সিগারেটে কর বাড়ছে না আগামী বাজেটে

আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে সিগারেটের ওপর নতুন কোনো কর আরোপ করা হবে না। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান এ তথ্য জানিয়েছেন।
বুধবার (১৯ মার্চ) এনবিআর ভবনের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত প্রাক-বাজেট আলোচনাসভায় তিনি এ ঘোষণা দেন। এনবিআর প্রধান জানান, সরকার সিগারেট ও তামাকজাত পণ্যের ওপর কঠোর নজরদারি বজায় রাখলেও নতুন করে কর আরোপের পরিকল্পনা নেই।
সিগারেটের কর সংক্রান্ত তথ্য
বিগত কয়েক বছর ধরে সরকার তামাকজাত পণ্যের ওপর কর বাড়ানোর নীতি গ্রহণ করলেও, চলতি অর্থবছরের বাজেটে সেটি স্থগিত করা হচ্ছে। এ বিষয়ে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, “আমাদের লক্ষ্য রাজস্ব বৃদ্ধি করা হলেও আমরা শিল্পের ভারসাম্য রক্ষার দিকেও নজর রাখছি।”
বিড়ি শিল্পের ওপর কঠোর ব্যবস্থা
দেশে সিগারেটের তুলনায় বিড়ির ট্যাক্স কম উল্লেখ করে এনবিআর চেয়ারম্যান জানান, নকল বিড়ির উৎপাদন বন্ধ না করলে বিড়ি মালিক শিল্প সমিতির বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ বিষয়ে সরকার নজরদারি জোরদার করছে এবং কর ফাঁকি রোধে বিভিন্ন পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হচ্ছে।
এনবিআর চেয়ারম্যান আরো বলেন, “আমরা দেখেছি, নকল বিড়ির উৎপাদন ও বিক্রি বেড়েছে, যা সরকারের রাজস্ব আদায়ে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। আমরা কঠোর মনিটরিংয়ের ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।”
ভ্যাট প্রদান ও লটারির উদ্যোগ
এনবিআর চেয়ারম্যান আরও বলেন, “ভোক্তারা যদি ভ্যাট পরিশোধের পর রিসিট গ্রহণ না করেন, তাহলে সরকার প্রত্যাশিত রাজস্ব পাবে না। তাই আমরা জনগণকে ভ্যাট পরিশোধে উৎসাহিত করতে চাই।”
তিনি জানান, ভোক্তারা যদি রিসিট গ্রহণ করেন তবে তাদের মধ্যে লটারি করা হবে, যেখানে বিজয়ীরা ১ লাখ টাকা পর্যন্ত পুরস্কার পেতে পারেন। এই উদ্যোগের মাধ্যমে সরকার ভ্যাট সংগ্রহের হার বাড়াতে চায়।
অর্থনীতির সামগ্রিক চিত্র
বিগত বছরগুলোতে সরকার তামাক খাত থেকে উল্লেখযোগ্য রাজস্ব সংগ্রহ করেছে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে এই খাত থেকে ৩৭ হাজার কোটি টাকার বেশি রাজস্ব আদায় করা হয়েছিল। তবে জনস্বাস্থ্য বিবেচনায় তামাকজাত পণ্য নিয়ন্ত্রণে সরকার নানা পদক্ষেপ নিয়ে আসছে।
অর্থনীতিবিদদের মতে, কর হার অপরিবর্তিত রাখার ফলে তামাক খাতের বিকাশ কিছুটা স্বাভাবিক থাকবে, তবে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা কর বাড়ানোর পক্ষে মত দিয়েছেন। তাদের মতে, তামাকজাত পণ্যের সহজলভ্যতা হ্রাস করতে কর বাড়ানো জরুরি।
সামগ্রিক প্রভাব
১. রাজস্ব সংগ্রহ: কর না বাড়লেও সরকার ভ্যাট সংগ্রহের হার বৃদ্ধির মাধ্যমে রাজস্ব আয় বাড়াতে চায়। 2. তামাক খাতের স্থিতিশীলতা: কর অপরিবর্তিত থাকলে তামাক কোম্পানিগুলো তাদের বাজার ধরে রাখতে পারবে। 3. জনস্বাস্থ্যের প্রভাব: তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালী করা না হলে ধূমপান সংক্রান্ত স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়তে পারে।