বিশ্ব

হুতিদের ওপর বড় ধরনের হামলা শুরু যুক্তরাষ্ট্রের

যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী ইয়েমেনের হুতিদের নিশানা করে বড় ধরনের হামলা শুরু করেছে। দেশটির রাজধানী সানায় এই হামলায় ইতিমধ্যে অন্তত ১৩ জন সাধারণ মানুষ নিহত এবং ৯ জন আহত হয়েছেন। শনিবার শুরু হওয়া এই হামলা কয়েক দিন, এমনকি কয়েক সপ্তাহও চলতে পারে। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই হামলার নির্দেশ দিয়েছেন।

ট্রাম্পের হুঁশিয়ারি

ট্রাম্প হুতিদের লোহিত সাগরে জাহাজে হামলা বন্ধ করতে আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, অন্যথায় ‘নরক বৃষ্টি’ হবে। হুতিদের প্রধান পৃষ্ঠপোষক ইরানকেও তিনি হুমকি দিয়েছেন, তেহরানকে শিগগিরই হুতিদের সহায়তা বন্ধ করতে আহ্বান জানিয়েছেন। ট্রাম্প বলেন, “যদি ইরান যুক্তরাষ্ট্রকে হুমকি দেয়, আমেরিকা তোমাকে সম্পূর্ণ জবাবদিহির আওতায় আনবে। এটা কিন্তু তোমাদের জন্য ভালো হবে না।”

হামলার প্রেক্ষাপট

গত জানুয়ারি মাসে ট্রাম্প ক্ষমতা গ্রহণের পর মধ্যপ্রাচ্যে হুতিদের বিরুদ্ধে চলমান এই হামলাই এখন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় সামরিক অভিযান। এই হামলা শুরু হলো যখন ওয়াশিংটন নিষেধাজ্ঞা বাড়িয়ে তেহরানকে পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে আলোচনায় বসতে বাধ্য করার চেষ্টা করছে।

হুতিদের প্রতিক্রিয়া

হুতি রাজনৈতিক ব্যুরো যুক্তরাষ্ট্রের হামলাকে ‘যুদ্ধাপরাধ’ বলে মন্তব্য করেছে। তারা আশঙ্কা করছে, যুক্তরাষ্ট্র ইয়েমেনের উত্তর দিকের সাদা প্রদেশেও হামলা চালাতে পারে। হুতিরা জানিয়েছে, “আমাদের ইয়েমেনি সশস্ত্র বাহিনী উসকানিকে উসকানি দিয়ে জবাব দিতে সম্পূর্ণ প্রস্তুত।”

হামলার বিবরণ

স্থানীয় বাসিন্দাদের মতে, শনিবার সানায় হুতিদের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত একটি ভবনে যুক্তরাষ্ট্র হামলা চালিয়েছে। আব্দুল্লাহ ইয়াহিয়া নামের এক বাসিন্দা রয়টার্সকে বলেন, “ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। হামলার কারণে পুরো মহল্লা ভূমিকম্পের মতো কেঁপেছে। এতে আমাদের নারী ও শিশুরা ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়েছে।”

হুতিদের সক্ষমতা

এক দশকের বেশি সময় ধরে হুতিরা সশস্ত্র সংগ্রাম করছে এবং ইয়েমেনের অধিকাংশ অঞ্চল বর্তমানে তাদের নিয়ন্ত্রণে। ২০২৩ সালের নভেম্বর থেকে লোহিত সাগরে বাণিজ্যিক জাহাজ লক্ষ্য করে তারা ১০০ এর বেশি হামলা চালিয়েছে। তাদের দাবি, গাজায় ইসরায়েলি হামলার শিকার ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি জানিয়ে তারা এসব হামলা চালাচ্ছে।

পূর্ববর্তী প্রশাসনের পদক্ষেপ

ট্রাম্পের পূর্ববর্তী মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনও হুতিদের ওপর হামলা শুরু করেছিলেন। বাইডেন প্রশাসনের লক্ষ্য ছিল লোহিত সাগরের জাহাজে গোষ্ঠীটির হামলা করার সক্ষমতা কমানো। তবে তা প্রত্যাশা অনুযায়ী কার্যকর হয়নি। এখন ট্রাম্প আরও বেশি আক্রমণাত্মক হামলা চালাতে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মার্কিন কর্মকর্তা।

উপসংহার

যুক্তরাষ্ট্রের এই সামরিক অভিযান ইয়েমেনের পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলতে পারে। হুতিদের বিরুদ্ধে এই হামলা আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ওপরও প্রভাব ফেলবে, বিশেষ করে ইরানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের ক্ষেত্রে।

মন্তব্য করুন

Related Articles

Back to top button