ভারতের সঙ্গে জ্বালানি চুক্তির ঘোষণা দিলেন ট্রাম্প

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি গতকাল হোয়াইট হাউসে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে ভারতের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ জ্বালানি চুক্তির ঘোষণা দিয়েছেন। এই চুক্তির মাধ্যমে ভারত যুক্তরাষ্ট্র থেকে আরও তেল ও গ্যাস আমদানি করবে, যা দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে সহায়তা করবে।
মোদি-ট্রাম্প বৈঠক
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দুই দিনের সফরে যুক্তরাষ্ট্রে এসেছেন। সফরের সময় তিনি ওয়াশিংটনে ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এই বৈঠকে ট্রাম্প বলেন, “ভারত আমাদের কাছ থেকে অনেক তেল ও গ্যাস কিনতে যাচ্ছে। তাদের এই প্রয়োজন রয়েছে এবং আমাদের কাছে তা আছে।”
মোদি বলেন, “ভারতের জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য আমরা তেল ও গ্যাস বাণিজ্যের ওপর গুরুত্ব দেব।” তিনি আরও জানান, পারমাণবিক জ্বালানি খাতে বিনিয়োগ বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
বাণিজ্যিক সম্পর্কের উন্নয়ন
মোদি যখন যুক্তরাষ্ট্র সফর করছেন, তখন ট্রাম্প তাঁর দেশের বাণিজ্যিক অংশীদারদের বিরুদ্ধে নতুন শুল্ক আরোপের আদেশ দিয়েছেন। যদিও দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য নিয়ে কিছু বিরোধ রয়েছে, তবে ট্রাম্প ও মোদির মধ্যে একটি ব্যক্তিগত সম্পর্ক রয়েছে, যা দীর্ঘদিনের।
ট্রাম্প বলেন, “আমাদের মধ্যে একটি চমৎকার সম্পর্ক বজায় আছে।” তিনি আরও জানান, ভারতের কাছে সামরিক হার্ডওয়্যার বিক্রি কয়েক মিলিয়ন ডলার বাড়িয়ে দেবে যুক্তরাষ্ট্র। এছাড়া, নয়াদিল্লিকে এফ৩৫ যুদ্ধবিমানও দেবে ওয়াশিংটন।
অভিবাসন বিষয়ক আলোচনা
দুই নেতার আলোচনায় অভিবাসন সংক্রান্ত বিষয়ও গুরুত্ব পায়। ট্রাম্প ভারতকে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানরত নথিপত্রহীন হাজারো অভিবাসীকে ফিরিয়ে নিতে বলবেন বলে ধারণা করা হয়েছিল।
মোদি ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাতের আগে মার্কিন ধনকুবের ইলন মাস্কের সঙ্গে বৈঠক করেন। এ বৈঠকে মহাকাশ, প্রযুক্তি ও উদ্ভাবন নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানান মোদি।
দ্রুত কাজ করার প্রতিশ্রুতি
মোদি বলেন, “আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদের চেয়ে এবার আমরা দ্বিগুণ গতিতে কাজ করব।”
ট্রাম্পের উপদেষ্টাদের সঙ্গে বৈঠকের পর তিনি বিশ্বব্যাপী মার্কিন বাণিজ্যিক অংশীদারদের ওপর নতুন শুল্ক আরোপের নির্দেশ দেন। তিনি সতর্ক করে বলেন, এই শুল্ক আগামী ১ এপ্রিলের মধ্যে কার্যকর হতে পারে।
শুল্ক প্রসঙ্গে ট্রাম্পের মন্তব্য
মোদি ও ট্রাম্পের বৈঠকের আগে ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, “আমদানি শুল্কের ক্ষেত্রে আমাদের মিত্ররা আমাদের শত্রুদের চেয়েও খারাপ।” তিনি আরও বলেন, “এটি আমাদের জন্য খুবই অন্যায্য একটি ব্যবস্থা ছিল। সবাই যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে সুবিধা নিয়েছে।”
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির এই বৈঠক দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। জ্বালানি চুক্তি, বাণিজ্যিক সম্পর্কের উন্নয়ন এবং অভিবাসন বিষয়ক আলোচনা এই সফরের মূল আকর্ষণ। দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধি পেলে তা কেবল অর্থনৈতিক ক্ষেত্রেই নয়, বরং রাজনৈতিক ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।