আঞ্চলিক

স্কুলশিক্ষার্থীকে টয়লেটে নিয়ে ধর্ষণ চেষ্টা, শিক্ষককে গণপিটুনি

Advertisement

মুন্সিগঞ্জে নয় বছর বয়সী তৃতীয় শ্রেণির এক স্কুলশিক্ষার্থীকে টয়লেটে নিয়ে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে অভিযুক্ত স্কুলশিক্ষককে গণপিটুনি দিয়েছেন স্থানীয়রা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রায় এক ঘণ্টার চেষ্টায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ ও সেনাবাহিনীসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। পরে অভিযুক্ত স্কুলশিক্ষক রোমান মিয়াকে (৩৩) ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হেফাজতে নেয়া হয়।

এ ঘটনায় মুন্সিগঞ্জ সদর থানায় বাদী হয়ে ওই স্কুলশিক্ষকের বিরুদ্ধে ধর্ষণ চেষ্টার মামলা দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী স্কুলছাত্রীর বাবা। 

বিস্তারিতঃ

রোববার বেলা ১টার দিকে শহরের উত্তর ইসলামপুর এলাকায় পিটিআই ইন্সটিটিউশন পরীক্ষণ বিদ্যালয়ের এ ঘটনা ঘটে।

এর আগে, গত বৃহস্পতিবার বিকেলে বিদ্যালয়ের টয়লেটে নিয়ে ওই ছাত্রীকে ধর্ষণ চেষ্টার ঘটনা ঘটে বলে মামলার এজাহারে অভিযোগ আনা হয়েছে।

মুন্সিগঞ্জ সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এম সাইফুল আলম এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, অভিযুক্ত শিক্ষক রোমান মিয়ার বাড়ি হবিগঞ্জের লাখাই উপজেলার বৌ-বাড়ি এলাকায়।

তিনি আরও বলেন, রোববার সকালে তৃতীয় শ্রেণির স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টার খবর ছড়িয়ে পড়লে উত্তেজনা তৈরি হয় সাধারণ মানুষ ও অন্যান্য শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের মধ্যে। পরে বিদ্যালয় শ্রেণিকক্ষের ভিতরে মারধর করা হয় অভিযুক্ত ওই স্কুলশিক্ষককে। এরপর পুলিশ ও সেনাবাহিনী সদস্যরা আহত অবস্থায় ওই স্কুলশিক্ষককে ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। 

এ সময় বিক্ষুব্ধ লোকজন অভিযুক্তকে ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করেন। এতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশের পাশাপাশি সেনা মোতায়েন করতে হয় বিদ্যালয়টিতে।

ভুক্তভোগীর পরিবার ও স্থানীয়রা জানান, শিক্ষক রোমান মিয়া ওই ছাত্রীকে টয়লেটে ডেকে নিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা করেন। বাড়ি ফিরে শিশুটি তার মাকে ঘটনাটি জানালে বিষয়টি নিয়ে প্রতিবাদ জানান পরিবারের সদস্যরা। এ ঘটনায় অভিযুক্ত ব্যক্তির দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগী স্কুলছাত্রীর পরিবার।

স্কুলছাত্রী ধর্ষণ চেষ্টা ঘটনায় হাওয়া মামলা এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, গত বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে বিদ্যালয়ের টয়লেটে ওই ছাত্রীকে ডেকে নেয় শিক্ষক রোমান মিয়া। পরে ওই ছাত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন অভিযুক্ত শিক্ষক। এ সময় ভুক্তভোগী ওই স্কুলছাত্রী চিৎকার করে পালিয়ে আসে। এরপর বাড়ি ফিরে তার মাকে ঘটনা খুলে বলে। পরে তাৎক্ষণিক ভুক্তভোগী ওই স্কুলছাত্রীর বাবা, পিটিআই পরীক্ষণ বিদ্যালয়ের সুপারিন্টেনডেন্ট মো. আমিনুল ইসলামকে ঘটনা জানান। তবে সুপারিন্টেনডেন্ট কোনো ব্যবস্থা নেয়নি বলে অভিযোগ তোলা হয়েছে।

এদিন পরিস্থিতি শান্ত করতে স্কুল চত্বরে প্রশাসন মাইকিং করে অভিভাবক ও স্থানীয়দের শান্ত থাকার আহ্বান জানায়।

বিষয়টি নিশ্চিত করে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ফিরোজ কবির বলেন, পিটিআই স্কুলের একজন শিক্ষকের বিরুদ্ধে তৃতীয় শ্রেণির এক শিক্ষার্থীকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ পাওয়া গেছে। খবর পেয়ে আমরা তাকে জনতার হাত থেকে উদ্ধার করি এবং হাসপাতালে পাঠাই। বাদীপক্ষ মামলা করেছেন। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক। অভিযোগ যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। তদন্ত সাপেক্ষে দ্রুত পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এদিকে অভিযুক্ত স্কুল শিক্ষককে রোববার বিকেলে আদালতে পাঠিয়েছে পুলিশ। পরে আদালতের নির্দেশে তাকে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়।

মন্তব্য করুন
Advertisement

Related Articles

Back to top button