ওসমান বে সম্পর্কে অজানা তথ্য ও তার জনপ্রিয়তার কারণ কি ?

ওসমান বে, যিনি ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র হিসেবে পরিচিত, তার কাহিনী আজও মানুষের মনে জীবন্ত। রোমান অঞ্চলে ওসমানের অতর্কিত আক্রমণে প্রিন্সেস মারিয়া ও মঙ্গল গভর্নর চারবান্দার বিয়ে ভেঙে যায়। এই পরিস্থিতিতে ইলখানাতের মঙ্গল সম্রাট ওলিজায়তু কূটচাল করতে থাকেন। রোমান সম্রাট আন্দ্রেনিকোস নিজের কন্যা প্রিন্সেস ডেসপিনার সঙ্গে মঙ্গল সম্রাটের বিবাহের প্রস্তাব দেন, যা ওলিজায়তু গ্রহণ করেন।
ওসমানের প্রতিরোধ
১৩০৮ সালে, ওলিজায়তু প্রায় ৩০ হাজার সৈন্যের একটি বহর ওসমানের অধীন অঞ্চলে প্রেরণ করেন। তবে ওসমানের কাছে তখন মাত্র ১০ হাজার সৈন্য ছিল। মঙ্গল বাহিনী হামলা চালালে, ওসমান তাদের বিরুদ্ধে শক্ত প্রতিরোধ গড়ে তোলেন এবং কয়েকটি খণ্ড যুদ্ধে মঙ্গল বাহিনীকে দুর্বল করে দেন। এই বিজয়ের ফলে ওসমানের খ্যাতি আনাতোলিয়ায় আবারও ছড়িয়ে পড়ে এবং তিনি ‘মঙ্গলদের যম’ হিসেবে পরিচিত হন।
সেলজুক রুমের পতন
১৩০৮ সালের মাঝামাঝি সেলজুক রুমের সুলতান মাসুদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করে মঙ্গলরা। সুলতান মাসুদের মৃত্যুর পর আনাতোলিয়ায় তুর্কিদের মধ্যে নেতৃত্বের প্রশ্ন উঠতে থাকে। এই পরিস্থিতিতে ওসমান বেরের দিকে নজর পড়ে এবং সেলজুক রুমের কিছু কর্মকর্তা ও আলেমরা তাকে আনাতোলিয়ার সুলতান হওয়ার প্রস্তাব দেন।
স্বাধীন রাষ্ট্রের ঘোষণা
ওসমান সাদরে এই প্রস্তাব গ্রহণ করেন এবং আনাতোলিয়ার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের মাধ্যমে নিজের সুলতান হওয়ার কথা ছড়িয়ে দেন। এর ফলে তিনি নিজের রাষ্ট্রকে আনাতোলিয়ার প্রথম স্বাধীন ‘ওসমানীয় রাষ্ট্র’ হিসেবে ঘোষণা করেন। তিনি নিজের নামে খুতবা পড়াতে থাকেন এবং নিজস্ব মুদ্রা প্রচলন করেন, যা ওসমানীয় সাম্রাজ্যের ইতিহাসের প্রথম মুদ্রা ছিল।
সাম্রাজ্যের প্রসার
ওসমানের সুলতান ঘোষণার পর প্রায় এক হাজার সৈন্য ও কয়েক হাজার জনগণ তার অধীনে চলে আসেন। তিনি সেনাবাহিনীর আকার বৃদ্ধির দিকে মনোনিবেশ করেন এবং বিভিন্ন দুর্গ, শহর ও জমির গভর্নরের দায়িত্ব ভাগ করে দেন।
ওসমান বে’র নেতৃত্বে আনাতোলিয়ায় প্রথম স্বাধীন রাষ্ট্রের আত্মপ্রকাশ ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। তার সাহসিকতা ও কৌশল আজও মানুষকে অনুপ্রাণিত করে। ওসমানের এই কাহিনী আমাদের শেখায় যে, সংকটের মুহূর্তে দৃঢ়তা ও কৌশলগত চিন্তা কতটা গুরুত্বপূর্ণ।