বিশ্ব

সিরিয়ায় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ, সরকারি বাহিনী বনাম আসাদের অনুসারীরা

সিরিয়ায় ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট বাশার আল–আসাদের অনুসারীদের সঙ্গে দেশটির সরকারি বাহিনীর সংঘর্ষে ৭০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও বেশ কয়েকজন। যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংস্থা সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস আজ শুক্রবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (পূর্বে টুইটার) দেওয়া এক পোস্টে এসব তথ্য জানিয়েছে।

সংঘর্ষের স্থান ও পরিস্থিতি

বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সিরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় লাতাকিয়া প্রদেশে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। রাশিয়া–নিয়ন্ত্রিত একটি বিমানঘাঁটির কাছে এলাকাটির অবস্থান। গত ডিসেম্বরে বাশার আল-আসাদের পতনের পর থেকে সিরিয়ার ইসলামপন্থী সরকারের সঙ্গে যুক্ত বাহিনীর ওপর এটি সবচেয়ে সহিংস হামলা। সংঘর্ষের পর আজ শুক্রবার সকাল পর্যন্ত সেখানে কারফিউ ঘোষণা করা হয়েছে।

নিহতদের পরিচয়

সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটসের এক্স পোস্টে বলা হয়েছে, “সিরীয় উপকূলে প্রতিরক্ষা ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সদস্য এবং ক্ষমতাচ্যুত সরকারের বাহিনীর সদস্যদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ ও অতর্কিত হামলার ঘটনায় ৭০ জনের বেশি নিহত হয়েছেন। আরও বেশ কয়েকজন আহত ও বন্দী হয়েছেন।”

সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা সানা জানিয়েছে, বিপুলসংখ্যক সেনা জাবলেহ শহরের দিকে যাচ্ছে। হোমস ও আলেপ্পো শহরেও সংঘর্ষের খবর পাওয়া গেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা গেছে, হোমসের আবাসিক এলাকার রাস্তায় প্রচণ্ড গুলির শব্দ শোনা যাচ্ছে, যদিও বিবিসি ভিডিওগুলোর সত্যতা যাচাই করতে পারেনি।

সরকারি বাহিনীর সতর্কবার্তা

সিরিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র কর্নেল হাসান আবদুল গনি লাতাকিয়ায় লড়াইরত আসাদের অনুগতদের প্রতি সতর্কবার্তা দিয়েছেন। তিনি বলেন, “হাজার হাজার মানুষ তাদের অস্ত্র সমর্পণ করে তাদের পরিবারের কাছে ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আবার কেউ কেউ পালিয়ে গিয়ে খুনি ও অপরাধীদের বাঁচানোর জন্য মৃত্যুর মুখোমুখি হওয়ার পথ বেছে নিচ্ছে। স্পষ্ট করে বলছি, অস্ত্র জমা দিন অথবা অনিবার্য পরিণতির মুখোমুখি হোন।”

নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ

সিরিয়ার অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারার জন্য এ অঞ্চল একটি বড় নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তিনি দক্ষিণেও প্রতিরোধের মুখোমুখি হচ্ছেন, যেখানে সাম্প্রতিক দিনগুলোতে দ্রুজ বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষ হয়েছে। আলাউইত সম্প্রদায়ের অধিকারের পক্ষে সোচ্চার থাকা কর্মীরা বলেছেন, আসাদের পতনের পর থেকে সম্প্রদায়টির মানুষ বিশেষ করে গ্রামীণ হোমস ও লাতাকিয়া এলাকায় সহিংসতা ও হামলার শিকার হচ্ছেন।

সিরিয়ায় চলমান সংঘর্ষ এবং রাজনৈতিক অস্থিরতা দেশটির জনগণের জন্য নতুন করে বিপদের সংকেত। আসাদের অনুসারীদের সঙ্গে সরকারি বাহিনীর সংঘর্ষের ফলে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উচিত এই সংকট সমাধানে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা।

মন্তব্য করুন

Related Articles

Back to top button