গাজীপুরের বাঘের বাজারে অবস্থিত ফিনিক্স কয়েল কারখানায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা। তৎক্ষণাত আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিসের সাতটি ইউনিট। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এখনও নির্ধারণ হয়নি।
গাজীপুরের বাঘের বাজার এলাকায় ফিনিক্স কয়েল কারখানায় বুধবার দুপুরে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। স্থানীয় ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা যায়, আগুনের তীব্রতা এতটাই বেশি ছিল যে শুরুতে দুটি ইউনিট পাঠানো হলেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য আরও পাঁচটি ইউনিট ছুটে আসে।
অগ্নিকাণ্ডের সময় কারখানার শেড, কয়েল এবং কয়েলের ট্রলি সম্পূর্ণভাবে পুড়ে গেছে। তবে, হতাহতের কোনও খবর পাওয়া যায়নি। ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তা জানান, আগুনের প্রকৃত কারণ এখনও জানা যায়নি এবং তা তদন্তের মাধ্যমে নির্ধারণ করা হবে।
ফায়ার সার্ভিসের এক কর্মকর্তা বলেন, “আমরা সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালাচ্ছি আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য। মোট সাতটি ইউনিট কাজ করছে। আশা করছি দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হবে।”
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, আগুনের শিখা এত শক্তিশালী ছিল যে আশেপাশের এলাকায় ধোঁয়ার কুয়াশা দেখা গিয়েছিল। অনেক মানুষ ভয়ভীত হয়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে এসেছে। অগ্নিকাণ্ডের কারণে এলাকার পরিবহন ও দৈনন্দিন জীবন কিছুটা ব্যাহত হয়েছে।
আগুনের ইতিহাস ও কয়েল শিল্প
ফিনিক্স কয়েল কারখানা গাজীপুরের একটি প্রাচীন শিল্প প্রতিষ্ঠান। কয়েল উৎপাদন শিল্প বাংলাদেশের বৈদ্যুতিক ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল খাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। প্রতি বছর কয়েকটি কারখানায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে, যা সাধারণত বিদ্যুত সংযোগ, যন্ত্রপাতি ত্রুটি বা সঞ্চিত জ্বালানির কারণে ঘটে থাকে।
সোমবারের আগুনের ঘটনা থেকে বোঝা যায় যে, শিল্প কারখানায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও উন্নত করা অত্যন্ত জরুরি। ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তারা প্রাথমিকভাবে বলছেন, কারখানার ভেতরের সেফটি গাইডলাইন মানা হয়েছে কি না তা তদন্ত করা হচ্ছে।
ফায়ার সার্ভিসের দ্রুত পদক্ষেপ
ফায়ার সার্ভিস সূত্র জানিয়েছে, আগুন নেভানোর জন্য মোট সাতটি ইউনিট কাজ করছে। শুরুতে দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। আগুনের তীব্রতা ও আকার দেখে আরও পাঁচটি ইউনিট পাঠানো হয়। ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা জানান, আগুন নিয়ন্ত্রণে আসতে কয়েক ঘণ্টা সময় লাগতে পারে।
এছাড়াও তারা সতর্ক করে বলেছেন, আশেপাশের এলাকা থেকে লোকজনকে সরিয়ে রাখা হয়েছে, যাতে কোনরকম দুর্ঘটনা না ঘটে।
স্থানীয়দের প্রতিক্রিয়া
স্থানীয় ব্যবসায়ীরা এবং এলাকাবাসী জানিয়েছেন, আগুনের সময় তারা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিলেন। কেউ কেউ জানিয়েছেন, ধোঁয়া অনেক দূর পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়েছে। কেউ কেউ বলছেন, আগুনের শব্দ শুনে প্রথমে মনে হয়েছিল বড় ধরনের বিস্ফোরণ হয়েছে।
এক স্থানীয় ব্যবসায়ী বলেন, “কারখানার শেড ও কয়েল পুড়ে যাওয়ায় আমরা খুবই উদ্বিগ্ন। আশা করি কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।”
ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ
প্রাথমিকভাবে বলা যাচ্ছে, কারখানার শেড, কয়েল এবং কয়েলের ট্রলি সম্পূর্ণভাবে পুড়ে গেছে। তবে অর্থনৈতিক ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এখনও নির্ধারণ করা যায়নি। কর্মকর্তারা বলছেন, আগুনের কারণ জানার পরই পুরো ক্ষয়ক্ষতির হিসাব তৈরি করা সম্ভব হবে।
প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা
ফায়ার সার্ভিস এবং স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, ভবিষ্যতে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে কারখানার নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও শক্তিশালী করা হবে। শিল্প মালিকরা ইতোমধ্যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, কারখানায় ফায়ার এক্সটিংগুইশার, সিসিটিভি এবং সেফটি গাইডলাইন আরও উন্নত করা হবে।
গাজীপুরের বাঘের বাজারে ফিনিক্স কয়েল কারখানায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা স্থানীয়দের আতঙ্কিত করেছে। ফায়ার সার্ভিসের সাতটি ইউনিট তৎক্ষণাৎ ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে। কারখানার শেড, কয়েল এবং কয়েলের ট্রলি সম্পূর্ণভাবে পুড়ে গেছে। হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। আগুনের কারণ তদন্তাধীন।
MAH – 13883 I Signalbd.com



