জুলাইয়ের ছাত্র–জনতার আন্দোলনে সংঘটিত হামলা ও নিপীড়নের পূর্ণাঙ্গ তদন্ত না হওয়ার কারণে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দেশের সব কমিটি পুনর্গঠন ও কার্যক্রম পুনরায় চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে সব কমিটি পুনরায় গঠন করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
আন্দোলনের পুনরায় সূচনা
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দেশের বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ, জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ের সব কমিটির কার্যক্রম পুনরায় চালু করেছে। রবিবার (২ নভেম্বর) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে সংগঠনের সভাপতি রিফাত রশিদ এই ঘোষণা দেন। এটি দেশের শিক্ষার্থীদের মধ্যে নতুন উদ্দীপনা সৃষ্টির পাশাপাশি জুলাইয়ের আন্দোলনের হত্যাকাণ্ড ও হামলার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে গণ্য হচ্ছে।
জুলাইয়ের আন্দোলন: ঘটনার সংক্ষিপ্ত বিবরণ
২৪ জুলাই দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে ছাত্র–জনতার আন্দোলন চলাকালীন সময়ে হামলা, হত্যাকাণ্ড ও সহিংসতার ঘটনা ঘটেছিল। আন্দোলনে অংশ নেওয়া ছাত্র ও কর্মীদের উপর শারীরিক ও মানসিক নিপীড়ন চালানো হয়। সেই সময়ে কিছু স্থানীয় প্রশাসনিক কর্মকাণ্ডের কারণে আহত ও নিহতদের পরিবার ন্যায্য বিচার না পাওয়ায় ক্ষোভ দিন দিন বাড়তে থাকে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন অভিযোগ করেছে যে, সরকারি আশ্বাস সত্ত্বেও নিহত ছাত্রদের পরিবার ও আহতদের পূর্ণাঙ্গ বিচার এখনও সম্পন্ন হয়নি। পাশাপাশি আন্দোলনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের উপর বিভিন্ন স্থানে হামলার অভিযোগও উঠে।
সমস্ত কমিটি পুনর্গঠন ও কার্যক্রম পুনরায় চালু
সংগঠনের সভাপতি রিফাত রশিদ বলেন, “ভবিষ্যতে এ ধরনের হামলা ও বৈষম্যমূলক আচরণ প্রতিরোধ করতে দেশের সব কমিটি পুনর্গঠন ও সক্রিয় করা হয়েছে। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে এই কাজ সম্পন্ন করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।”
এতে দেশের প্রতিটি শিক্ষার্থীকে আন্দোলনের মূল উদ্দেশ্য ও নীতির সঙ্গে যুক্ত করে একটি শক্তিশালী সংগঠন গঠনের চেষ্টা করা হচ্ছে।
অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক প্রতিক্রিয়া
পুনর্গঠনের ঘোষণার পর শিক্ষার্থী ও বিভিন্ন স্বতন্ত্র রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। তারা মনে করছেন, এটি দেশের শিক্ষার্থীদের মধ্যে একতা ও সচেতনতা বাড়াবে। অন্যদিকে, কিছু ক্ষেত্রে আন্দোলন বন্ধ করার চেষ্টা চলমান থাকায় পুনর্গঠন প্রক্রিয়ায় প্রশাসনিক সহযোগিতা জরুরি।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন মনে করে, জুলাইয়ের ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত না হওয়া শিক্ষার্থী আন্দোলনের প্রতি ন্যায়বিচারের ব্যর্থতা হিসেবে ধরা যায়। সংগঠনটি দাবি করেছে, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার ও আহতদের সঠিক ও পূর্ণাঙ্গ ন্যায় নিশ্চিত করা হলে একই ধরনের ঘটনা ভবিষ্যতে প্রতিরোধ করা সম্ভব।
দেশজুড়ে কার্যক্রমের সম্প্রসারণ
সংগঠনটি দেশের বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ, জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে সমস্ত কমিটিকে পুনর্গঠন করছে। এতে ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি পাবে, বৈষম্য ও নির্যাতন প্রতিরোধে সক্রিয় ভূমিকা পালন সম্ভব হবে। রিফাত রশিদ বলেন, “সব কমিটি পুনর্গঠনের মাধ্যমে আমরা এক সমন্বিত আন্দোলন গড়ে তুলতে চাই, যা শিক্ষার্থীদের মধ্যে শক্তিশালী নৈতিক ও সামাজিক মূল্যবোধ তৈরি করবে।”
ভবিষ্যতের লক্ষ্য
সংগঠনটি ভবিষ্যতে এমন পরিস্থিতি প্রতিরোধ করতে কার্যকরী পরিকল্পনা গ্রহণ করবে। পুনর্গঠন করা কমিটিগুলি এখন থেকে নিয়মিত সভা, সচেতনতা কর্মসূচি এবং স্থানীয় পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে তথ্য ও ন্যায়বিচারের প্রসার ঘটাবে। এটি শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা ও সাংগঠনিক কার্যক্রমকে শক্তিশালী করবে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এই পদক্ষেপ দেশের শিক্ষার্থীদের মধ্যে নতুন উদ্দীপনা ও সংহতি তৈরি করবে। জুলাইয়ের আন্দোলনের প্রাপ্ত শিক্ষা ও পুনর্গঠন করা কমিটি আগামী দিনে শিক্ষার্থীদের জন্য একটি শক্তিশালী, সচেতন ও ন্যায়পরায়ণ আন্দোলনের পথ প্রস্তুত করবে।
এম আর এম – ২০৫০,Signalbd.com



