ডিমের মূল্যবৃদ্ধির ষড়যন্ত্রে পিপলস পোলট্রির জরিমানা

ডিমের বাজার নিয়ন্ত্রণ ও মূল্য অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধির অভিযোগে পিপলস পোলট্রি অ্যান্ড হ্যাচারি লিমিটেডকে ৭২ লাখ ২ হাজার ৯৭৩ টাকা আর্থিক জরিমানা করেছে বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন। কমিশনের তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে যে, প্রতিষ্ঠানটি কয়েকটি সমধর্মী কোম্পানি ও ডিম ব্যবসায়ীদের সঙ্গে যোগসাজশ করে ভোক্তাবান্ধব প্রতিযোগিতা বাধাগ্রস্ত করেছে।
তদন্তের পটভূমি
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, ২০২২ সালে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিবেদন এবং সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবরের ভিত্তিতে প্রতিযোগিতা কমিশন অনুসন্ধান শুরু করে। তদন্তে দেখা যায়, পিপলস পোলট্রি কাজী ফার্মস গ্রুপ, সিপি বাংলাদেশ, ডায়মন্ড এগ লিমিটেডসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠান ও আড়তদার সমবায় সমিতির সঙ্গে যোগসাজশ করে ডিমের সরবরাহ সীমিত ও কৃত্রিম সংকট তৈরি করেছে।
বাজারে ডিমের মূল্য
তদন্তের সময় বাজারে ডিমের পাইকারি মূল্য প্রতি পিস ১১ দশমিক ৬০ থেকে ১১ দশমিক ৮০ টাকা থাকলেও পিপলস পোলট্রি ব্যবসায়ীদের বাধ্য করে ১২ টাকায় ডিম বিক্রি করতে। প্রতিষ্ঠানটি ডিমের গাড়ি পাঠানোর পর ব্যবসায়ীদের কাছে বার্তা দিয়ে বাজারদরের চেয়ে ৩০-৪০ পয়সা বেশি দাম নির্ধারণ করত।
ব্যবসায়ীদের ওপর চাপ
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, পিপলস পোলট্রি ব্যবসায়ীদের বাধ্য করত বাণিজ্যিক ডিমের সঙ্গে হ্যাচিং ডিম মিশিয়ে বিক্রি করতে। যদি ব্যবসায়ীরা এটি করতে না চাইতেন, তবে তাঁদের গাড়ি আটকে রাখা হতো বা ডিম ফেরত নেওয়া হলে ব্যবসায়ীদের ক্ষতির ঝুঁকি তৈরি হতো।
আইনগত ব্যবস্থা
প্রতিযোগিতা আইন, ২০১২-এর ধারা ১৫ লঙ্ঘনের অভিযোগে পিপলস পোলট্রির বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। গত তিন বছরের গড় টার্নওভারের ভিত্তিতে ৭২ লাখের বেশি টাকা জরিমানা করা হয়। জরিমানার টাকা ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে পরিশোধ না করলে প্রতিদিন এক লাখ টাকা অতিরিক্ত জরিমানা গুনতে হবে। তবে প্রতিষ্ঠানটির জন্য রিভিউ বা আপিলের সুযোগ রয়েছে।
সামাজিক প্রতিক্রিয়া
এই জরিমানা ডিমের বাজারে স্বচ্ছতা ও প্রতিযোগিতা নিশ্চিত করতে সহায়তা করবে বলে আশা করা হচ্ছে। ভোক্তাদের স্বার্থ রক্ষায় এ ধরনের পদক্ষেপ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।