তি শুল্কের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে মার্কিন ক্রেতারা মূল্যছাড় দাবি করছে। অনেকে অর্ডার স্থগিতও করেছে, যার প্রভাব আসন্ন সপ্তাহগুলোতে আরও স্পষ্ট হবে বলে আশঙ্কা করছেন তারা।
জুলাই-ফেব্রুয়ারি রপ্তানি চিত্র
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সর্বশেষ তথ্যে দেখা গেছে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম আট মাসে রপ্তানি আয় হয়েছে ৩২৯৪ কোটি ডলার, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ১০.৫৩ শতাংশ বেশি।