রাজধানীর তেজগাঁও রেলস্টেশন এলাকায় বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় দুইজনকে আটক করেছে রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী (আরএনবি)। পুলিশ ও রেলওয়ে কর্মকর্তারা নিশ্চিত করেছেন, আগুনটি পরিত্যক্ত রেললাইনে ধরানো হয়েছিল।
ঘটনার বিস্তারিত
ঢাকা রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জয়নাল আবেদীন জানিয়েছেন, “তেজগাঁওয়ে ট্রেন চলাচল না করা পরিত্যক্ত রেললাইনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। আমরা দুইজনকে হাতেনাতে আটক করেছি। ঘটনাস্থল থেকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে।”
রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী প্রাথমিকভাবে জানিয়েছেন, আটক দুইজন ব্যক্তি স্থানীয়দের কাছে ‘টোকাই’ নামে পরিচিত। তাদের কী কারণে আগুন ধরিয়েছে, তা তদন্ত করা হচ্ছে। পুলিশের ধারণা, শীত নিবারণের জন্য বা অন্য কোনো অজানা কারণে আগুন ধরানো হতে পারে।
ঢাকার বিভিন্ন রেলস্টেশনের পরিত্যক্ত রেললাইন ও বগি প্রায়ই অনিয়ন্ত্রিত থাকে। এই এলাকাগুলোতে আগুন ধরানোর ঘটনা মাঝে মাঝে ঘটছে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে এমন ঘটনা কমে এসেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি নিরাপত্তা ব্যবস্থার অমনোযোগের পাশাপাশি স্থানীয়দের অসচেতনতার ফলও হতে পারে।
পূর্ববর্তী কয়েকটি ঘটনার তুলনায়, ঘটনা দ্রুত রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী ও থানা পুলিশের সক্রিয় পদক্ষেপের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছে। এ ধরনের অগ্নিকাণ্ড, বিশেষ করে জনবসতি এলাকার কাছে ঘটলে বড় ধরনের ঝুঁকি সৃষ্টি করতে পারে।
প্রভাব ও প্রতিক্রিয়া
এ ধরনের ঘটনার সরাসরি প্রভাব পড়ে স্থানীয় রেল পরিবহন এবং আশপাশের এলাকায়। যদিও পরিত্যক্ত রেললাইনে আগুন লেগেছে, তবুও সক্রিয় লাইনে ট্রেন চলাচলে কোনো বিঘ্ন ঘটেনি। তবে স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে।
রেলওয়ে থানার কর্মকর্তারা সতর্ক করে জানিয়েছেন, এ ধরনের ঘটনা পুনরায় ঘটলে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। নিরাপত্তা বাহিনী এলাকায় পর্যাপ্ত তল্লাশি চালাবে এবং জনসাধারণের সচেতনতা বৃদ্ধি করবে।
তদন্ত প্রক্রিয়া
ঢাকা রেলওয়ে থানার পুলিশ ও আরএনবি যৌথভাবে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। আটক দুইজনের থেকে বিস্তারিত জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। পাশাপাশি CCTV ফুটেজ, স্থানীয়দের বিবৃতি এবং আগুনের উৎস পরীক্ষা করা হচ্ছে।
ওসি জয়নাল আবেদীন বলেন, “আমরা ঘটনা সম্পর্কে সকল প্রমাণ সংগ্রহের চেষ্টা করছি। হত্যাকাণ্ড বা প্ররোচনার কোনো দিক আছে কিনা, সেটিও খতিয়ে দেখা হবে।”
মতামত
সিভিল সেফটি বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, পরিত্যক্ত রেললাইনের নিরাপত্তা বৃদ্ধিই একমাত্র দীর্ঘমেয়াদী সমাধান। তারা বলেন, “শহরের মাঝে এমন অব্যবহৃত এলাকা আগুন ও দুর্ঘটনার ঝুঁকি বহন করে। নিয়মিত তল্লাশি ও সচেতনতা কার্যক্রম প্রয়োজন।”
এছাড়া, স্থানীয় নাগরিকরা আশা প্রকাশ করেছেন, রেলওয়ে প্রশাসন ও পুলিশ আরও সক্রিয় হয়ে এ ধরনের ঘটনা প্রতিরোধ করবে।
আইনগত পদক্ষেপ
রেলওয়ে পুলিশ জানিয়েছে, আটক দুইজনের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। প্রাথমিকভাবে তাদের বিরুদ্ধে অগ্নিকাণ্ড ও জনশান্তি বিঘ্নিত করার অভিযোগ আনা হতে পারে। আইন প্রয়োগকারী সংস্থা নিশ্চিত করেছে, তদন্ত শেষে যথাযথ মামলা দায়ের করা হবে।
তেজগাঁওয়ে পরিত্যক্ত রেললাইনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় দুইজনকে আটক করা হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে দেখা গেছে, আগুনটি স্থানীয়দের হাতে ধরা হয়েছে। পুলিশ ও রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী দ্রুত ঘটনার স্থানে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। আইনানুগ পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে এবং স্থানীয়দের সচেতনতা বৃদ্ধির ওপর গুরুত্ব দেওয়া হবে।
এম আর এম – ২২১৭,Signalbd.com



