
লা লিগার চলতি মৌসুমে শীর্ষস্থান ধরে রাখার প্রতিযোগিতা যেন এক রোমাঞ্চকর নাটকীয়তার জন্ম দিচ্ছে। মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানে দ্বিতীয়বারের মতো আতলেতিকো মাদ্রিদকে পেছনে ফেলে আবারও লিগের শীর্ষস্থান দখল করল বার্সেলোনা।
গতকাল রিয়াল সোসিয়েদাদকে ৪-০ গোলে উড়িয়ে দিয়ে ২৪ ঘণ্টারও কম সময়ের ব্যবধানে পুনরায় শীর্ষে ফিরেছে কাতালান ক্লাবটি। ম্যাচের শুরুতে কিছুটা চাপে থাকলেও দ্রুতই ঘুরে দাঁড়িয়ে বড় ব্যবধানের জয় নিশ্চিত করেছে হান্সি ফ্লিকের দল।
প্রথমার্ধ: লাল কার্ড বদলে দিল ম্যাচের গতিপথ
ম্যাচের প্রথম দিকে রিয়াল সোসিয়েদাদ বেশ আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলতে থাকে। ১২তম মিনিটেই তারা গোলের সম্ভাবনা তৈরি করেছিল। সোসিয়েদাদের সের্হিও গোমেজ বল জালেও পাঠিয়েছিলেন, কিন্তু অফসাইডের কারণে বাতিল হয়ে যায় সে গোল। তবে ১৭ মিনিটের মাথায় ম্যাচের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ঘটে।
দানি ওলমো যখন দ্রুতগতিতে সোসিয়েদাদের ডিফেন্স ভেদ করে এগিয়ে যাচ্ছিলেন, তখন পেছন থেকে তাকে ফাউল করেন আরিৎজ এলুসতোন্দো। রেফারি কোনো দ্বিধা না করেই সরাসরি লাল কার্ড দেখান তাকে। এতে ১০ জনের দলে পরিণত হয় রিয়াল সোসিয়েদাদ, যা পুরো ম্যাচের চিত্রই বদলে দেয়।
বার্সার গোল উৎসবের শুরু
১০ জনের দলে পরিণত হওয়ার পর রিয়াল সোসিয়েদাদের রক্ষণভাগ দুর্বল হয়ে পড়ে। এই সুযোগের পুরো সদ্ব্যবহার করে বার্সেলোনা।
২৫ মিনিটে জেরার্দ মার্তিন দারুণ এক গোল করে কাতালান দলকে এগিয়ে দেন। ২৯ মিনিটে মার্ক কাসাদো গোল করে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন। প্রথমার্ধে আর কোনো গোল না হলেও বার্সেলোনা পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখে ম্যাচের।
দ্বিতীয়ার্ধে আরও দুই গোল, লেভানডফস্কির ফেরার বার্তা
দ্বিতীয়ার্ধেও বার্সেলোনার আধিপত্য ছিল অটুট। ৫৬ মিনিটে কর্নার থেকে দারুণ এক হেডে গোল করেন রোনাল্ড আরাউহো, যা দলকে ৩-০ ব্যবধানে এগিয়ে দেয়।
এরপর ৬০ মিনিটের মাথায় রবার্ট লেভানডফস্কি গোল করেন। চলতি মৌসুমে কিছুটা ম্লান থাকলেও এই গোলটি যেন তার ফর্মে ফেরার ইঙ্গিত দেয়।
পয়েন্ট তালিকায় বার্সার অবস্থান
এই জয়ের ফলে ২৬ ম্যাচে ১৮তম জয় পেল বার্সেলোনা। বর্তমানে তাদের পয়েন্ট ৫৭, যা আতলেতিকো মাদ্রিদের (৫৬) চেয়ে এক পয়েন্ট বেশি। রিয়াল মাদ্রিদ ৫৪ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে।
বিশ্লেষণ: বার্সার শক্তিমত্তা ও ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা
বার্সেলোনা এই মৌসুমে দারুণ ফর্মে আছে। নতুন কোচ হান্সি ফ্লিকের অধীনে তারা রক্ষণভাগে উন্নতি এনেছে এবং আক্রমণভাগেও ধারাবাহিকতা ফিরিয়েছে। বিশেষ করে মাঝমাঠে গাভি ও পেদ্রি চমৎকার সমন্বয় গড়ে তুলেছেন, যা দলকে ভারসাম্যপূর্ণ করে তুলছে।
তবে শিরোপার লড়াইয়ে তারা কতদূর যেতে পারবে, তা নির্ভর করবে পরবর্তী কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচের ওপর।
উপসংহার
বার্সেলোনার জন্য এটি কেবল একটি জয় নয়, বরং শিরোপার দৌড়ে নিজেদের শক্ত অবস্থান জানান দেওয়ার বার্তা। আতলেতিকো ও রিয়াল মাদ্রিদও প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আছে, তাই সামনের ম্যাচগুলো আরও উত্তেজনাপূর্ণ হবে।