রাজনীতি

পরিকল্পিতভাবে বলা হচ্ছে বিএনপি সংস্কার চায় না: মির্জা ফখরুল

Advertisement

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, পরিকল্পিতভাবে বলা হচ্ছে বিএনপি সংস্কার চায় না। বাস্তবে বিএনপি সবার আগে সংস্কার চেয়েছে এবং আধুনিক বাংলাদেশ গড়ে তোলায় অগ্রণী ভূমিকা রাখতে প্রস্তুত। তিনি দলের নেতাকর্মীদের ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে আরও সক্রিয় হওয়ার আহ্বান জানান।

বিএনপি সংস্কার ও ডিজিটাল অগ্রগতি

রোববার (২ নভেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর গুলশানে একটি হোটেলে অনলাইন পেমেন্ট গেটওয়ে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল। এই সময় তিনি জানান, বিএনপির সংস্কারপ্রিয় ভূমিকা নিয়ে পরিকল্পিতভাবে বিভ্রান্তিকর প্রচারণা চালানো হচ্ছে। তিনি দলের নেতাকর্মীদের ডিজিটাল মিডিয়ায় সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করার আহ্বান জানান, কারণ বর্তমান রাজনৈতিক লড়াই এখন মূলত সাইবার জগতে সংঘটিত হচ্ছে।

পরিকল্পিত অভিযোগের বিরুদ্ধে বিএনপির অবস্থান

মির্জা ফখরুল বলেন, “পরিকল্পিতভাবে বলা হচ্ছে বিএনপি সংস্কার চায় না, অথচ বাস্তবে বিএনপি সর্বপ্রথম সংস্কারের দাবি তুলেছে। আমাদের লক্ষ্য আধুনিক ও গতিশীল বাংলাদেশ গড়ে তোলা।”
তিনি আরও বলেন, অনেক সময় নেতৃবৃন্দের সামাজিক মাধ্যমে দেওয়া স্ট্যাটাসের যথাযথ প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায় না। তিনি বলেন, “যদি আমরা আমাদের বক্তব্যের প্রতি যথাযথ লাইক, কমেন্ট এবং শেয়ার করি, তাহলে সেই তথ্য জনগণ ও দলের মধ্যে দ্রুত ছড়িয়ে পড়বে। বর্তমান যুদ্ধ এখন সাইবার বিশ্বে।”

ডিজিটাল অগ্রগতিতে বিএনপির চ্যালেঞ্জ

মির্জা ফখরুল বলেন, নতুন প্রযুক্তিতে আমাদের জেনারেশন কিছুটা পিছিয়ে আছে। “আমাদের দলের নেতাকর্মীরা এখন ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে আরও সক্রিয় হতে হবে। এটি শুধু রাজনৈতিক প্রচার নয়, বরং জনগণের কাছে দলের সংস্কারমুখী ও আধুনিক চিত্র তুলে ধরার উপায়।”
তিনি উল্লেখ করেন যে, বক্তৃতা বা জনসভা করা এখন প্রধান কাজ নয়। বরং ডিজিটাল মাধ্যমে কার্যকরভাবে দল ও সরকারের নীতির সমালোচনা এবং সংস্কারের দাবির প্রচার গুরুত্বপূর্ণ।

বিএনপির সংস্কারমূলক প্রচেষ্টা

মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপি নতুন প্রজন্মের নেতৃত্বকে প্রযুক্তি এবং সামাজিক মিডিয়ার মাধ্যমে জনগণের সঙ্গে যুক্ত করার জন্য নিরলস কাজ করছে। তিনি দলের নেতাদের প্রতি নির্দেশ দেন, স্ট্যাটাস, পোস্ট বা ভিডিওর মাধ্যমে জনগণের কাছে নির্ভরযোগ্য তথ্য পৌঁছে দিতে হবে।
তিনি জানান, দলের সংস্কারমূলক প্রক্রিয়ায় সবাইকে অংশগ্রহণ করতে হবে এবং পরিকল্পিত ভুল ধারণা প্রতিহত করতে হবে।

সাইবার লড়াইয়ে গুরুত্ব

মির্জা ফখরুল বলেন, বর্তমান রাজনৈতিক যুদ্ধ শুধুমাত্র রাস্তায় বা জনসভায় নয়; এটি এখন সাইবার জগতে সংঘটিত হচ্ছে। “যে ব্যক্তি সামাজিক মাধ্যমে সক্রিয়, সে সমাজে দ্রুত পরিবর্তন আনার জন্য সবচেয়ে বড় ভূমিকা পালন করতে পারে। তাই আমাদের সবাইকে ডিজিটাল ক্ষেত্রে আরও শক্তিশালী হতে হবে।”
তিনি বলেন, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান যে তথ্য বা বক্তব্য প্রকাশ করেন, তা যথাযথভাবে সমর্থন ও প্রচার করা প্রয়োজন। এটি বিএনপির ভাবমূর্তি ও সংস্কার প্রচেষ্টাকে শক্তিশালী করবে।

নেতৃবৃন্দ ও কর্মীদের দায়িত্ব

মির্জা ফখরুল দলের নেতৃবৃন্দ ও কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান, তারা যেন ডিজিটাল মিডিয়ায় আরও সক্রিয় হয়ে দলের সংস্কারমুখী প্রচেষ্টা জনগণের কাছে তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “এটি শুধু রাজনৈতিক কৌশল নয়, এটি আধুনিক ও শিক্ষিত সমাজ গঠনের জন্য একটি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ।”

বাংলাদেশে আধুনিকতা ও নেতৃত্বের দৃষ্টি

মির্জা ফখরুল মনে করেন, বিএনপি দেশের আধুনিকীকরণে অগ্রণী ভূমিকা রাখতে সক্ষম। তিনি বলেন, “আমরা চাই নতুন প্রজন্ম প্রযুক্তি ব্যবহার করে দেশের উন্নয়নে সরাসরি অংশ নিক। বিএনপির নেতৃত্বে এটি সম্ভব।”
তিনি আরও বলেন, দলের অভ্যন্তরে সংস্কার এবং আধুনিকীকরণ নিয়ে যে পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে, তা জনগণের কাছে তুলে ধরার জন্য ডিজিটাল মিডিয়ার সর্বোচ্চ ব্যবহার জরুরি।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্য স্পষ্টভাবে দেখায় যে বিএনপি সংস্কারের জন্য সক্রিয় এবং পরিকল্পিতভাবে বিভ্রান্তিকর প্রচারণার বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থানে রয়েছে। ডিজিটাল প্রযুক্তি ও সামাজিক মাধ্যমের মাধ্যমে দলের সংস্কারমূলক প্রচেষ্টা আরও দৃঢ় হবে। ভবিষ্যতে বিএনপি আধুনিক বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্য অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে সক্ষম হতে পারে।

এম আর এম – ২০৪৯,Signalbd.com

মন্তব্য করুন
Advertisement

Related Articles

Back to top button