জাতীয়

কোর অব ইঞ্জিনিয়ার্সের কর্নেল কমান্ড্যান্ট হলেন সেনাপ্রধান

Advertisement

বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কোর অব ইঞ্জিনিয়ার্সের নবম কর্নেল কমান্ড্যান্ট হিসেবে সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানকে অভিষিক্ত করা হয়েছে। রবিবার (২৬ অক্টোবর) নাটোরের কাদিরাবাদ সেনানিবাসস্থ ইঞ্জিনিয়ার সেন্টার অ্যান্ড স্কুল অব মিলিটারি ইঞ্জিনিয়ারিং (ইসিএসএমই)-এ অনুষ্ঠিত এই অভিষেক অনুষ্ঠান ও বার্ষিক অধিনায়ক সম্মেলন-২০২৫-এ প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সেনাবাহিনী প্রধান।

অনুষ্ঠানে সেনাবাহিনী প্রধানকে স্বাগত জানান জিওসি, আর্মি ট্রেনিং অ্যান্ড ডকট্রিন কমান্ড; সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ার-ইন-চিফ এবং কমান্ড্যান্ট, ইসিএসএমই। পরবর্তীতে সেনাপ্রধান কোর অব ইঞ্জিনিয়ার্সের নবম কর্নেল কমান্ড্যান্ট হিসেবে অভিষিক্ত হন।

সেনাপ্রধানের বক্তব্য: দেশগঠনে কোর অব ইঞ্জিনিয়ার্সের ভূমিকা

অভিষেক অনুষ্ঠানে সেনাবাহিনী প্রধান তাঁর বক্তব্যে বলেন, “কোর অব ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশের সেনাবাহিনীর একটি গৌরবময় কোর। স্বাধীনতা সংগ্রামে এই কোরের সেনানীরা অকাতরে জীবন দিয়েছেন। তাঁদের আত্মত্যাগ আমাদের অনুপ্রেরণা।” তিনি আরও বলেন, “কোর অব ইঞ্জিনিয়ার্সের প্রযুক্তিগত উন্নয়ন, গবেষণা, পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধি ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সেনাবাহিনীর সক্ষমতাকে আরও শক্তিশালী করছে। সততা, সত্যনিষ্ঠা ও কর্তব্যবোধে ব্রতী হয়ে উন্নয়নমূলক কার্যক্রমের মাধ্যমে কোর ভবিষ্যতেও দেশের সেবায় অগ্রণী ভূমিকা রাখবে।”

বার্ষিক অধিনায়ক সম্মেলনে মতবিনিময়

অভিষেক অনুষ্ঠানের পরপরই অনুষ্ঠিত হয় বার্ষিক অধিনায়ক সম্মেলন-২০২৫। এতে কোর অব ইঞ্জিনিয়ার্সের অধিনায়ক ও অন্যান্য কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন। সেনাপ্রধান সম্মেলনে কোরের প্রযুক্তিগত উন্নয়ন, গবেষণা, পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধি ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা বিষয়ে আলোচনা করেন। তিনি বলেন, “কোর অব ইঞ্জিনিয়ার্সের দক্ষতা ও পেশাগত উৎকর্ষতা সেনাবাহিনীর সামগ্রিক সক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে।”

অনুষ্ঠানে উপস্থিত অন্যান্য ব্যক্তিবর্গ

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন:

  • জিওসি, আর্মি ট্রেনিং অ্যান্ড ডকট্রিন কমান্ড
  • মহাপরিচালক, বিআইআইএসএস
  • চিফ কনসালটেন্ট জেনারেল, অ্যাডহক কনস্ট্রাকশন সুপারভিশন কনসালটেন্ট
  • ইঞ্জিনিয়ার-ইন-চিফ
  • অ্যাডজুট্যান্ট জেনারেল
  • জিওসি ১১ পদাতিক ডিভিশন ও এরিয়া কমান্ডার, বগুড়া এরিয়া
  • সেনাসদরের ঊর্ধ্বতন সামরিক কর্মকর্তাবৃন্দ
  • কমান্ড্যান্ট, ইসিএসএমই
  • বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সকল ইঞ্জিনিয়ার ব্রিগেডের কমান্ডারবৃন্দ
  • ইঞ্জিনিয়ার ইউনিটসমূহের অধিনায়কবৃন্দ
  • গণমাধ্যমের প্রতিনিধিগণ

সেনাপ্রধানের সামরিক জীবন ও অভিজ্ঞতা

জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান ১৯৮৫ সালে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে কমিশন লাভ করেন। তিনি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেছেন, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো:

  • ৪৬ স্বতন্ত্র পদাতিক ব্রিগেডের কমান্ডার
  • নবম পদাতিক ডিভিশনের জিওসি
  • সাভার এরিয়া কমান্ডার
  • সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার

জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে এংগোলাতে মিলিটারি অবজার্ভার এবং লাইবেরিয়াতে সিনিয়র অপারেশন অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তাঁর সামরিক জীবনে অসামান্য সেবা ও নেতৃত্বের জন্য তিনি বিভিন্ন পদকে ভূষিত হয়েছেন, যার মধ্যে “অসামান্য সেবা পদক” (ওএসপি) এবং “সেনা গৌরব পদক” (এসজিপি) উল্লেখযোগ্য।

কোর অব ইঞ্জিনিয়ার্সের ভূমিকা ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা

কোর অব ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশের সেনাবাহিনীর একটি গুরুত্বপূর্ণ শাখা। স্বাধীনতা সংগ্রামে এই কোরের অবদান অনস্বীকার্য। যুদ্ধকালীন সময়ে সেতু নির্মাণ, রাস্তা সংস্কার, শিবির স্থাপনসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কাজ তারা দক্ষতার সঙ্গে সম্পন্ন করেছে। বর্তমানে, এই কোর দেশের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করছে। ভবিষ্যতে, কোর অব ইঞ্জিনিয়ার্সের প্রযুক্তিগত উৎকর্ষতা ও পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধি দেশের উন্নয়নে আরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

কোর অব ইঞ্জিনিয়ার্সের নবম কর্নেল কমান্ড্যান্ট হিসেবে সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের অভিষেক বাংলাদেশের সেনাবাহিনীর জন্য একটি গৌরবময় মুহূর্ত। তাঁর নেতৃত্বে কোর অব ইঞ্জিনিয়ার্স দেশের উন্নয়নে আরও অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে, এমনটি প্রত্যাশা করা হচ্ছে। সেনাপ্রধানের দৃঢ় নেতৃত্ব ও কোর অব ইঞ্জিনিয়ার্সের দক্ষতা দেশের সামরিক সক্ষমতা ও উন্নয়নকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে।

MAH – 13489 I Signalbd.com

মন্তব্য করুন
Advertisement

Related Articles

Back to top button