এশিয়ার বাজারে এলএনজির দাম দুই মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ

এশিয়ার দেশগুলোতে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) যথেষ্ট মজুত থাকলেও স্পট মার্কেটে দাম দুই মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। ইউরোপের বাজারে এলএনজির মূল্যবৃদ্ধির প্রভাব এশিয়ার বাজারেও পড়েছে।
দাম বৃদ্ধির কারণ
উত্তর-পূর্ব এশিয়ায় মার্চ মাসের সরবরাহের চুক্তির ক্ষেত্রে প্রতি এমএমবিটিইউ এলএনজির গড় মূল্য গত সপ্তাহে ছিল ১৪ ডলার ৯০ সেন্ট, যা ডিসেম্বরের শুরুর পর সর্বোচ্চ। এর আগের সপ্তাহে প্রতি এমএমবিটিইউ এলএনজির দাম ছিল ১৩ ডলার ৮০ সেন্ট।
ইউরোপের বাজারের প্রভাব
ইউরোপের বাজারে প্রাকৃতিক গ্যাসের দাম গত সপ্তাহে ১৫ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। বিশেষজ্ঞরা জানান, শীতকালে এলএনজির ব্যবহার বাড়ে এবং মজুত কমে যাওয়ার কারণে দাম বেড়ে যায়।
চাহিদা ও সরবরাহ
বিশ্লেষকদের মতে, ইউরোপে এলএনজির কেনাবেচা এখনও বাড়ছে। গত কয়েক বছরের তুলনায় এবার ইউরোপে ঠান্ডা বেশি পড়েছে এবং গত দুই সপ্তাহে মজুত থেকে ব্যবহার বেড়েছে। আগামী দুই সপ্তাহ এই ধারা অব্যাহত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে, তাই মজুত পূরণে ভবিষ্যতে আমদানি বাড়াতে পারে দেশগুলো।
সরবরাহের ব্যাঘাত
কেপলারের এলএনজি অ্যান্ড ন্যাচারাল গ্যাস অ্যানালিস্ট গো কাতায়ামা বলেন, তাপমাত্রা কমে যাওয়ার পাশাপাশি অস্ট্রেলিয়া ও ইন্দোনেশিয়ার দুটি প্রকল্প থেকে সরবরাহ ব্যাহত হওয়ার কারণে চলতি সপ্তাহে এলএনজির দাম বেড়েছে। সামনের দিনগুলোতে উত্তর-পূর্ব এশিয়ায় চাহিদা বৃদ্ধির সম্ভাবনা কম। জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ায় পর্যাপ্ত মজুত রয়েছে।
মার্চ মাসের দাম
এসঅ্যান্ডপি গ্লোবাল কমোডিটি ইনসাইটস গত বৃহস্পতিবার মার্চ মাসে সরবরাহের জন্য নর্থওয়েস্ট ইউরোপ এলএনজি মার্কার (এনডব্লিউএম) বাজার মানদণ্ডে প্রতি এমএমবিটিইউ এলএনজির দাম নির্ধারণ করেছে ১৫ ডলার ৯৬ সেন্টে। একই মাসের সরবরাহ চুক্তিতে টিটিএফে প্রতি এমএমবিটিইউ এলএনজিতে ৫৫ সেন্ট ছাড় দেওয়া হয়েছে।
পরিবহন ব্যয়
এদিকে এলএনজি পরিবহন ব্যয় এখনো রেকর্ড পরিমাণ কম। স্পার্ক কমোডিটিজের বিশ্লেষক কাসিম আফগান জানান, গত শুক্রবার আটলান্টিক মহাসাগর পথে এলএনজির পরিবহন ব্যয় কমে দৈনিক ৩ হাজার ৭৫০ ডলারে নেমে এসেছে। প্রশান্ত মহাসাগর পথে তা কমে দৈনিক ৯ হাজার ৭৫০ ডলারে নেমে এসেছে।
এশিয়ার বাজারে এলএনজির দাম বৃদ্ধির ফলে দেশগুলোর মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে ইউরোপের বাজারের প্রভাব এশিয়ার বাজারে স্পষ্ট। এলএনজির দাম বাড়ার কারণে ভবিষ্যতে এই খাতের ওপর প্রভাব পড়তে পারে। সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উচিত এই পরিস্থিতি মোকাবেলায় কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা, যাতে ভবিষ্যতে এলএনজির দাম স্থিতিশীল রাখা যায়।