বানিজ্য

বাজারে আলু ও ব্রয়লার মুরগির মূল্যবৃদ্ধি: সয়াবিন তেলের সংকট অব্যাহত

সাম্প্রতিক সময়ে দেশের বাজারে আলু ও ব্রয়লার মুরগির দাম উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। একই সঙ্গে, বোতলজাত সয়াবিন তেলের সরবরাহেও ঘাটতি দেখা দিয়েছে, যা ভোক্তাদের জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

ব্রয়লার মুরগির মূল্যবৃদ্ধি

গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে ব্রয়লার মুরগির কেজি প্রতি মূল্য ১০ টাকা বেড়ে বর্তমানে ২০০-২১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বিক্রেতাদের মতে, শবে বরাত উপলক্ষে মুরগির চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় এ মূল্যবৃদ্ধি ঘটেছে। এছাড়া, গরুর মাংসের চাহিদাও কিছুটা বেড়েছে, যা বাজারে মাংসের দামে প্রভাব ফেলছে। বর্তমানে গরুর মাংস প্রতি কেজি ৭৫০-৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

আলুর মূল্যবৃদ্ধি

খুচরা বাজারে আলুর দাম কেজি প্রতি ৫ টাকা বেড়ে বর্তমানে ২৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পাইকারি বাজারেও আলুর দাম ২ টাকা বেড়েছে। তবে, কিছু বাজারে আলু এখনও ২০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে।

সয়াবিন তেলের সংকট

ফেব্রুয়ারি মাসের শুরু থেকে বাজারে বোতলজাত সয়াবিন তেলের সংকট দেখা দিয়েছে, যা এখনও কাটেনি। খুচরা বিক্রেতারা জানান, বিভিন্ন ভোজ্যতেল কোম্পানির ডিলাররা নিয়মিত তেল সরবরাহ করছেন না। এ সুযোগে খোলা সয়াবিন তেলের দাম লিটারে ৫-৭ টাকা বেড়েছে। বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন জানিয়েছেন, আগামী ৭ থেকে ১০ দিনের মধ্যে তেলের বাজার স্থিতিশীল হবে এবং সয়াবিন তেলের সংকট কাটবে।

অন্যান্য পণ্যের মূল্য পরিস্থিতি

মসলাপণ্যের মধ্যে আদার দাম কিছুটা বেড়েছে। বর্তমানে দেশি আদা প্রতি কেজি ১৪০-১৫০ টাকা এবং আমদানি করা আদা ২৪০-২৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে, দেশি নতুন পেঁয়াজের দামে কোনো পরিবর্তন নেই; বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহ বেশি থাকায় দাম স্থিতিশীল রয়েছে। বর্তমানে পেঁয়াজ প্রতি কেজি ৪৫-৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

শীতের মৌসুমের শেষ দিকে এসে কিছু সবজির দামে বাড়তি প্রবণতা দেখা গেছে। ফুলকপি প্রতি পিস ৩০ টাকা, ব্রকলি ৪০ টাকা, এবং বেগুন মানভেদে প্রতি কেজি ৪০-৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

ভোক্তাদের প্রতিক্রিয়া

সয়াবিন তেলের সংকট নিয়ে ভোক্তারা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। রাজধানীর ধানমন্ডির বাসিন্দা জয়নাল আবেদীন জানান, তিনি দুই লিটার সয়াবিন তেল কেনার জন্য স্থানীয় বাজারে অন্তত পাঁচটি দোকানে ঘুরেছেন, কিন্তু তেল পাননি। তিনি বলেন, ‘টিভিতে দেখলাম উপদেষ্টা বলছেন, বাজারে সয়াবিনের সরবরাহ ঠিক আছে; কিন্তু বাজারে এসে দেখি, সয়াবিন নেই।’

সার্বিক মূল্য পরিস্থিতি

সপ্তাহের ব্যবধানে ব্রয়লার মুরগি ও আলুর দাম বেড়েছে, যা ভোক্তাদের জন্য উদ্বেগের কারণ। সয়াবিন তেলের সংকটও কাটেনি, যা বাজারে অস্থিরতা সৃষ্টি করছে। তবে, পেঁয়াজের দাম স্থিতিশীল থাকায় কিছুটা স্বস্তি রয়েছে। ভোক্তারা আশা করছেন, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে বাজার স্থিতিশীল করবে এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখবে।

বাজারের এই অস্থিরতা নিরসনে সরকার ও ব্যবসায়ীদের সমন্বিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন। বিশেষ করে, সয়াবিন তেলের সরবরাহ নিশ্চিত করতে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া উচিত, যাতে ভোক্তাদের ভোগান্তি কমে। এছাড়া, অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য স্থিতিশীল রাখতে বাজার মনিটরিং জোরদার করা জরুরি।

ভোক্তাদেরও সচেতন থাকতে হবে এবং প্রয়োজনের অতিরিক্ত পণ্য ক্রয় থেকে বিরত থাকতে হবে, যাতে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি না হয়। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় বাজারের এই অস্থিরতা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হবে বলে আশা করা যায়।

সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, বাজার পরিস্থিতি ক্রমশ পরিবর্তনশীল। তাই, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য সম্পর্কে আপডেট থাকতে নিয়মিত বাজার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা উচিত। ভোক্তাদের স্বার্থ রক্ষায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সক্রিয় ভূমিকা পালন করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

বাজারের এই অস্থিরতা নিরসনে সরকার ও ব্যবসায়ীদের সমন্বিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন। বিশেষ করে, সয়াবিন তেলের সরবরাহ নিশ্চিত করতে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া উচিত, যাতে ভোক্তাদের ভোগান্তি কমে। এছাড়া, অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য স্থিতিশীল রাখতে বাজার মনিটরিং জোরদার করা জরুরি।

ভোক্তাদেরও সচেতন থাকতে হবে এবং প্রয়োজনের অতিরিক্ত পণ্য ক্রয় থেকে বিরত থাকতে হবে, যাতে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি না হয়।

মন্তব্য করুন

Related Articles

Back to top button