ঢাকায় অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় মহিলা কাবাডি বিশ্বকাপ-২০২৫ এর ট্রফি আনুষ্ঠানিকভাবে উন্মোচন করা হয়েছে। রোববার (১৬ নভেম্বর) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ট্রফিটি উন্মোচন করেন। অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন বিশ্বকাপের অংশগ্রহণকারী সব দেশের ক্রীড়া প্রতিনিধি এবং বিভিন্ন ক্রীড়া সংগঠনের প্রধানরা।
অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস তার বক্তব্যে উল্লেখ করেন, ঢাকা বিশ্বমানের কাবাডি টুর্নামেন্ট আয়োজনের সক্ষমতা রাখে। তিনি বলেন, “এই বিশ্বকাপ শুধুমাত্র ক্রীড়া প্রতিযোগিতা নয়, এটি এক আন্তর্জাতিক সাংস্কৃতিক বিনিময় এবং নারীর ক্ষমতায়নের এক অনন্য প্ল্যাটফর্ম। আমরা চাই এই টুর্নামেন্টটি অন্তর্ভুক্তিমূলক, অনুপ্রেরণামূলক এবং বিশ্বমানের হোক।”
তিনি আরও যোগ করেন, “সরকার টুর্নামেন্ট সফল করার জন্য আয়োজক, ক্রীড়াবিদ এবং অংশীদারদের প্রতি পূর্ণ সহায়তা প্রদান করছে। আশা করি এই বিশ্বকাপ ক্রীড়াপ্রেমীদের জন্য একটি স্মরণীয় অভিজ্ঞতা হবে।”
টুর্নামেন্টের সময়সূচি ও স্থান
দ্বিতীয় মহিলা কাবাডি বিশ্বকাপ-২০২৫ ১৭ থেকে ২৪ নভেম্বর পর্যন্ত ঢাকার শহীদ সোহরাওয়ার্দী ইনডোর স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হবে। প্রতিযোগিতা চলাকালীন, দর্শকরা তীব্র এক্সাইটমেন্ট, দ্রুত গতির খেলা এবং আন্তর্জাতিক ক্রীড়াবিদদের দারুণ প্রতিভা দেখার সুযোগ পাবেন।
অংশগ্রহণকারী দেশসমূহ
এই বিশ্বকাপে মোট ১০টি দেশ অংশগ্রহণ করবে। অংশগ্রহণকারী দেশগুলো হলো:
- বাংলাদেশ
- চাইনিজ তাইপে
- জার্মানি
- ইরান
- ভারত
- কেনিয়া
- নেপাল
- পোল্যান্ড
- থাইল্যান্ড
- উগান্ডা এবং জাঞ্জিবার
বাংলাদেশ কাবাডি ফেডারেশন নিশ্চিত করেছে যে, প্রস্তুতি পুরোদমে চলছে। নিরাপত্তা, সরবরাহ, দলের থাকা-খাওয়া এবং দর্শক সুবিধার জন্য বিস্তারিত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
নারী ক্রীড়াবিদদের প্রতি সরকারের মনোযোগ
অনুষ্ঠানে ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজিব ভূঁইয়া বলেন, “সরকার সক্রিয়ভাবে নারী ক্রীড়াবিদদের সমর্থন করছে। আমরা চাই প্রতিযোগিতামূলক খেলা নারীদের জন্য উন্মুক্ত হোক এবং আন্তর্জাতিক স্তরে তারা নিজেদের দক্ষতা প্রদর্শন করতে পারে।”
তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশের নারী ক্রীড়াবিদরা আন্তর্জাতিক মঞ্চে ধারাবাহিকভাবে তাদের প্রতিভা প্রমাণ করছে। সরকার তাদের সর্বোচ্চ সহায়তা প্রদান করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তাদের সাফল্য আমাদের জাতীয় গর্ব এবং পরবর্তী প্রজন্মের জন্য শক্তিশালী অনুপ্রেরণা।”
টুর্নামেন্টের গুরুত্ব
দ্বিতীয় মহিলা কাবাডি বিশ্বকাপ-২০২৫ শুধু খেলাধুলার প্রতিযোগিতা নয়। এটি নারীর ক্ষমতায়ন, আন্তর্জাতিক বন্ধুত্ব এবং ক্রীড়া কূটনীতির এক গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্ম। বিশ্বকাপ চলাকালীন বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং ক্রীড়া ওয়ার্কশপও অনুষ্ঠিত হবে, যা খেলাধুলার পাশাপাশি অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে সাংস্কৃতিক বিনিময় নিশ্চিত করবে।
বিশ্বকাপের মাধ্যমে অংশগ্রহণকারী দেশের ক্রীড়াবিদরা বিশ্বমানের প্রতিযোগিতা, দলবদ্ধ কৌশল, এবং সাহসিক খেলা প্রদর্শন করবে। বিশেষ করে বাংলাদেশের কাবাডি দল আন্তর্জাতিক স্তরে নিজেদের ক্ষমতা প্রমাণ করার সুযোগ পাবে।
প্রস্তুতি ও নিরাপত্তা
বাংলাদেশ কাবাডি ফেডারেশন ও সরকার নিশ্চিত করেছে যে, সব ধরনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। খেলাধুলার সরঞ্জাম, প্রশিক্ষণ, মেডিকেল সাপোর্ট, নিরাপত্তা ব্যবস্থা এবং দর্শকদের জন্য আসন ও সেবা নিশ্চিত করা হয়েছে।
টুর্নামেন্ট চলাকালীন, বিশেষভাবে স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা প্রটোকল মেনে চলা হবে। এছাড়াও, আন্তর্জাতিক ক্রীড়া প্রতিনিধি এবং মিডিয়া সম্প্রচারকেও পূর্ণ সাপোর্ট প্রদান করা হবে।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
এই টুর্নামেন্ট বাংলাদেশের জন্য কেবল ক্রীড়া উন্নয়ন নয়, বরং আন্তর্জাতিক ক্রীড়া পর্যটন ও সংস্কৃতি বিনিময়ের ক্ষেত্রেও একটি বড় অর্জন। প্রধানমন্ত্রী এবং ক্রীড়া মন্ত্রণালয় আশা করছেন, এই বিশ্বকাপ ক্রীড়া এবং নারী ক্ষমতায়নের ক্ষেত্রে নতুন দিগন্ত খুলবে।
সাফল্য ও অনুপ্রেরণা
নারী ক্রীড়াবিদদের এই সাফল্য বাংলাদেশের ক্রীড়া ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হিসেবে বিবেচিত হবে। এটি পরবর্তী প্রজন্মের ক্রীড়াবিদদের জন্য একটি প্রেরণার উৎস। বিশেষ করে কাবাডি খেলার প্রতি আগ্রহ বৃদ্ধি পাবে এবং নারীরা আন্তর্জাতিক স্তরে নিজেদের পরিচয় স্থাপন করবে।
MAH – 13835 I Signalbd.com



