বানিজ্য

জেসিআই বাংলাদেশ কার্নিভাল ২০২৫: এক উজ্জ্বল আয়োজন

জেসিআই বাংলাদেশ প্রতিবারের মতো এবারও তাদের বার্ষিক কার্নিভাল আয়োজনের মাধ্যমে নতুন উদ্যমে শুরু করল ২০২৫ সালের কার্যক্রম। দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত এই জমকালো কার্নিভালটি তরুণদের উদ্দীপনা, মনোভাব এবং তাদের ভবিষ্যত তৈরির লক্ষ্যকে সামনে রেখে একটি অনুপ্রেরণাদায়ী ও সহযোগিতামূলক পরিবেশ তৈরি করেছে। গতকাল শুক্রবার (০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫) রাজধানীর একটি জমকালো ভেন্যুতে এই ইভেন্টটি অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে জেসিআই বাংলাদেশের সদস্য, কর্পোরেট পার্টনার, এবং দেশের উদীয়মান তরুণ নেতারা একত্রিত হয়ে আনন্দে মেতে ওঠেন।

উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বিশেষ বক্তারা

জেসিআই বাংলাদেশের ন্যাশনাল প্রেসিডেন্ট কাজী ফাহাদ অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন। তিনি তার বক্তৃতায় ২০২৫ সালের জন্য জেসিআই বাংলাদেশের দৃষ্টিভঙ্গি ও লক্ষ্যগুলো তুলে ধরেন এবং সংগঠনের শক্তিশালী নেতৃত্বের প্রয়োজনীয়তার উপর গুরুত্ব দেন। তিনি বলেন, “আমরা তরুণ নেতৃত্বকে শক্তিশালী করি, যারা আমাদের ভবিষ্যতকে গড়ে তুলবে এবং সমাজে স্থায়ী ইতিবাচক পরিবর্তন আনবে।”

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিটিএমএ-এর প্রেসিডেন্ট শওকত আজিজ রাসেল। এছাড়া, জেসিআই বাংলাদেশের ইভেন্ট এডভাইজর ও ডেপুটি ন্যাশনাল প্রেসিডেন্ট আরিফিন রাফি আহমেদ, ন্যাশনাল জেনারেল লিগাল কাউন্সিল এসকে মতিউর রহমান সহ অন্যান্য সম্মানিত সদস্যবৃন্দও উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া, এলিট ফোর্স, টেকনো ড্রাগস লিমিটেড এবং শেলটেকসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের উচ্চ পদস্থ প্রতিনিধিরাও অংশগ্রহণ করেন।

কার্নিভালের আকর্ষণীয় পর্ব

অনুষ্ঠানটির সকালের পর্ব শুরু হয় একটি ট্যালেন্ট হান্ট প্রতিযোগিতার মাধ্যমে। এতে তরুণরা তাদের প্রতিভা প্রদর্শন করেন এবং দর্শকদের মনোরঞ্জন করেন। ট্যালেন্ট হান্টের পাশাপাশি, অতিথিদের জন্য একটি র‍্যাফেল ড্রয়ের আয়োজন করা হয়েছিল, যা প্রত্যেকের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি করেছিল।

অনুষ্ঠানে অতিথিরা কিছু অনুপ্রেরণামূলক বক্তৃতাও শুনতে পান, যা তাদের নতুন উদ্যম এবং শক্তি যোগাতে সহায়তা করে। বিশেষত, জেসিআই বাংলাদেশের ন্যাশনাল প্রেসিডেন্ট কাজী ফাহাদ তার বক্তৃতায় এ কথা উল্লেখ করেন যে, এই ধরনের ইভেন্টগুলোর মাধ্যমে তরুণরা তাদের সমাজের জন্য আরও ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে প্রেরণা লাভ করে।

এছাড়া, চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী মেজবান ভোজ এবং অন্যান্য চমৎকার খাবারের আয়োজনও অতিথিদের বিশেষ মনোযোগ আকর্ষণ করেছিল। বিভিন্ন উদ্ভাবনী ধারণা এবং প্রকল্পের প্রদর্শনীর মধ্য দিয়ে একাধিক প্রতিষ্ঠানের অংশগ্রহণ ঘটেছিল, যা তরুণ উদ্যোক্তাদের কাছে এক গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা হিসেবে কাজ করেছে।

সান্ধ্য অনুষ্ঠান: নাগর বাউল ও জেমসের মনমুগ্ধকর পারফরম্যান্স

এদিনের সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত বিশেষ সান্ধ্য অনুষ্ঠানটি ছিল আরও এক আকর্ষণীয় মুহূর্ত। দেশের কিংবদন্তি শিল্পী নাগর বাউল তার গানে মুগ্ধ করেন উপস্থিত দর্শকদের। তার গান শোনার পর, জনপ্রিয় সঙ্গীতশিল্পী জেমসের পারফরম্যান্সও অতিথিদের মধ্যে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে। তার সুরে মেতে ওঠে পুরো কার্নিভাল। নাগর বাউল এবং জেমসের গানের এই পরিবেশনাটি সংগীতপ্রেমীদের জন্য একটি বিশেষ মুহূর্ত হিসেবে চিহ্নিত হয়।

জেসিআই বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ লক্ষ্য

এ বছরকার কার্নিভাল অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী সকল নেতৃবৃন্দ এবং সদস্যরা নিজেদের লক্ষ্য ও ভবিষ্যতের পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করেন। এই ইভেন্টটি শুধুমাত্র একটি বিনোদনমূলক কর্মসূচী নয়, বরং একটি গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্ম যেখানে তরুণরা একত্রিত হয়ে একে অপরের অভিজ্ঞতা ভাগাভাগি করে এবং তাদের কমিউনিটি উন্নয়ন ও ভবিষ্যত নেতৃত্বে কিভাবে অবদান রাখতে পারে সে বিষয়ে আলোকপাত করেন।

জেসিআই বাংলাদেশের ন্যাশনাল প্রেসিডেন্ট কাজী ফাহাদ বলেন, “এই ধরনের ইভেন্টগুলি তরুণদের মাঝে নেতৃত্বের গুণাবলী গড়ে তুলতে সহায়তা করে। তরুণদের উদ্যোক্তা এবং সমাজসেবী হিসেবে গড়ে তুলতে আমাদের সংগঠন দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব ফেলছে।”

সহযোগিতার শক্তি এবং যুবকদের সামাজিক উন্নয়ন

জেসিআই বাংলাদেশের সিওসি ও ন্যাশনাল ট্রেজারার ইরফান উদ্দিন বলেন, “আমরা অত্যন্ত আনন্দিত যে আমাদের সদস্য, স্পন্সর এবং অংশীদারদের কাছ থেকে পাওয়া অভূতপূর্ব সমর্থন দেখেছি। এই ইভেন্টটি সহযোগিতার শক্তি এবং যুবকদের সামাজিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখার শক্তি প্রদর্শন করেছে।”

এছাড়া, ইভেন্ট ডিরেক্টর এবং ন্যাশনাল এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট ফাহিম আহমেদ বলেন, “এই চমৎকার কার্নিভালের জন্য ইভেন্ট ডিরেক্টর হিসেবে কাজ করা একটি সম্মানের বিষয়। আজকের যুব সদস্যদের উৎসাহ এবং সৃজনশীলতা দেখে বুঝতে পারি কেন আমরা যা করি তা এত গুরুত্বপূর্ণ।”

শেষকথা

এটি ছিল একটি অনুপ্রেরণামূলক দিন, যেখানে তরুণরা তাদের সম্ভাবনা এবং ভবিষ্যত নির্মাণে সহায়ক শক্তি খুঁজে পেয়েছে। অনুষ্ঠানের শেষ অংশে উপস্থিত সকল অতিথি, অংশীদার এবং আয়োজকদের ধন্যবাদ জানিয়ে সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।

জেসিআই বাংলাদেশের কার্নিভাল ২০২৫ এক নতুন শুরুর পথে পদক্ষেপ রাখতে চলেছে। এই ধরনের অনুষ্ঠানগুলোর মাধ্যমে তরুণরা নিজ নিজ উদ্যোগে এবং নেতৃত্বের মাধ্যমে সমাজের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে, আর এই আয়োজনটি তারই দৃষ্টান্ত স্থাপন করল।

মন্তব্য করুন

Related Articles

Back to top button