আঞ্চলিক

মরদেহ রাতেই ঢাকায় আসছে, শায়িত হবেন বনানী কবরস্থানে

বিশিষ্ট শিল্পোদ্যোক্তা, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও অ্যাপেক্স ফুটওয়্যারের চেয়ারম্যান সৈয়দ মঞ্জুর এলাহীর মরদেহ আজ বুধবার রাতেই দেশে আনা হচ্ছে। সিঙ্গাপুর এয়ারলাইনসের একটি উড়োজাহাজে আজ রাত ১০টা ২০ মিনিটে তাঁর মরদেহ ঢাকা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের কথা রয়েছে। সিঙ্গাপুর থেকে এ তথ্য প্রথম আলোকে জানিয়েছেন মরহুমের ছেলে সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর।

মৃত্যুর খবর

সৈয়দ মঞ্জুর এলাহী ৮৩ বছর বয়সে আজ বাংলাদেশ সময় সকাল ৭টা ৩১ মিনিটে (সিঙ্গাপুর সময় ৯টা ৩১ মিনিট) সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তিনি বেশ কিছুদিন ধরে বার্ধক্যজনিত বিভিন্ন রোগে ভুগছিলেন এবং সিঙ্গাপুরে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। মৃত্যুর সময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন ছেলে সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর ও মেয়ে মুনিজে মঞ্জুর।

জানাজা ও দাফন

সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর প্রথম আলোকে বলেন, ‘আজ রাতে তাঁর বাবার মরদেহ দেশে আনার বিষয়টি চূড়ান্ত হয়েছে। আগামীকাল বাদ জোহর গুলশান আজাদ মসজিদে সৈয়দ মঞ্জুর এলাহীর নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর তাঁকে দাফন করা হবে বনানী কবরস্থানে আমাদের মায়ের (নিলুফার মঞ্জুর) কবরের পাশে।’

জীবনের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি

সৈয়দ মঞ্জুর এলাহী ১৯৪১ সালে কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগ থেকে ১৯৬৪ সালে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি সম্পন্ন করেন। বহুজাতিক কোম্পানির চাকরি ছেড়ে চামড়ার ব্যবসায় যুক্ত হয়ে তিনি চামড়া খাতের সফল ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন। তাঁর হাত ধরেই বাংলাদেশে উৎপাদিত চামড়ার জুতার বিদেশযাত্রা (রপ্তানি) শুরু হয়।

১৯৭২ সালে মঞ্জুর ইন্ডাস্ট্রিজ নামে কোম্পানি করে কমিশনের ভিত্তিতে চামড়া বিক্রির ব্যবসা শুরু করেন। চার বছর পর ১৯৭৬ সালে ১২ লাখ ২২ হাজার টাকায় রাষ্ট্রমালিকানাধীন ওরিয়েন্ট ট্যানারি কিনে নিয়ে প্রতিষ্ঠা করেন অ্যাপেক্স ট্যানারি। পরবর্তীতে অ্যাপেক্স ফুটওয়্যার দেশের শীর্ষ জুতা রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়।

রাজনৈতিক ও সামাজিক অবদান

সফল ব্যবসায়ীর পাশাপাশি তিনি ১৯৯৬ ও ২০০১ সালে দুই দফায় সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ছিলেন বেসরকারি খাতের মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা উদ্যোক্তাদের একজন এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়া, তিনি গবেষণাপ্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) এর ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য এবং ব্যবসায়ীদের শতবর্ষী পুরোনো সংগঠন মেট্রো চেম্বারের সভাপতি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।

সৈয়দ মঞ্জুর এলাহীর মৃত্যু দেশের ব্যবসায়ী সমাজে একটি শূন্যতা সৃষ্টি করেছে, এবং তাঁর অবদান চিরকাল স্মরণীয় হয়ে থাকবে।

মন্তব্য করুন

Related Articles

Back to top button