
বাংলাদেশ ক্রিকেটের অন্যতম সফল অলরাউন্ডার মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন। ১০ মার্চ বিসিবির কেন্দ্রীয় চুক্তির নতুন তালিকা প্রকাশের পর থেকেই তার ভবিষ্যৎ নিয়ে গুঞ্জন চলছিল। অবশেষে সেই জল্পনার অবসান ঘটিয়ে তিনি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানালেন।
এর আগে টেস্ট ও আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি থেকে বিদায় নিয়েছিলেন মাহমুদউল্লাহ। এবার ওয়ানডে থেকেও সরে দাঁড়ালেন, ফলে বাংলাদেশের জার্সিতে আর দেখা যাবে না তাকে।
সামাজিক মাধ্যমে বিদায়বার্তা
১২ মার্চ রাতে নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক আবেগঘন বার্তায় মাহমুদউল্লাহ তার অবসরের ঘোষণা দেন। তিনি লেখেন, “সকল প্রশংসা মহান আল্লাহর। আমি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসরের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমার সকল সতীর্থ, কোচ এবং বিশেষ করে আমার ভক্তদের ধন্যবাদ দিতে চাই, যারা সবসময় আমাকে সমর্থন দিয়েছে।”
তিনি আরও লেখেন, “বিশেষ ধন্যবাদ দিতে চাই আমার মা-বাবাকে, আমার শ্বশুরকে এবং আমার ভাই এমদাদউল্লাহকে, যিনি একজন কোচ ও পরামর্শক হিসেবে শৈশব থেকেই আমার পাশে ছিলেন।”
এক সফল ক্যারিয়ারের সমাপ্তি
মাহমুদউল্লাহর ক্যারিয়ার ছিল সাফল্যে ভরপুর। ২০১৫ বিশ্বকাপে বাংলাদেশের প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে সেঞ্চুরি করেছিলেন তিনি। সেই আসরে টানা দুই ম্যাচে সেঞ্চুরি করে বিশ্ব ক্রিকেটের নজর কেড়েছিলেন। এছাড়া বহু গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে তার দায়িত্বশীল ব্যাটিং দলকে এনে দিয়েছে দুর্দান্ত জয়।
বাংলাদেশ ক্রিকেটে তার অবদান নিয়ে কোনো প্রশ্ন নেই। তবে ক্যারিয়ারের শেষটা তার জন্য সহজ ছিল না। ২০২৩ সালের পর থেকে জাতীয় দলে তার জায়গা নিয়ে আলোচনা চলছিল। অবশেষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে বিদায় নিলেন এই অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার।
আক্ষেপের সুর
অবসরের ঘোষণায় মাহমুদউল্লাহ খানিকটা আক্ষেপের কথাও জানিয়েছেন। তিনি লিখেছেন, “সবকিছুর শেষটা হয়তো সুন্দর হয় না, কিন্তু আপনাকে মেনে নিতে হয় এবং এগিয়ে যেতে হয়। শান্তি… আলহামদুলিল্লাহ। আমার দল এবং বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য শুভকামনা।”
তার এই কথার মধ্যে ফুটে উঠেছে কষ্টের অনুভূতি, যা একজন অভিজ্ঞ ক্রিকেটারের জন্য স্বাভাবিক। তিনি হয়তো আরও কিছুদিন খেলতে চেয়েছিলেন, কিন্তু বাস্তবতা ছিল ভিন্ন।
বাংলাদেশ ক্রিকেটে তার প্রভাব
মাহমুদউল্লাহ ছিলেন বাংলাদেশের মিডল-অর্ডারের নির্ভরযোগ্য ভরসা। চাপের মুহূর্তে দলকে টেনে তোলার অসাধারণ ক্ষমতা ছিল তার। অধিনায়ক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। বাংলাদেশ ক্রিকেটে তার অভিজ্ঞতা ও নেতৃত্বগুণ ছিল অমূল্য।
তার বিদায়ের সঙ্গে একটি যুগের সমাপ্তি ঘটল। তরুণ ক্রিকেটারদের জন্য তিনি হয়ে থাকবেন অনুপ্রেরণার উৎস। মাহমুদউল্লাহর বিদায়ের পর বাংলাদেশ ক্রিকেট নতুন নেতৃত্ব ও অভিজ্ঞতাকে কীভাবে কাজে লাগাবে, সেটাই এখন দেখার বিষয়।