বেনাপোল বন্দর দিয়ে ফল আমদানি বন্ধের আলটিমেটাম
ফল আমদানিতে অতিরিক্ত শুল্কারোপের ফলে বেনাপোল বন্দরে ধস
বেনাপোল বন্দর দিয়ে ফল আমদানিতে ধস নেমেছে সরকার কর্তৃক অতিরিক্ত শুল্কারোপের কারণে। আমদানিকারকরা সরাসরি হুঁশিয়ারি দিয়েছেন যে, এই শুল্ক প্রত্যাহার না করলে তারা ফল আমদানি পুরোপুরি বন্ধ করে দেবেন। এর ফলে দেশের অর্থনীতিতে বড় ধরনের প্রভাব পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
আয় কমে গেছে অর্ধেকেরও নিচে
বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন যেখানে প্রায় ২৫ কোটি টাকার রাজস্ব আয় হতো, সেটি নেমে এসেছে মাত্র ৫ কোটিতে। এর ফলে সরকার বড় অঙ্কের রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। বর্তমানে প্রতিদিন ৫০ থেকে ৭০ ট্রাক ফল আমদানি হতো, যা কমে দাঁড়িয়েছে ২০ থেকে ২২ ট্রাকে।
রমজানকে সামনে রেখে ব্যবসায়ীদের আশঙ্কা
পবিত্র রমজান মাসকে সামনে রেখে ফলের চাহিদা বৃদ্ধি পায়। ঠিক এই সময়েই ফলের ওপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করায় ব্যবসায়ীরা চরম বিপাকে পড়েছেন। তারা জানিয়েছেন, শুল্ক কমানো না হলে ফলের সরবরাহে ঘাটতি দেখা দেবে, যা বাজারে ফলের দাম বাড়িয়ে দেবে। ফলে সাধারণ ক্রেতাদের জন্য ফল ক্রয় করা কঠিন হয়ে দাঁড়াবে।
সরকারের শুল্ক বৃদ্ধির প্রভাব
গত ৯ জানুয়ারি সরকার তাজা ফল আমদানির উপর সম্পূরক শুল্ক ২০% থেকে বাড়িয়ে ৩০% করে। এই সিদ্ধান্তের ফলে:
- বাজারে ফলের সরবরাহ কমেছে
- বাজারে ফলের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে
- সাধারণ ক্রেতারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে
- রাজস্ব আয়ে বড় ধরনের ঘাটতি তৈরি হয়েছে
বাণিজ্যিক নেতাদের প্রতিক্রিয়া
আমদানি ও রপ্তানিকারক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জিয়াউর রহমান বলেন, “ফল আমদানিতে হঠাৎ করে সম্পূরক শুল্ক বৃদ্ধি করায় দেশের বিভিন্ন স্থলবন্দরে আমদানি কার্যক্রমে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে।” তিনি আরও জানান, ঢাকার বাদামতলী ফল ব্যবসায়ী অ্যাসোসিয়েশন আগামী ৪ ফেব্রুয়ারি থেকে ফল আমদানি পুরোপুরি বন্ধের আলটিমেটাম দিয়েছে।
কাস্টমস কর্মকর্তার মন্তব্য
বেনাপোল কাস্টমস হাউসের যুগ্ম কমিশনার সুশান্ত পাল বলেন, “গত কয়েক মাস ধরে ফলের আমদানি কমে গেছে। এর উপর আবার অতিরিক্ত শুল্কারোপ করা হয়েছে। যদি এভাবে চলতে থাকে, তাহলে দেশের বাজারে ফলের ঘাটতি এবং মূল্যবৃদ্ধি অবশ্যম্ভাবী হয়ে উঠবে।”
ভবিষ্যৎ পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ
- রাজস্ব আয়ের ক্ষতি: সরকারের রাজস্ব আয়ের উপর বড় ধরনের চাপ আসবে।
- বাজারে ফলের সংকট: চাহিদা অনুযায়ী ফলের সরবরাহ না থাকায় দাম বেড়ে যাবে।
- সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ: উচ্চ দামে ফল কেনা সাধারণ মানুষের জন্য কঠিন হয়ে পড়বে।
সমাধানের উপায়
- শুল্ক পুনর্বিবেচনা: সরকারকে শুল্ক হার পুনর্বিবেচনা করতে হবে।
- বাণিজ্যিক সংলাপ: ব্যবসায়ীদের সাথে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমাধান খুঁজতে হবে।
- রমজানকে অগ্রাধিকার: আসন্ন রমজানকে মাথায় রেখে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরি।