সিলেটে ইফতার মানেই আখনি ও পাতলা খিচুড়ি

সিলেটের ইফতার আয়োজনের অন্যতম প্রধান খাবার হলো আখনি ও পাতলা খিচুড়ি। মেহমানদারি কিংবা ঘরোয়া পরিবেশে ইফতারে এই দুটি পদ সিলেটিদের কাছে বিশেষ পছন্দের। তাই প্রায় প্রতিটি বাড়িতে ইফতারের আয়োজনের সময় ঐতিহ্যগতভাবে পাতলা খিচুড়ি ও আখনি তৈরি করা হয়।
আখনি ও পাতলা খিচুরির জনপ্রিয়তা
সুগন্ধি চিনিগুঁড়া কিংবা কালিজিরা চাল এবং মাংস দিয়ে রান্না করা হয় আখনি। সিলেটের কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদের সাধারণ সম্পাদক সেলিম আউয়াল বলেন, “ইফতারে নানা পদের পাশাপাশি আখনি ও পাতলা খিচুড়ি থাকবেই। এটি সিলেটে ইফতার আয়োজনে এক ধরনের রেওয়াজ।”
বাজারের পরিস্থিতি
গত সোমবার সিলেট নগরের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে, বন্দরবাজার, জিন্দাবাজার, আম্বরখানা, মদিনা মার্কেট, পাঠানটুলা, শিবগঞ্জ, মীরাবাজার, উপশহর, শাহি ঈদগাহ, টিলাগড়, টুকেরবাজার ও হুমায়ুন রশীদ চত্বরে দুপুর থেকেই ইফতারির পসরা সাজিয়ে বসেছেন দোকানিরা। প্রতিটি দোকানে আখনি ও খিচুড়ি সমানতালে বিক্রি হচ্ছে।
দাম ও বিক্রির পরিসংখ্যান
দোকানিরা জানিয়েছেন, প্রতি কেজি পাতলা খিচুড়ি ১২০ থেকে ১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ভুনা খিচুড়ি প্রতি বক্স ৭৫ টাকায় এবং বিফ আখনি ৩৮০ থেকে ৪২০ টাকা, চিকেন আখনি ৩২০ থেকে ৩৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অভিজাত রেস্তোরাঁগুলোতে দাম এই দামের চেয়ে ১০০ থেকে ১৫০ টাকা বেশি।
রেস্টুরেন্টের চাহিদা
সিলেট নগরের জিন্দাবাজার এলাকার পানসী রেস্টুরেন্টের কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আহমেদ বলেন, “প্রতিবছরই রোজদারদের পছন্দের শীর্ষে থাকে আখনি ও পাতলা খিচুড়ি। এখন তাঁদের রেস্টুরেন্টে গড়ে ৬০ কেজি চিকেন আখনি, ৮০ থেকে ১০০ কেজি বিফ আখনি এবং ৫০ থেকে ৬০ কেজি পাতলা খিচুড়ি তৈরি করা হয়।”
ভোক্তাদের অভিজ্ঞতা
বেলা দুইটার দিকে পানসী রেস্টুরেন্টে ইফতারি কিনতে আসা সাব্বির আহমদ বলেন, “ঘরে পাতলা খিচুড়ি রান্না হয়েছে, রেস্টুরেন্ট থেকে বিফ আখনি কিনেছি। আখনি কিংবা খিচুড়ি ছাড়া আমি ইফতারি চিন্তাই করতে পারি না।”
সিলেটে আখনি ও পাতলা খিচুড়ির জনপ্রিয়তা ইফতার আয়োজনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এই দুটি পদ ছাড়া সিলেটের ইফতার যেন অসম্পূর্ণ। স্থানীয় খাবারের এই ঐতিহ্য আগামী প্রজন্মের কাছে ধরে রাখার জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করা উচিত।