মালয়েশিয়ায় আসিয়ান শীর্ষ সম্মেলনে সরাসরি যোগ না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ফলে কুয়ালালামপুরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে সম্ভাব্য বৈঠক স্থগিত হলো।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি মালয়েশিয়ায় অনুষ্ঠিতব্য দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর জোট আসোসিয়েশন অব সাউথইস্ট এশিয়ান নেশনস (আসিয়ান) সম্মেলনে সরাসরি অংশগ্রহণ না করার ঘোষণা দিয়েছেন। মোদির এই সিদ্ধান্তের কারণে কুয়ালালামপুরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে সম্ভাব্য দ্বিপক্ষীয় বৈঠক আর হচ্ছে না।
মোদির সিদ্ধান্ত ও প্রতিনিধি পাঠানো
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সময়সূচির ব্যস্ততার কারণে মোদি সম্মেলনে ভার্চুয়ালি অংশ নেবেন। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস. জয়শঙ্কর সম্মেলনে মোদির স্থলাভিষিক্ত হিসেবে ভারতের প্রতিনিধিত্ব করবেন।
মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের সঙ্গে ফোনালাপে মোদি বলেছেন, “আমার প্রিয় বন্ধু, উষ্ণ আলাপ হয়েছে। আসন্ন সম্মেলনের সাফল্যের জন্য শুভকামনা জানাই। ভার্চুয়ালি যোগদানের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি। আশা করছি আসিয়ান-ভারত বিস্তৃত কৌশলগত অংশীদারিত্ব আরও গভীর হবে।”
মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীও জানিয়েছেন, ভারতে চলমান দীপাবলি উৎসবের কারণে মোদি সরাসরি সম্মেলনে যোগ দিতে পারছেন না।
আসিয়ান সম্মেলনের প্রেক্ষাপট
কুয়ালালামপুরে আসিয়ান সম্মেলন ২৬ থেকে ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে। সম্মেলনে জোটের ১০টি সদস্য দেশের পাশাপাশি চীন, জাপান, এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক অংশীদাররা উপস্থিত থাকবেন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পও সম্মেলনে যোগ দিচ্ছেন। এর ফলে ধারণা করা হচ্ছিল, সম্মেলনের ফাঁকে মোদি ও ট্রাম্পের বৈঠক হতে পারে, যেখানে দুই দেশের বাণিজ্য চুক্তির সম্ভাব্য ঘোষণা হতে পারত। কিন্তু মোদির সরাসরি অংশগ্রহণ না করার কারণে বৈঠকটি স্থগিত হলো।
যুক্তরাষ্ট্র-ভারত বাণিজ্য আলোচনার প্রভাব
ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র কয়েক মাস ধরে বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে আলোচনা চালাচ্ছে। দুই দেশের আলোচনার প্রায় সমাপ্তি পর্যায়ে পৌঁছলেও, মোদির সম্মেলনে না যাওয়া ইঙ্গিত দিচ্ছে যে চুক্তি এখনো চূড়ান্ত হয়নি।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ভারতের পক্ষ থেকে সময়সূচির ব্যস্ততার আড়ালে ট্রাম্পের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক এড়ানোর রাজনৈতিক কৌশলও থাকতে পারে।
আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া
আসিয়ান সম্মেলনে মোদির সরাসরি অংশগ্রহণ না করার খবর আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় আলোচনার বিষয় হয়ে উঠেছে। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, ভার্চুয়াল যোগ দেওয়া শক্তিশালী কৌশল হলেও দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের সম্ভাবনা কমে গেছে।
যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য অংশীদাররা এই পরিস্থিতিকে নজরদারি করছেন। বিশেষজ্ঞদের মতে, ভারতীয় কূটনীতি এবং সময়সূচি নির্ধারণে দেশটি যথেষ্ট সতর্কতার সঙ্গে পদক্ষেপ নিয়েছে।
বিশ্লেষণ ও ভবিষ্যত দিকনির্দেশনা
ভার্চুয়াল অংশগ্রহণের মাধ্যমে মোদি সম্মেলনে যোগ দিচ্ছেন, তবে এটি দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের অনুপস্থিতি এবং বাণিজ্য চুক্তির দিক থেকে কিছুটা সীমিত। কূটনীতিবিদরা বলছেন, আসিয়ান সম্মেলন ভারত ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মধ্যে কৌশলগত সম্পর্ককে শক্তিশালী করার একটি গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্ম।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ভার্চুয়াল অংশগ্রহণ হলেও মোদি এই সম্মেলনকে ভারতীয় কূটনীতি ও আন্তর্জাতিক সম্পর্কের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বলে দেখিয়েছেন।
নরেন্দ্র মোদির আসিয়ান সম্মেলনে সরাসরি না যাওয়া এবং ভার্চুয়াল যোগ দেওয়া আন্তর্জাতিক কূটনীতি ও বাণিজ্য আলোচনার প্রেক্ষাপটে আলোচিত হচ্ছে। ট্রাম্পের সঙ্গে সম্ভাব্য বৈঠক স্থগিত হওয়া এবং ভার্চুয়াল অংশগ্রহণের মাধ্যমে ভারতের কৌশলগত অবস্থান নির্ধারিত হয়েছে। ভবিষ্যতে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য চুক্তি এবং দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের দিকে বিশ্ব কূটনীতির নজর থাকবে।
এম আর এম – ১৯১৭,Signalbd.com



