ময়মনসিংহে কম মূল্যে গরুর মাংস–ডিম বিক্রির উদ্যোগ, দাম আরও কমানোর দাবি

ময়মনসিংহে বাজারের তুলনায় কম মূল্যে গরুর মাংস ও ডিম বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে জেলা প্রশাসন। আজ মঙ্গলবার সকালে আনুষ্ঠানিকভাবে এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়। পবিত্র রমজান উপলক্ষে স্বল্প আয়ের মানুষের জন্য জেলা প্রশাসকের কার্যালয় চত্বরে ‘সুলভ মূল্যে’ গরুর মাংস ও ডিম বিক্রি শুরু হয়েছে।
কার্যক্রমের বিস্তারিত
এখানে সপ্তাহে ২ দিন ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ জন ১ কেজি করে গরুর মাংস ও ১ ডজন করে ডিম কিনতে পারবেন। তবে ক্রেতারা মাংস ও ডিমের দাম আরও কিছুটা কমানোর দাবি জানিয়েছেন। জেলা প্রশাসক মুফিদুল আলমের উদ্বোধনের মাধ্যমে কার্যক্রমটি শুরু হয়, যা বাস্তবায়ন করছে জেলা প্রশাসন ও জেলার প্রাণিসম্পদ বিভাগ। বিক্রয় ও বিপণনের কাজ করছে ‘বাংলাদেশ ডেইরি ফার্মাস অ্যাসোসিয়েশন’।
দাম ও বাজার পরিস্থিতি
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, প্রতি সপ্তাহের মঙ্গল ও বুধবার সেখানে ‘সুলভ মূল্যে’ মাংস ও ডিম বিক্রি করা হবে। আপাতত ৬৫০ টাকায় ১ কেজি গরুর মাংস এবং ১ ডজন ডিমের দাম ১২০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। স্থানীয় বাজারে গরুর মাংস ৭৫০ টাকা ও প্রতি ডজন ডিম খুচরা বাজারে ১৩৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
গত রমজানে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে গরুর মাংস ৫৫০ টাকা এবং প্রতি ডজন ডিম ১০০ টাকায় বিক্রি হয়েছিল। উদ্বোধনের সময় ক্রেতাদের উপস্থিতি কিছুটা কম ছিল, তবে আয়োজকেরা আশা করছেন, দিন দিন ক্রেতার উপস্থিতি বৃদ্ধি পাবে।
ক্রেতাদের প্রতিক্রিয়া
হোসনা বেগম নামের এক নারী ক্রেতা বলেন, “বাজার থেকে সেখানে মাংস ও ডিমের দাম কিছুটা কম। তবে গত বছর গরুর মাংস ৫৫০ টাকায় বিক্রি করেছিল প্রশাসন। এবার ১০০ টাকা বাড়ানো হয়েছে। আমরা চাই, দাম আরও কিছুটা কমানো হোক।”
আবদুর রশিদ নামের আরেক ক্রেতা বলেন, “বাজারের থেকে সেখানে পার্থক্য তেমন বেশি না। সেখানেও লাইনে দাঁড়িয়ে মাংস ও ডিম কিনতে হয়। সরকার যেহেতু ভর্তুকি দিচ্ছে, দাম আরেকটু কম হলে আমাদের মতো গরিব মানুষের জন্য উপকার হয়।”
জেলা প্রশাসকের বক্তব্য
উদ্বোধনের সময় ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসক মুফিদুল আলম বলেন, “রমজান উপলক্ষে সাধারণ মানুষের খাদ্যতালিকায় যেসব পণ্য থাকে, সেগুলো যেন কম মূল্যে পণ্য কিনতে পারে, তাই এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি দুধ বিতরণের ব্যবস্থাও করা হবে। সারা মাস এ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।”
প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার মন্তব্য
ক্রেতাদের দাম কমানোর দাবির প্রসঙ্গে জেলার প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মোহাম্মদ ওয়াহেদুল আলম বলেন, “আমাদের উদ্দেশ্য নিম্ন আয়ের মানুষকে বাজার থেকে কিছুটা কম মূল্যে গরুর মাংস ও ডিম দেওয়া। এখানে সরকারি কোনো ভর্তুকির ব্যবস্থা নেই। স্থানীয়ভাবে উদ্যোগ নিয়ে উৎপাদন মূল্যে ডিম ও মাংস বিক্রি করা হচ্ছে। একজন ক্রেতার যদি ১০০ টাকাও সেভ হয়, তাহলেও আরেকটা কাজ হয়।”