বানিজ্য

স্বর্ণের ভরিতে কমলো ৩৬৭৪ টাকা, দাম কত?

Advertisement

দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম আবারও হ্রাস করেছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)। নতুন সমন্বয়ের ফলে ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম কমিয়ে নির্ধারণ করা হয়েছে ২ লাখ ৪ হাজার ২৮৩ টাকা। এটি আগের দামের থেকে ৩ হাজার ৬৭৪ টাকা কম। নতুন এই দাম মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) থেকে কার্যকর হবে।

বাজুসের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, স্থানীয় বাজারে তেজাবি স্বর্ণের (পিওর গোল্ড) মূল্যের পতনকে বিবেচনা করে নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। সমন্বয়কালে সরকার-নির্ধারিত ৫ শতাংশ ভ্যাট এবং বাজুস-নির্ধারিত ন্যূনতম ৬ শতাংশ মজুরি স্বর্ণের বিক্রয় মূল্যে যুক্ত থাকবে।

ভিন্ন ক্যারেট অনুযায়ী দাম

বাজুসের নতুন বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, দেশের বাজারে স্বর্ণের বিভিন্ন ক্যারেটের প্রতি ভরি দাম নিম্নরূপ নির্ধারণ করা হয়েছে:

  • ২২ ক্যারেট: ২ লাখ ৪ হাজার ২৮৩ টাকা
  • ২১ ক্যারেট: ১ লাখ ৯৪ হাজার ৯৯৯ টাকা
  • ১৮ ক্যারেট: ১ লাখ ৬৭ হাজার ১৪৫ টাকা
  • সনাতন পদ্ধতির স্বর্ণ: ১ লাখ ৩৮ হাজার ৯৪২ টাকা

এছাড়া, রুপার দামও কমানো হয়েছে। নতুন সমন্বয়ের পরে ২২ ক্যারেটের এক ভরি রুপার দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৪ হাজার ২৪৬ টাকা, যা আগের দামের থেকে ১ হাজার ২২৪ টাকা কম। অন্যান্য ক্যারেটের রুপার দামও সমন্বয় করা হয়েছে।

গত সমন্বয় ও চলতি বছরের তুলনা

এর আগে, গত ২৬ অক্টোবর বাজুস দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম সমন্বয় করেছিল। তখন ভরিতে ১ হাজার ৩৯ টাকা কমিয়ে ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ২ লাখ ৭ হাজার ৯৫৭ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল।

চলতি বছর এখন পর্যন্ত দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম মোট ৬৯ বার সমন্বয় করা হয়েছে। এর মধ্যে দাম বৃদ্ধি করা হয়েছে ৪৮ বার, আর কমানো হয়েছে ২১ বার। তুলনামূলকভাবে ২০২৪ সালে স্বর্ণের দাম সমন্বয় হয়েছিল ৬২ বার, যেখানে ৩৫ বার দাম বাড়ানো হয়েছিল এবং ২৭ বার কমানো হয়েছিল।

বাজারের পরিস্থিতি ও প্রভাব

স্থানীয় স্বর্ণবাজারে দাম কমার প্রভাব বিশেষভাবে ব্যবসায়ীদের ও সাধারণ ক্রেতাদের উপর পড়বে। বিয়ের মৌসুম বা উৎসবের সময় স্বর্ণ ক্রয় করতে ইচ্ছুক ক্রেতারা সাময়িকভাবে সাশ্রয় করতে পারবেন। তবে স্বর্ণের বাজারের অস্থিরতা ও দামের ওঠানামা ক্রেতাদের মনোভাবকে প্রভাবিত করতে পারে।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, আন্তর্জাতিক বাজারে সোনার দাম হ্রাস পাওয়াও দেশের বাজারে এই সমন্বয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ। বিশেষ করে আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ এবং বৈশ্বিক অর্থনীতির পরিস্থিতি স্বর্ণের মূল্যের ওঠানামায় প্রভাব ফেলে।

বিশেষজ্ঞদের মতামত

বাণিজ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, “সোনার দামের হ্রাস স্বল্পমেয়াদে ক্রেতাদের জন্য সুবিধাজনক। তবে দীর্ঘমেয়াদে মূল্য ওঠানামা চলতেই পারে। তাই ক্রেতাদের সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত।”

বাজুসের কর্মকর্তা জানিয়েছেন, স্বর্ণের দাম হ্রাস হলেও, গহনার ডিজাইন ও মানভেদে মূল্য ভিন্ন হতে পারে। তাই ক্রেতারা সরাসরি বাজার থেকে নিশ্চিত তথ্য নিয়ে লেনদেন করবেন।

ভবিষ্যতের দিকনির্দেশনা

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, স্বর্ণের দাম সাময়িকভাবে কমলেও আন্তর্জাতিক বাজার এবং ডলারের মান অনুযায়ী ভবিষ্যতে পুনরায় সমন্বয় হতে পারে। দেশের বাজারে স্বর্ণের চাহিদা ও সরবরাহের ভারসাম্য বজায় রাখতে বাজুস নিয়মিতভাবে দাম নির্ধারণ করে।

বাজার পর্যবেক্ষকরা আরও সতর্ক করেছেন যে, ক্রেতারা স্বল্পমেয়াদী দামের পরিবর্তনে দ্রুত সিদ্ধান্ত না নিয়ে বাজার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে লেনদেন করবেন।

নতুন সমন্বয়ের পরে দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম ৩ হাজার ৬৭৪ টাকা কমে ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ৪ হাজার ২৮৩ টাকায়। চলতি বছর স্বর্ণের দামের ওঠানামা ক্রেতা ও ব্যবসায়ীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলছে। বিশেষজ্ঞরা ভবিষ্যতে বাজার পর্যবেক্ষণ এবং আন্তর্জাতিক পরিস্থিতির ওপর নজর রাখার পরামর্শ দিয়েছেন।

এম আর এম – ১৯৭২,Signalbd.com

মন্তব্য করুন
Advertisement

Related Articles

Back to top button