ঋণখেলাপি মামলায় আহসান গ্রুপের চেয়ারম্যান শহিদুল আহসানের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা

ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালত ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের করা দুটি ঋণখেলাপি মামলায় আহসান গ্রুপের চেয়ারম্যান শহিদুল আহসানের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন। শহিদুল আহসান মার্কেন্টাইল ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান। তাঁর দুটি প্রতিষ্ঠানের কাছে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের পাওনা ২৯৯ কোটি টাকা।
ঋণের ইতিহাস ও বর্তমান পরিস্থিতি
ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের মতিঝিল শাখা থেকে ২০১৮ সালে আহসান গ্রুপের প্রতিষ্ঠান এ জি অ্যাগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড ও মেসার্স ফ্রেন্ডস ট্রেডার্স বিপুল পরিমাণ ঋণ নেয়। কিন্তু নির্ধারিত সময়ে ঋণ পরিশোধ না করায় এগুলো খেলাপি হয়ে পড়ে। ২০২২ সালে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ঋণ পুনঃতফসিলের সুযোগ দেয়, কিন্তু এরপরও প্রতিষ্ঠান দুটি ঋণ পরিশোধ করেনি। বর্তমানে এ জি অ্যাগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের কাছে ১৬৬ কোটি টাকা এবং মেসার্স ফ্রেন্ডস ট্রেডার্সের কাছে ১৩৩ কোটি টাকা ঋণ বকেয়া রয়েছে।
ব্যাংকের উদ্যোগ ও আদালতের নির্দেশনা
ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদে পরিবর্তন আনা হয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশে সাইফুল আলম (এস আলম) ও তাঁর ঘনিষ্ঠদের সরিয়ে স্বতন্ত্র পরিচালনা পর্ষদ গঠন করা হয়। নতুন পর্ষদ দায়িত্ব নেওয়ার পর ঋণ আদায়ে তৎপরতা শুরু করে। ব্যাংক কর্তৃপক্ষ একাধিকবার গ্রাহকের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তারা কোনো সহযোগিতা করেনি। ফলে বাধ্য হয়ে ব্যাংক এ জি অ্যাগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ ও মেসার্স ফ্রেন্ডস ট্রেডার্সের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে।
গত ১৮ ফেব্রুয়ারি ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালত এই মামলায় শহিদুল আহসানের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।
ব্যাংক কর্মকর্তাদের বক্তব্য
ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের মতিঝিল শাখার ব্যবস্থাপক আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘ঋণ দুটি দীর্ঘদিন ধরে অনাদায়ী রয়েছে। প্রতিষ্ঠান দুটি ২০২২ সালে পুনঃতফসিলের আবেদন করেছিল, তবে এরপর আর কোনো পরিশোধ করেনি বা যোগাযোগও করেনি। ফলে ঋণ আদায়ের জন্য আমাদের আইনি পদক্ষেপ নিতে হয়েছে।’
আদালতের সিদ্ধান্তের প্রভাব ও ভবিষ্যৎ পদক্ষেপ
এই মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির ফলে ব্যাংকিং খাতে ঋণখেলাপিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার বার্তা দেওয়া হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণ কমানোর জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো আরও কঠোর নীতি গ্রহণ করতে পারে।