দেশি তুলার ওপর কর প্রত্যাহার চান পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

দেশে তুলা উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন দেশি তুলার ওপর আরোপিত কর জরুরি ভিত্তিতে প্রত্যাহার করার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, সরকারকে দুই মাসের মধ্যে তুলাকে কৃষিপণ্য ঘোষণা করতে হবে এবং কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।
আজ সোমবার পল্টনে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) মিলনায়তনে ‘বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয়ে বাংলাদেশ তুলা চাষের গুরুত্ব ও সম্ভাবনা’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
কৃষির উর্বরতা ও তুলার সম্ভাবনা
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, “তামাক চাষের কারণে জমির উর্বরতা নষ্ট হচ্ছে। তামাক চাষের জমির কিছু অংশে তুলা চাষ করলে কৃষকও লাভবান হবেন, আবার দেশও অর্থনৈতিকভাবে উপকৃত হবে।” তিনি আরও বলেন, “অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বাধীন সরকার দেশের স্বার্থে ভালো সিদ্ধান্ত নিতে পিছপা হবে না।”
এলডিসি থেকে উত্তরণ
তৌহিদ হোসেন এলডিসি থেকে উত্তরণের সময়সীমা পেছানো উচিত হবে না বলেও জানান। তিনি বলেন, “উত্তরণের জন্য সরকার ও ব্যবসায়ীরা আগে তেমন কোনো প্রস্তুতি নেয়নি। তবে থেমে থাকা যাবে না। উত্তরণ-পরবর্তী তিন বছর সময় পাওয়া যাবে, তখনই ব্যবসায়ীরা প্রস্তুতি নেবেন।”
তুলা উৎপাদনের সম্ভাবনা
বাংলাদেশ কটন জিনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক গোলাম সাবের বলেন, “বাংলাদেশে তামাক কৃষিপণ্য, অথচ তুলাকে এখনো কৃষিপণ্য হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। এর ফলে তুলাচাষি ও জিনার্সরা কৃষিঋণ নেওয়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হন।”
তুলা উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী পরিচালক ফকরে আলম ইবনে তাবিব বলেন, “দেশে প্রায় ৪৫ হাজার কোটি টাকার তুলা আমদানি করতে হয়। বিপুল এই বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয়ে এক-চতুর্থাংশ দেশে উৎপাদন করা সম্ভব।” তিনি জানান, “নীতি সহযোগিতা দেওয়া হলে খাদ্যনিরাপত্তা ব্যাহত না করেই দেশে ২০ থেকে ২৫ লাখ টন তুলা উৎপাদন করা সম্ভব।”
প্রয়োজনীয় নীতি সহযোগিতা
ইআরএফ সভাপতি দৌলত আক্তার মালা বলেন, “তুলা এখনো কৃষিপণ্য নয় এবং দেশি তুলার ওপর বৈষম্যমূলক কর আছে, অনেকে তা জানত না। দেশের এই গুরুত্বপূর্ণ খাতটিকে বিবেচনায় নিয়ে প্রয়োজনীয় নীতি সহযোগিতা দেওয়া প্রয়োজন।”
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ইআরএফ সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম। এটি যৌথভাবে আয়োজন করে ইআরএফ, বাংলাদেশ কটন জিনার্স অ্যাসোসিয়েশন ও বাংলাদেশ সুদান কটন জিনিং ইন্ডাস্ট্রিজ।