মুরগি-ডিমের বাজারে অসাধু চক্র, দাবি পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের

বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন দাবি করেছে, মুরগি, ফিড, ডিম ও মুরগির বাচ্চাকে ঘিরে বাজারে বিশাল অসাধু চক্র গড়ে উঠেছে। শনিবার সকালে এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটি জানায়, এই চক্র গত ছয় মাসে ৯৬০ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। তারা বলছে, পোল্ট্রি খাতে সরকারের নজরদারি না থাকায় এই অরাজকতা তৈরি হয়েছে।
মুরগির দাম বৃদ্ধি
রোজার আগেই চড়া আমিষের অন্যতম অনুষঙ্গ মুরগির দাম বেড়ে গেছে। রাজধানীতে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২৫০ টাকায়, এবং সোনালি মুরগি ৩২০ থেকে ৩৫০ টাকা। বিক্রেতারা বলছেন, মুরগি কেনায় খরচ বেশি হওয়ায় বিক্রির দামও বাড়তি।
একজন বিক্রেতা বলেন, “ব্রয়লারের দাম গত সপ্তাহের চেয়ে এই সপ্তাহে অনেক বেশি। গত সপ্তাহে ১৮০ টাকা বিক্রি করেছি, এ সপ্তাহে ২০০ টাকা বিক্রি করছি। সোনালি মুরগির দামও বেড়েছে।”
কৃত্রিম সংকট
মুরগির বাচ্চার ক্ষেত্রেও কৃত্রিম সংকট তৈরি করে দাম বাড়াচ্ছে অসাধু ব্যবসায়ীরা। গত বছরের ১৫ সেপ্টেম্বর সরকার মুরগির বাচ্চার দাম নির্ধারণ করে দেয় ৩০-৩৫ টাকা। এরপর অসাধু ব্যবসায়ীরা মুরগির বাচ্চার উৎপাদন কমিয়ে দেয়। পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের তথ্যমতে, কোম্পানিগুলো মুরগির বাচ্চা ৭০ থেকে ৮৫ টাকা এবং কখনো কখনো ১০০ টাকার ওপরে বিক্রি করছে।
পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের দাবি
বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সুমন হাওলাদার বলেন, “গত সেপ্টেম্বর থেকে এখন পর্যন্ত একটি বাচ্চায় তারা ৪০ টাকা করে বেশি নিচ্ছে। আমাদের ৮ কোটি বাচ্চা উৎপাদন হয় প্রতি মাসে। সেখানে ১৬০ কোটি টাকা দাঁড়ায়। গত ৬ মাসে ৯৬০ কোটি টাকা, আমরা এটা জাস্ট হিসাব দিয়েছি। সরকার এটাকে তদন্ত করুক।”
সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা না নেওয়া হলে ঈদের পর ডিম ও মুরগির দাম আবারো বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা খাত সংশ্লিষ্টদের। সুমন হাওলাদার বলেন, “তারা ঠিকই লাভ করছে। আমাদের প্রান্তিক খামারির সংখ্যা কমে যাচ্ছে। মুরগি বিক্রি করে দিচ্ছে। ঈদের পরে ডিমের বাজার আবার অস্থির হয়ে যাবে।”
সংবাদ সম্মেলনে সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ, বাজার মনিটরিং, ন্যায্য মূল্যে ফিড ও বাচ্চা সরবরাহ নিশ্চিত করাসহ ৬ দফা দাবি জানায় পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন।