বাংলাদেশ

মুনতাসিরের কারাগার ভাঙার রহস্য! আবরার হত্যা মামলার আসামি পলাতক

বুয়েটের শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে হত্যার দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মুনতাসির আল জেমি গত ৬ আগস্ট গাজীপুরের হাইসিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের দেয়াল ভেঙে পালিয়ে গেছেন। ওই দিন তিনি সহ মোট ২০২ জন বন্দী পালিয়েছেন। এ ঘটনায় ১৫ আগস্ট গাজীপুরের কোনাবাড়ী থানায় মামলা করা হয়।

আজ মঙ্গলবার কারা কর্তৃপক্ষ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানিয়েছে। কারা অধিদপ্তরের সহকারী কারা মহাপরিদর্শক (উন্নয়ন) জান্নাত-উল-ফরহাদের স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “জনমনে বিভ্রান্তি নিরসনের লক্ষ্যে জানাচ্ছি যে, বুয়েটের ছাত্র আবরার হত্যা মামলার মৃত্যুদণ্ডাদেশ পাওয়া বন্দী মুনতাসির আল জেমি (কয়েদি নং ৫১৭৭/এ) গত ৬ আগস্ট গাজীপুরের হাইসিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ২০২ জন বন্দীর সঙ্গে একত্রে (৮৭ জন মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত) কারাগারের দেয়াল ভেঙে পলায়ন করেন।”

গ্রেপ্তারের প্রচেষ্টা

বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়েছে, “বিষয়টি নিয়ে গত বছরের ১৫ আগস্ট গাজীপুরের কোনাবাড়ী থানায় মামলা করা হয়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ সব কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। সব কর্তৃপক্ষের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ইতিমধ্যে ৩৫ জন মৃত্যুদণ্ডাদেশ পাওয়া বন্দীসহ ৫১ বন্দীকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আবরার ফাহাদ হত্যা মামলার মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত বন্দীকে গ্রেপ্তারের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।”

বিক্ষোভের ঘটনা

মুনতাসির আল জেমির পালানোর খবর সামনে আসার পর গতকাল সোমবার রাতে প্রতিবাদ জানিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন বুয়েটের কয়েকশ শিক্ষার্থী। রাত ১১টার দিকে বুয়েট শহীদ মিনার থেকে শুরু হওয়া বিক্ষোভ মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল প্রদক্ষিণ করে। পরে দিবাগত রাত ১২টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে এসে সংবাদ সম্মেলন করেন বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীরা।

আবরার ফাহাদের হত্যাকাণ্ড

২০১৯ সালের ৭ অক্টোবর রাতে বুয়েটের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে ছাত্রলীগের একদল নেতা-কর্মী পিটিয়ে হত্যা করেন। হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার দায়ে ২০২১ সালের ৮ ডিসেম্বর বুয়েটের ২০ শিক্ষার্থীকে মৃত্যুদণ্ড ও পাঁচ শিক্ষার্থীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন আদালত। মুনতাসির আল জেমি মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ১৭ ব্যাচের শিক্ষার্থী।

আবরার ফাইয়াজের পোস্ট

বুয়েটের শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ মিছিল ও সংবাদ সম্মেলনের আগে ফেসবুকে একটি পোস্ট দিয়েছিলেন আবরার ফাহাদের ছোট ভাই আবরার ফাইয়াজ। তিনি মুনতাসির আল জেমির কারাগার থেকে পালানোর বিষয়টি সামনে আনেন।

এ ঘটনার পর বুয়েটের শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ ও উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। তারা দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।

মন্তব্য করুন

Related Articles

Back to top button