আঞ্চলিক

বরিশালে হাফ ভাড়া নিয়ে শিক্ষার্থী-পরিবহন শ্রমিকদের সংঘর্ষ, আহত অন্তত ৬০

Advertisement

বরিশালের নথুল্লাবাদ বাস স্ট্যান্ডে হাফ ভাড়া দেওয়াকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থী ও পরিবহন শ্রমিকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় অন্তত ৬০ জন আহত হয়েছেন।

বরিশালে হাফ ভাড়া দেওয়াকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থী এবং পরিবহন শ্রমিকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। শনিবার সন্ধ্যার পর নথুল্লাবাদ বাস স্ট্যান্ডে ঘটে এই ঘটনা। সংঘর্ষ চলাকালে বাস ভাঙচুর, সড়কে অগ্নিসংযোগ এবং দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।

সংঘর্ষের বিস্তারিত

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বরিশাল বিএম কলেজের কয়েকজন শিক্ষার্থী মুলাদী থেকে বাসে বরিশাল আসার সময় হাফ ভাড়া দিতে চেয়েছিলেন। শিক্ষার্থীদের দাবি অনুযায়ী, সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী শনিবারেও শিক্ষার্থীদের হাফ ভাড়া পাওয়ার অধিকার রয়েছে। তবে পরিবহন শ্রমিকরা হাফ ভাড়া না নেওয়ায় শিক্ষার্থীরা বাধার মুখে পড়ে।

এই ঘটনার জের ধরে শিক্ষার্থীরা নথুল্লাবাদ স্ট্যান্ডে জড়ো হন। ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার এক পর্যায়ে অন্তত ৬০ জন শিক্ষার্থী আহত হন। শিক্ষার্থীরা বাস ভাঙচুর এবং রাস্তা অবরোধের মতো বিক্ষোভ দেখান।

বরিশালে হাফ ভাড়া নিয়ে সংঘর্ষের ঘটনা নতুন নয়। কয়েক বছর ধরে শিক্ষার্থীরা সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী অর্ধভাড়া পাবার অধিকার দাবি করে আসছে। তবে শনিবারের ঘটনার প্রধান কারণ ছিল সরকারি ছুটি বাদে হাফ ভাড়া না নেওয়া। শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেছেন, প্রথমে এক শিক্ষার্থীকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা হয়, যা এই সংঘর্ষের সূত্রপাত হিসেবে কাজ করে।

পরিবহন শ্রমিকরা যদিও দাবি করেছেন, কলেজ বন্ধের দিন হাফ ভাড়া দেওয়ার কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। তবে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ধাপ্পাবাজি এবং বাগবিতণ্ডার কারণে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।

প্রভাব এবং প্রতিক্রিয়া

ঘটনার ফলে বরিশাল থেকে কুয়াকাটা রুটসহ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ রুটে যান চলাচল বন্ধ ছিল। শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ চলাকালে কয়েকটি বাস ভাঙচুর এবং টায়ার জ্বালিয়ে রাস্তা অবরোধ করেছিলেন। তবে জরুরি প্রয়োজনীয় যানবাহন যেমন রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্স ছাড়পত্র পেয়েছিল।

বিএম কলেজের শিক্ষার্থীরা বলেছে, তাদের অন্যায়ভাবে মারধর করা হয়েছে। শিক্ষার্থীরা আরও দাবি করেছেন, এই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধ করতে প্রশাসনের কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।

পরিবহন শ্রমিক নেতারা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাদের মতে, কলেজ বন্ধের দিনও শিক্ষার্থীরা হাফ ভাড়া পাবে না এবং শনিবারের ঘটনায় শিক্ষার্থীর সঙ্গে বিরোধের জেরেই সংঘর্ষের সূচনা হয়।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পদক্ষেপ

বরিশাল এয়ারপোর্ট থানার ওসি মামুন উল ইসলাম জানান, সংঘর্ষ চলাকালে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দ্রুত ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। পুলিশের প্রচেষ্টায় রাত ৯টার দিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। তবে তিনি আরও জানিয়েছেন, ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত এবং আহতদের বিষয়ে বিস্তারিত পরে জানানো সম্ভব হবে।

মতামত

শিক্ষার্থীদের অধিকার এবং শ্রমিকদের নীতিমালা সংক্রান্ত বিষয়গুলো সমাধানের জন্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দীর্ঘমেয়াদী সমাধান দরকার। শিক্ষার্থীরা নিয়মিত হাফ ভাড়া পাবার অধিকার নিশ্চিত করতে চায়, যেখানে শ্রমিকদেরও তাদের নিয়মিত আয় এবং সরকারি নীতিমালার মধ্যে সামঞ্জস্য রাখতে হবে।

বিশেষজ্ঞরা আরও মনে করছেন, শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ এবং পরিবহন শ্রমিকদের নিয়মাবলী মেনে চলার মধ্যে সমঝোতার মাধ্যমে এই ধরনের সংঘর্ষ রোধ করা সম্ভব।

বরিশালে হাফ ভাড়া নিয়ে সংঘর্ষ শিক্ষার্থীদের অধিকার এবং পরিবহন নীতিমালার মধ্যে চলমান বিরোধের প্রতিফলন। ঘটনাটি শিক্ষার্থীদের অধিকার, পরিবহন শ্রমিকদের নীতি এবং স্থানীয় প্রশাসনের কার্যক্রমের মধ্যে সমন্বয়হীনতার ফলাফল।

বিশ্লেষকদের মতে, এই ধরনের ঘটনা পুনরায় ঘটবে না তা নিশ্চিত করতে প্রশাসন ও স্থানীয় কমিউনিটি লিডারদের দ্রুত সমাধানমূলক পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।

এম আর এম – ২২৪৬,Signalbd.com

মন্তব্য করুন
Advertisement

Related Articles

Back to top button