খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে জন্ম নেওয়া এক পরিত্যক্ত নবজাতক শিশুর পাশে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে গঠিত বিএনপির ‘নিপীড়িত নারী ও শিশুদের আইনি ও স্বাস্থ্য সহায়তা সেল’ শিশুটির চিকিৎসা ও সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হাসপাতালে ছুটে যায়। গত রবিবার (২৩ নভেম্বর) জন্ম নেওয়ার পরই তার কথিত বাবা-মা তাকে পরিত্যাগ করে পালিয়ে যাওয়ার ঘটনায় হাসপাতাল জুড়ে তৈরি হয় চাঞ্চল্য।
মানবতার ডাকে সাড়া দিয়ে তারেক রহমান তাৎক্ষণিকভাবে এই নবজাতকের দায়িত্ব নেওয়ার জন্য দলের স্বাস্থ্য সহায়তা সেলকে নির্দেশ দেন। সেলের সদস্যরা দ্রুত খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে শিশুটির চিকিৎসা ও সুরক্ষার জন্য আর্থিক সহায়তা ও প্রয়োজনীয় সামগ্রী হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দেন। সেলের কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী এবং বিএনপির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. মো. রফিকূল ইসলাম ভার্চুয়ালি হাসপাতালের চিকিৎসক ও নার্সদের সঙ্গে কথা বলে শিশুটির সামগ্রিক অবস্থার খোঁজখবর নেন এবং প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা প্রদান করেন।
ঘটনার বিবরণ ও নবজাতকের পরিস্থিতি
খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পরিত্যক্ত হওয়ার ঘটনাটি কিভাবে সামনে এলো এবং বর্তমানে শিশুটির অবস্থা কেমন।
- জন্মের তারিখ ও স্থান: শিশুটির জন্ম হয় গত রবিবার (২৩ নভেম্বর) খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।
- পরিত্যাগের ঘটনা: অভিযোগ উঠেছে যে, নবজাতকটি জন্মের পরই তার কথিত বাবা-মা তাকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে পরিত্যক্ত অবস্থায় ফেলে রেখে পালিয়ে যান। এই অমানবিক ঘটনাটি দ্রুতই হাসপাতালের অন্যান্য রোগী ও স্টাফদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে।
- শিশুটির বর্তমান অবস্থা: বর্তমানে শিশুটি খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিবিড় পর্যবেক্ষণে রয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তার প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করছে। বিএনপির সেলের সদস্যরা হাসপাতালের পরিচালক ডা. মো. আইনুল ইসলাম, তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো. আক্তারুজ্জামান এবং সহকারী পরিচালক ডা. আহসান হাবীব সহ অন্যান্য চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে শিশুটির সামগ্রিক অবস্থার খোঁজ নেন।
তারেক রহমানের নির্দেশে দলের মানবিক উদ্যোগ
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশনা কীভাবে দ্রুত এই মানবিক সহায়তা নিশ্চিত করল।
ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের নির্দেশনা: অসহায় নবজাতকটি পরিত্যক্ত হওয়ার খবর পাওয়ার পরপরই বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এই শিশুটির প্রতি তার মানবিক সংবেদনশীলতা প্রকাশ করেন এবং দ্রুত সহায়তার জন্য দলের ‘নিপীড়িত নারী ও শিশুদের আইনি ও স্বাস্থ্য সহায়তা সেল’-কে নির্দেশ দেন।
সেলের সদস্যদের উপস্থিতি: তারেক রহমানের নির্দেশে সেলের সদস্য ডা. আকরামুজ্জামান, ডা. আবু জাফর মোহাম্মদ সালেহ পলাশ, ডা. তাজরুল ইসলাম, ডা. হুমায়রা মুসলিমা বাবলীসহ অন্যান্য ডাক্তার ও নার্সরা হাসপাতালে যান।
ভার্চুয়াল দিকনির্দেশনা: সেলের কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী ডা. মো. রফিকূল ইসলাম দেশের বাইরে থাকায় ভার্চুয়ালি হাসপাতালে উপস্থিত চিকিৎসক ও নার্সদের সাথে কথা বলেন এবং শিশুটির চিকিৎসা সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা প্রদান করেন।
চিকিৎসা ও সুরক্ষার জন্য সহায়তা
বিএনপির পক্ষ থেকে নবজাতকটির চিকিৎসা এবং ভবিষ্যতের সুরক্ষার জন্য কী কী উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
- আর্থিক সহায়তা: বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে শিশুটির চিকিৎসা ও সুরক্ষার জন্য আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়। সেলের সদস্যরা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের হাতে এই সহায়তা তুলে দেন।
- সুরক্ষা সামগ্রী: আর্থিক সহায়তার পাশাপাশি শিশুটির জন্য প্রয়োজনীয় শিশু-সুরক্ষা সামগ্রীও সরবরাহ করা হয়। এতে ডায়াপার, পোশাক, খাবার ও অন্যান্য জরুরি সামগ্রী ছিল।
- আইনি ও স্বাস্থ্য সহায়তা: এই সেলটি শুধুমাত্র আর্থিক সহায়তাতেই সীমাবদ্ধ থাকেনি, ভবিষ্যতে শিশুটির আইনি সুরক্ষা এবং দীর্ঘমেয়াদী স্বাস্থ্য সহায়তা নিশ্চিত করার জন্য তারা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করেন।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের ভূমিকা ও কৃতজ্ঞতা
অসহায় শিশুটিকে সুরক্ষিত রাখতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এবং চিকিৎসকদের ভূমিকা।
হাসপাতালের দায়িত্ব: নবজাতকটিকে সুরক্ষিত রাখতে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয় এবং নিবিড় পরিচর্যায় রাখে। এটি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের পেশাদারিত্ব ও মানবিক দায়িত্ববোধের প্রতিফলন।
চিকিৎসকদের মনোযোগ: হাসপাতালের অন্যান্য চিকিৎসক, নার্স ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও শিশুটির প্রতি বিশেষ মনোযোগ দিয়েছেন। ডা. মোহাম্মাদ শওকত আলী, ডা. মাসুদুর রহমান লিমন, ডা. মশিউর রহমান দীপুসহ অনেকে এই সময় উপস্থিত ছিলেন।
সহযোগিতার আশ্বাস: হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিএনপির পক্ষ থেকে পাওয়া সহায়তা ও সহমর্মিতার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে এবং শিশুটির সুরক্ষায় সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেয়।
ডা. মো. রফিকূল ইসলাম : “তারেক রহমান সাহেব পরিষ্কার নির্দেশ দিয়েছেন, এই অসহায় শিশুটির পাশে থাকতে হবে। আমরা তার উন্নত চিকিৎসা ও দীর্ঘমেয়াদী সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কাজ করছি।”
রাজনীতিতে মানবিকতার বার্তা
রাজনৈতিক অস্থিরতার সময়ে বিএনপির পক্ষ থেকে এই ধরনের মানবিক উদ্যোগের তাৎপর্য কী।
মানবিক দিক: এই উদ্যোগটি কেবল একটি রাজনৈতিক দলের সহায়তা নয়, বরং দেশের প্রতিটি শিশুর প্রতি সামাজিক ও মানবিক দায়িত্ববোধের বার্তা বহন করে। এটি দেখায় যে, রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের বাইরেও দলগুলো মানবতার পাশে দাঁড়াতে পারে।
ইতিবাচক ভাবমূর্তি: দীর্ঘদিন ধরে নানা ইস্যুতে সমালোচিত বিএনপির জন্য এটি তাদের ইতিবাচক ভাবমূর্তি গঠনে সহায়ক হবে। বিশেষ করে তারেক রহমানের নির্দেশে এই উদ্যোগটি দলের সাধারণ মানুষের প্রতি সংবেদনশীলতা তুলে ধরে।
সামাজিক প্রভাব: পরিত্যক্ত শিশুর মতো স্পর্শকাতর বিষয়ে একটি বৃহৎ রাজনৈতিক দলের সক্রিয় অংশগ্রহণ সমাজে সচেতনতা বাড়াতে এবং এই ধরনের অমানবিক ঘটনা রোধে সহায়তা করতে পারে।
মানবতা সবার ঊর্ধ্বে
খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পরিত্যক্ত নবজাতকের পাশে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে নেওয়া মানবিক উদ্যোগ নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবি রাখে। এক চরম অমানবিকতার শিকার এই শিশুটির পাশে দলটির ‘নিপীড়িত নারী ও শিশুদের আইনি ও স্বাস্থ্য সহায়তা সেল’-এর দাঁড়ানো এই বার্তা দেয় যে, মানবতা সবকিছুর ঊর্ধ্বে। আর্থিক সহায়তার পাশাপাশি শিশুটির দীর্ঘমেয়াদী সুরক্ষা ও ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় আইনি ও সামাজিক পদক্ষেপ নেওয়া এখন অত্যন্ত জরুরি। দেশের প্রতিটি রাজনৈতিক দলের উচিত, নিজেদের রাজনৈতিক এজেন্ডার বাইরে গিয়ে এই ধরনের অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়ানো এবং একটি সংবেদনশীল সমাজ গঠনে ভূমিকা রাখা।
এম আর এম – ২৩৮২,Signalbd.com


