বোতলের সয়াবিনের সংকট, চড়া দামে বিক্রি খোলা তেল

পবিত্র রমজান উপলক্ষে নিত্যপণ্যের কেনাকাটা শুরু করে দিয়েছেন ক্রেতারা। কিন্তু বাজারে পাওয়া যাচ্ছে না বোতলজাত সয়াবিন তেল। ঢাকা ও চট্টগ্রামের কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বিশেষ করে পাঁচ লিটারের বোতল পাওয়া যাচ্ছে না। কয়েক সপ্তাহ ধরেই এই সংকট চলছে। এই সুযোগে খোলা সয়াবিন তেলের দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
দাম বৃদ্ধি
সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) হিসাবে, এক মাসে খোলা সয়াবিন তেলের দাম বেড়েছে লিটারে ১৫ থেকে ১৭ টাকা। বর্তমানে খোলা সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৮৫-১৯০ টাকা লিটার দরে, যা সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে লিটারে ২৮ থেকে ৩৩ টাকা বেশি। বোতলের সয়াবিন তেলের নির্ধারিত দাম লিটারপ্রতি ১৭৫ টাকা, এবং পাঁচ লিটারের বোতলের দাম ৮৫২ টাকা।
সংকটের কারণ
বাজারে যতটুকু বোতলজাত সয়াবিন তেল পাওয়া যাচ্ছে, তার মোড়কে এই দরই লেখা হচ্ছে। তবে খুচরা ব্যবসায়ীরা অনেক ক্ষেত্রে বেশি নিচ্ছেন। ভোজ্যতেলের আমদানি বেড়েছে এবং বিশ্ববাজারও স্থিতিশীল, কিন্তু ক্রেতাদের জন্য পরিস্থিতি সুবিধাজনক হচ্ছে না।
রাজধানীর শেওড়াপাড়ার বাসিন্দা আরিফুল ইসলাম বলেন, “মুদিদোকানে গিয়ে সয়াবিন তেলের পাঁচ লিটারের বোতল না পেয়ে সুপারশপে গিয়েছি। সেখানে গিয়েও দুই লিটার অথবা পাঁচ লিটারের বোতল পাননি।”
আমদানি ও চাহিদা
বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের (বিটিটিসি) হিসাবে, দেশে বছরে ২২ লাখ টন ভোজ্যতেলের চাহিদা রয়েছে। শর্ষে ও কুঁড়ার তেল মিলিয়ে দেশে উৎপাদিত হয় প্রায় আড়াই লাখ টন। বাকিটা আমদানি করতে হয়। জানুয়ারি মাসে সর্বোচ্চ পরিমাণ সয়াবিন তেল আমদানি হয়, যা গত ছয় বছরে মাসিক ভিত্তিতে সর্বোচ্চ।
ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম তিন সপ্তাহে আমদানি ছিল কম, কিন্তু ফেব্রুয়ারি মাসের শেষ সপ্তাহে এসব তেল বন্দরে পৌঁছাতে শুরু করেছে।
বাজারের প্রতিক্রিয়া
বাজারের দোকানি মুহাম্মদ ফরিদুল হক বলেন, “আমরা ২০ কার্টন সয়াবিনের অর্ডার করে পাচ্ছি ২ কার্টন। সয়াবিনের সরবরাহ যদি স্বাভাবিক করা যায়, বাজারও স্বাভাবিক থাকবে।”
সরকার গত নভেম্বর মূল্য সংযোজন কর (মূসক–ভ্যাট) কমিয়ে দিয়েছিল, কিন্তু দেখা যাচ্ছে, বাড়তি আমদানি ও কর কমানোর পরও রোজার আগে দাম কমেনি, বরং খোলা সয়াবিন তেলের দাম বেড়ে গেছে।