জাতীয়

নির্বাচনকে উৎসবমুখর করতে সেনাবাহিনীর সহায়তা চাই: প্রধান উপদেষ্টা

Advertisement

ড. ইউনুস বলেন, আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে শান্তিপূর্ণ ও আনন্দময় পরিবেশে অনুষ্ঠিত করতে সেনাবাহিনী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে

মিরপুর, ঢাকা: আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর করার জন্য সেনাবাহিনীর সহায়তা অপরিহার্য বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুস।

বুধবার (১৯ নভেম্বর) দুপুরে মিরপুর সেনানিবাসের ডিফেন্স সার্ভিস কমান্ড ও স্টাফ কলেজ (ডিএসসিএসসি) অডিটোরিয়ামে আয়োজিত কোর্স-২০২৫ গ্র্যাজুয়েশন সনদ বিতরণ অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে তিনি এ মন্তব্য করেন।

ড. ইউনুস বলেন, “দেশবাসীর দীর্ঘদিনের প্রত্যাশিত এই নির্বাচনকে সত্যিকার অর্থে একটি শান্তিপূর্ণ উৎসব এবং আনন্দময় পরিবেশে আয়োজন করতে আমাদের সেনাবাহিনীর সহায়তা একান্তভাবে কাম্য।”

তিনি আরও উল্লেখ করেন, দেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে শক্তিশালী করা এবং জনগণকে ভোটাধিকার সুষ্ঠুভাবে প্রয়োগ করার ক্ষেত্রে সেনাবাহিনীর ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

জুলাই গণ-অভ্যুত্থান ও সেনাবাহিনীর ভূমিকা

ড. ইউনুস স্মরণ করেন, জুলাই মাসের গণ-অভ্যুত্থানে সেনাবাহিনী সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে দেশের শান্তি ও স্থিতিশীলতা রক্ষা করেছে। তিনি বলেন, “সেনাবাহিনী যে ভূমিকা নিয়েছে, তা আমি অত্যন্ত ভূয়সী প্রশংসা করি। তারা দেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে সমর্থন করেছে এবং সমাজে শান্তি ফিরিয়ে এনেছে।”

নির্বাচনকে উৎসবমুখর করার আহ্বান

ড. ইউনুস আরও বলেন, দেশের মানুষ যেন ভোট দেওয়ার সময় ভয়ের পরিবর্তে আনন্দ অনুভব করতে পারে, সেই জন্য সেনাবাহিনী উপস্থিত থাকবে। তিনি মনে করান, জনগণ যখন স্বাধীনভাবে এবং নিরাপদে ভোট দেয়, তখন দেশ সত্যিকারের গণতান্ত্রিক মূল্যে পৌঁছায়।

তিনি বলেন, “নির্বাচন মানেই শুধু ভোটগ্রহণ নয়, এটি এক ধরনের সামাজিক ও রাজনৈতিক উৎসব। আমাদের সকল প্রতিষ্ঠান—সেনা, প্রশাসন, নির্বাচন কমিশন এবং নাগরিক সমাজ—মিলিতভাবে এটি সুষ্ঠুভাবে নিশ্চিত করতে হবে।”

নির্বাচন কমিশনের প্রস্তুতি

বর্তমান নির্বাচনের প্রেক্ষাপটে নির্বাচন কমিশন (ইসি) ইতিমধ্যেই বিভিন্ন প্রস্তুতি নিচ্ছে। ভোটারদের তথ্য হালনাগাদ, নতুন ভোটকেন্দ্র স্থাপন এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হচ্ছে।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, সেনাবাহিনীর উপস্থিতি শুধু নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে না, বরং ভোটারদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস ও নিরাপত্তাবোধও বৃদ্ধি করবে। এটি নির্বাচনের স্বচ্ছতা ও জনগণের আস্থা বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ।

দেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট

বাংলাদেশে ভোটকে প্রায়শই রাজনৈতিক উত্তেজনা ও আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত করা হয়। ফলে সাধারণ মানুষ অনেক সময় ভোট কেন্দ্রে যাওয়া নিয়ে নিরাপত্তা-সংক্রান্ত উদ্বেগ অনুভব করে।
ড. ইউনুসের বক্তব্য অনুসারে, সেনাবাহিনী যখন ভোটকে শান্তিপূর্ণ উৎসবে রূপ দিতে সহায়তা করে, তখন জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করতে উৎসাহিত হয়।

শিক্ষার্থী ও যুব সমাজের গুরুত্ব

গ্র্যাজুয়েশন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ড. ইউনুস শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, “আপনারা এই দেশের ভবিষ্যত। ভোটাধিকারকে গুরুত্ব দিন, ভোটের মাধ্যমে দেশের ভবিষ্যৎ গঠনে অংশ নিন। এটি একটি দায়িত্ব ও অধিকার—দুটি মিলিত হলে দেশের উন্নয়ন নিশ্চিত হয়।”

তিনি আরও উল্লেখ করেন, যুব সমাজের সক্রিয় অংশগ্রহণ দেশের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানকে আরও শক্তিশালী করবে।

সেনাবাহিনী ও নাগরিক সহযোগিতা

ড. ইউনুস বলেন, “সেনাবাহিনী এবং নাগরিক সমাজ একসাথে কাজ করলে দেশের নির্বাচন শুধু রাজনৈতিক প্রক্রিয়া নয়, এটি একটি সামাজিক ও সাংস্কৃতিক উৎসব হয়ে ওঠে। এটি দেশের স্থায়িত্ব ও গণতন্ত্রকে আরও মজবুত করে।”

গ্র্যাজুয়েশন অনুষ্ঠানে ড. ইউনুস শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, “দেশের প্রতি আপনার দায়িত্ব বোঝা এবং ভোটের মাধ্যমে দেশের উন্নয়নে অংশগ্রহণ করা প্রতিটি নাগরিকের কর্তব্য। আমরা আশা করি, আসন্ন নির্বাচন হবে শান্তিপূর্ণ, স্বচ্ছ ও উৎসবমুখর।”

তিনি শেষমেষ বলেন, “নির্বাচনকে আমরা শুধু রাজনৈতিক ঘটনা হিসেবে নয়, বরং দেশের গণতন্ত্রকে উদযাপনের একটি উৎসবমুখর অভিজ্ঞতা হিসেবে দেখতে চাই। এই লক্ষ্য পূরণে সেনাবাহিনী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।”

MAH – 13889 I Signalbd.com

মন্তব্য করুন
Advertisement

Related Articles

Back to top button