বাংলাদেশ

গাড়িতে আগুন-ককটেল নিক্ষেপকারীকে দেখা মাত্র গুলির নির্দেশ ডিএমপি কমিশনারের

Advertisement

ডিএমপি কমিশনার শেখ মোহাম্মদ সাজ্জাদ আলী জানিয়েছেন, কোনো যানবাহনে আগুন বা ককটেল নিক্ষেপ করলে পুলিশ তাৎক্ষণিক গুলি চালাবে। পরিস্থিতি দেশের নিরাপত্তার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মোহাম্মদ সাজ্জাদ আলী নির্দেশ দিয়েছেন, কোনো গাড়িতে আগুন বা ককটেল নিক্ষেপের চেষ্টা করলে পুলিশ অবিলম্বে গুলি চালাবে। তিনি বলেছেন, এটি জনজীবন ও সম্পদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য নেওয়া জরুরি ব্যবস্থা।

ঘটনার প্রেক্ষাপট

রোববার (১৬ নভেম্বর) রাতে ডিএমপি কমিশনার এই তথ্য চ্যানেল ২৪ কে নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, “যদি কেউ বাসে আগুন দেয় বা ককটেল নিক্ষেপ করে এবং পুলিশকে আক্রমণ করার চেষ্টা করে, তাহলে পুলিশ কি চুপচাপ বসে থাকবে? সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

ডিএমপি কমিশনারের এই ঘোষণার পেছনে রয়েছে সাম্প্রতিক সময়ে ঢাকা ও দেশের বিভিন্ন স্থানে ঘটে যাওয়া অগ্নিসংযোগ ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা।

ডিএমপি কমিশনারের সতর্কতা

শেখ মোহাম্মদ সাজ্জাদ আলী আরও বলেন, “জানমালের ঝুঁকি তৈরি করলে পুলিশকে কোনো বিকল্প থাকে না। নিরাপত্তা রক্ষার জন্য আইন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কেউ যদি জনসাধারণের জীবনের জন্য হুমকি সৃষ্টি করে, তখন পুলিশকে দায়িত্ব পালনের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।”

ডিএমপি সূত্র জানাচ্ছে, কমিশনারের এই নির্দেশনা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও ডিএমপি’র বিভিন্ন ইউনিটে প্রেরণ করা হয়েছে।

এ নির্দেশনার প্রেক্ষাপট হলো জুলাই গণ–অভ্যুত্থান এবং আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনার বিচারের রায়ের সময়কালের নিরাপত্তা। মঙ্গলবার (১৭ নভেম্বর) সেই রায় ঘোষণার কথা থাকায় ইতোমধ্যেই ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বাস ও ট্রেনে আগুন ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে।

অপরাধীরা সাধারণত জনসাধারণের চলাচল ও যানবাহনের নিরাপত্তা হুমকির মাধ্যমে অসামাজিক কার্যকলাপ চালাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে ডিএমপি কমিশনার কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।

নিরাপত্তা ব্যবস্থায় পদক্ষেপ

ডিএমপি ইতিমধ্যেই রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় বিশেষ টহল ও অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করেছে। শহরের বিভিন্ন রাস্তায় সিসিটিভি মনিটরিং বাড়ানো হচ্ছে এবং যেকোনো ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় দ্রুত অভিযান চালানোর জন্য ইউনিট প্রস্তুত রাখা হচ্ছে।

ডিএমপি কমিশনারের নির্দেশে, যেকোনো আগুন বা ককটেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটার সঙ্গে সঙ্গেই পুলিশকে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিতে হবে। এতে আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখা এবং সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।

প্রতিক্রিয়া

রাজধানীর বাসিন্দারা এই সতর্কবাণীকে সমর্থন করেছেন। তারা মনে করছেন, জনজীবনের নিরাপত্তা ও যান চলাচলের স্বাভাবিকতা নিশ্চিত করতে পুলিশকে দ্রুত ও শক্তিশালী পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।

কিন্তু কিছু আইন বিশেষজ্ঞ মনে করছেন, গুলির মতো শক্তিশালী পদক্ষেপ নেওয়ার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকা উচিত, যাতে সাধারণ নাগরিকরা কোনোভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত না হন।

দেশে আগ্নেয়াস্ত্র এবং নিরাপত্তা পরিস্থিতি

ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন শহরে সম্প্রতি অগ্নিসংযোগ ও অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী কার্যক্রমে বৃদ্ধি লক্ষ্য করা গেছে। চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশও আগ্নেয়াস্ত্র বহনকারী সন্ত্রাসীদের দেখামাত্র সাবমেশিন গান ব্যবহার করার নির্দেশ দিয়েছে। এই পরিস্থিতি দেশের নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করেছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জনজীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পাশাপাশি আইনগত প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে সন্ত্রাস দমন কার্যক্রম পরিচালনা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

ডিএমপি কমিশনারের নির্দেশনা একটি সতর্কবার্তা হিসেবে কাজ করছে। যেকোনো যানবাহনে আগুন বা ককটেল নিক্ষেপ করা হলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষার পাশাপাশি সাধারণ নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এই পদক্ষেপ অপরিহার্য।

পরিস্থিতি দেখেই পরবর্তী পদক্ষেপ এবং জননিরাপত্তা ব্যবস্থা নির্ধারণ করা হবে।

এম আর এম – ২২৬৬,Signalbd.com

মন্তব্য করুন
Advertisement

Related Articles

Back to top button