আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে অনুষ্ঠিতব্য ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ৯৪ হাজার সামরিক সদস্যকে মোতায়েন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে তিন বাহিনীর প্রধানদের বৈঠকে এ বিষয়টি চূড়ান্তভাবে নির্ধারিত হয়।
বৈঠকে সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান, নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল এম নাজমুল হাসান এবং বিমানবাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খান উপস্থিত ছিলেন। জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমানও বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন। প্রধান উপদেষ্টা বৈঠকে নির্বাচনের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিত করার জন্য তিন বাহিনীর প্রধানদের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করেন।
মোতায়েনের বিস্তারিত
নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য ৯৪ হাজার সদস্যকে মাঠে নামানো হবে। এর মধ্যে:
- সেনাবাহিনী: ৯০,০০০ সদস্য
- নৌবাহিনী: ২,৫০০ সদস্য
- বিমানবাহিনী: ১,৫০০ সদস্য
প্রতিটি উপজেলায় এক কোম্পানি সেনা মোতায়েন থাকবে। এর মাধ্যমে প্রত্যেক উপজেলা নির্বাচনী কেন্দ্র এবং সংলগ্ন এলাকায় কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হবে।
বৈঠকের মূল বিষয়বস্তু
বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সামরিক বাহিনীর কঠোর পরিশ্রম প্রশংসনীয়। বিশেষ করে গত ১৫ মাসে সেনা ও অন্যান্য বাহিনী দেশের শান্তি বজায় রাখতে কঠোর পরিশ্রম করেছে। তিনি বলেন, “ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ এবং উৎসবমুখর হবে।”
তিন বাহিনীর প্রধানরা প্রধান উপদেষ্টাকে নির্বাচনের জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়ার বিষয়ে বিস্তারিত অবহিত করেন। এতে নিরাপত্তা, বাহিনী মোতায়েন, মনিটরিং সিস্টেম এবং জরুরি পরিস্থিতি মোকাবেলার পরিকল্পনা অন্তর্ভুক্ত ছিল।
নির্বাচনের প্রভাব
এই পদক্ষেপ নির্বাচন প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে। স্থানীয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বাহিনীর সহায়তায় নির্বাচন পরিচালনায় আরো দক্ষ হবে। প্রতিটি উপজেলায় সেনা মোতায়েন ভোটারদের শান্তিপূর্ণভাবে ভোটাধিকারের নিশ্চয়তা দেবে এবং কোনো অঘটন বা বিশৃঙ্খলা রোধ করবে।
পূর্বপটভূমি
বাংলাদেশে নির্বাচনের সময় সামরিক বাহিনী মোতায়েনের প্রচলন রয়েছে। এর আগে নির্বাচনে সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনী প্রায় একই রকম পরিকল্পনা অনুসরণ করে নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। গত নির্বাচনে সেনা ও পুলিশ মিলিয়ে প্রায় ৮৫ হাজার সদস্য নির্বাচনী এলাকায় মোতায়েন হয়েছিল। বর্তমান পরিকল্পনা তার তুলনায় কিছুটা বর্ধিত।
বিশেষজ্ঞ ও বিশ্লেষক মতামত
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, নিরাপত্তা শক্তিশালী থাকলে নির্বাচন শান্তিপূর্ণ ও অবাধভাবে অনুষ্ঠিত হতে পারে। বিশেষ করে প্রত্যন্ত অঞ্চলে বাহিনী মোতায়েন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রস্তুতি ও সঠিক কৌশল প্রয়োগ নির্বাচনের স্বচ্ছতা বাড়াবে।
পরিসংখ্যান
- মোট সেনা সদস্য: ৯০,০০০
- নৌবাহিনী: ২,৫০০
- বিমানবাহিনী: ১,৫০০
- প্রতিটি উপজেলায় সেনা কোম্পানি: ১টি
এই বিশদ পরিকল্পনার মাধ্যমে নির্বাচনকালীন নিরাপত্তা বজায় রাখতে সমন্বিত প্রয়াস চালানো হবে।
সমাপনী মন্তব্য
প্রধান উপদেষ্টা ও তিন বাহিনীর প্রধানদের বৈঠক বাংলাদেশের আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। বিশ্লেষকরা মনে করেন, এই ধরনের প্রস্তুতি নির্বাচনে নাগরিকদের অংশগ্রহণ বাড়াবে এবং শান্তিপূর্ণ ভোটের পরিবেশ নিশ্চিত করবে।
এম আর এম – ২০৪০,Signalbd.com



