পিএসসিতে নতুন সদস্যের অভাবে কাজের চাপ বৃদ্ধি
বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি) বর্তমানে সদস্য সংকটের কারণে অতিরিক্ত কাজের চাপে রয়েছে। নতুন সদস্য নিয়োগে বিলম্বের ফলে কমিশনের নিয়মিত কার্যক্রমে বিঘ্ন ঘটছে এবং নতুন কার্যক্রম শুরু করতেও সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে।
সদস্য সংকটের কারণ
বর্তমানে পিএসসির চেয়ারম্যানসহ সদস্য সংখ্যা ৯ জন, যেখানে পূর্বে এই সংখ্যা ছিল ১৫। ২০২৫ সালের ২ জানুয়ারি সরকার ছয়জন নতুন সদস্য নিয়োগ দেয়। তবে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনার কারণে তাদের শপথ গ্রহণ স্থগিত করা হয়। সমালোচনার মূল কারণ ছিল, নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত কয়েকজন সদস্যের পূর্ববর্তী সরকারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক। পরবর্তীতে, জানুয়ারিতে রাষ্ট্রপতির অনুমোদনক্রমে এই নিয়োগ বাতিল করা হয়। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়, ছয় ব্যক্তির নিয়োগ বাতিলের আদেশ জনস্বার্থে জারি করা হয়েছে এবং তা অবিলম্বে কার্যকর হবে।
কাজের ওপর প্রভাব
পিএসসির সদস্যরা বিভিন্ন বিসিএস পরীক্ষার প্রধান এবং ইউনিটপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তাদের দায়িত্বের মধ্যে রয়েছে নন–ক্যাডার নিয়োগ, প্রশ্ন প্রণয়ন, মডারেশন, পরীক্ষার সময়সূচি নির্ধারণ এবং ফলাফল প্রকাশ। বর্তমানে, ৪৪তম বিসিএসের মৌখিক পরীক্ষা (ভাইভা) চলছে, যেখানে সদস্যদের প্রতিদিন বেলা ২টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত উপস্থিত থাকতে হয়। সদস্য সংখ্যা কম হওয়ায়, তারা বোর্ডে বেশি সময় ব্যয় করছেন, যা অন্যান্য কাজের গতিকে প্রভাবিত করছে। ফলে, নতুন উদ্যোগ গ্রহণেও বিলম্ব হচ্ছে।
নতুন সদস্য নিয়োগের প্রয়োজনীয়তা
পিএসসির চেয়ারম্যান মোবাশ্বের মোনেম আশা প্রকাশ করেছেন যে, সরকার দ্রুত নতুন সদস্য নিয়োগ করবে, যা কমিশনের কাজের গতি বাড়াবে। তিনি বলেন, “আশা করি, সরকার আমাদের এখানে নতুন সদস্য নিয়োগের কাজ করবে। তাতে আমাদের কাজগুলো আরও ভালোভাবে করা সম্ভব হবে।”
সদস্য নিয়োগ প্রক্রিয়া ও সাম্প্রতিক ঘটনা
২০২৪ সালের ৩১ অক্টোবর পিএসসির চার নতুন সদস্য নিয়োগ পান এবং ৬ নভেম্বর তারা শপথ গ্রহণ করেন। এর আগে, ৮ অক্টোবর পিএসসির চেয়ারম্যান মো. সোহরাব হোসাইনসহ কমিশনের ১২ সদস্য পদত্যাগ করেন। পরে, ১৫ অক্টোবর নতুন চেয়ারম্যান মোবাশ্বের মোনেম ও আট সদস্য নিয়োগ পান।
তবে, ২০২৫ সালের ২ জানুয়ারি নিয়োগপ্রাপ্ত ছয় সদস্যের শপথ গ্রহণ স্থগিত করা হয় এবং পরবর্তীতে তাদের নিয়োগ বাতিল করা হয়। এতে পিএসসির সদস্য সংখ্যা পুনরায় কমে যায়, যা কমিশনের কার্যক্রমে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।
পিএসসির সদস্য সংকটের কারণে কমিশনের নিয়মিত কার্যক্রমে বিঘ্ন ঘটছে এবং নতুন উদ্যোগ গ্রহণে বিলম্ব হচ্ছে। সরকার দ্রুত নতুন সদস্য নিয়োগের মাধ্যমে এই সংকট সমাধানে পদক্ষেপ নেবে বলে আশা করা হচ্ছে, যাতে কমিশন তার কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করতে পারে।