বাংলাদেশ

শিক্ষকদের দাবি না মানলে বড় ঝড় আসছে, সামাল দিতে পারবেন না: ডাকসু ভিপি

Advertisement

 ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) ভিপি আবু সাদিক কায়েম শিক্ষকদের ন্যায্য দাবির প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন। তিনি সতর্ক করেছেন, যদি দাবিগুলো মানা না হয়, তাহলে উত্তাল পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে যা নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হবে।

শিক্ষকদের আন্দোলনে ডাকসুর সমর্থন

আজ রবিবার (১৯ অক্টোবর) সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আন্দোলনরত এমপিওভুক্ত শিক্ষক ও কর্মচারীদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেন ডাকসু ভিপি আবু সাদিক কায়েম। তিনি বলেন, ‘শিক্ষকদের ন্যায্য দাবি মেনে নেওয়া জরুরি। তা না হলে এমন উত্তাল পরিস্থিতি তৈরি হবে, যা প্রশাসন সামাল দিতে পারবে না।’

ভিপি আরও বলেন, শিক্ষকরা দেশের ভবিষ্যৎ গঠনের মূল ভিত্তি। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে তাদের ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। ‘বিপ্লবের পরও বৈষম্য দূর হয়নি। আগামীর প্রজন্ম গড়ার কারিগরদের যথাযথ মর্যাদা দেওয়া এখন সময়ের দাবি।’

শিক্ষকদের ন্যায্য দাবি

আন্দোলনরত শিক্ষকদের দাবি খুবই ন্যায্য। তারা বেতন বৃদ্ধি, বাড়িভাড়া ভাতা ২০ শতাংশ, মেডিকেল ভাতা ১ হাজার ৫০০ টাকা এবং উৎসব ভাতা ৭৫ শতাংশ বৃদ্ধির জন্য আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। অর্থ মন্ত্রণালয় যদিও বাড়িভাড়া ৫ শতাংশ নির্ধারণ করেছে, কিন্তু শিক্ষকদের দাবি এখনও পূরণ হয়নি।

ভিপি কায়েম বলেন, ‘তাদের দাবিটি সামান্য। এটি মানা না হলে প্রশাসন ও অন্তর্বর্তী সরকারকে বড় ধরনের উত্তেজনা মোকাবেলা করতে হবে। অতীতে যারা বৈষম্য ও ফ্যাসিবাদের শিকার হয়েছেন, তাদের তুলনায় এই পরিস্থিতি আরও গুরুতর হতে পারে।’

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি সতর্কতা

সাদিক কায়েম অন্তর্বর্তী সরকারের কিছু কর্মকর্তাকে সতর্ক করে বলেন, ‘শিক্ষকরা বঞ্চিত। যদি আপনি এই বৈষম্য বুঝতে না পারেন, তাহলে এখানে থাকার প্রয়োজন নেই। শিক্ষকদের প্রতি সহানুভূতি ও ন্যায্যতা প্রদর্শন করা আপনার কর্তব্য।’

তিনি আরও বলেন, ‘শেখ হাসিনার বাহিনী যেভাবে শিক্ষক ও কর্মচারীদের উপর হামলা চালাত, সেই ধরনের পরিস্থিতি আবার সৃষ্টি হবে না। তবে প্রশাসন যদি দাবিগুলো মানতে চায় না, তাহলে আরও বড় আন্দোলন হতে পারে।’

সামাজিক প্রভাব ও প্রতিক্রিয়া

শিক্ষকদের আন্দোলন দেশের শিক্ষাক্ষেত্রে বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে। শিক্ষার্থীরা সাধারণত শিক্ষক আন্দোলনের সাথে সংযুক্ত থাকে। ডাকসু ভিপির সমর্থন শিক্ষার্থীদের মধ্যে শিক্ষকদের প্রতি সমর্থন আরও দৃঢ় করছে।

কয়েকজন শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ মন্তব্য করেছেন, ‘শিক্ষকদের ন্যায্য দাবি মেনে নিলে শিক্ষাক্ষেত্রে শান্তি ফিরবে। কিন্তু যদি প্রশাসন উপেক্ষা করে, তাহলে আন্দোলন আরও তীব্র হবে।’

মধ্যবর্তী সরকারের সময়েও এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা বেতন ও ভাতা বৃদ্ধির দাবিতে আন্দোলন করেছেন। তবে এবার পরিস্থিতি শিক্ষকদের ন্যায্য দাবির পক্ষে ঢাকায় বড় সমর্থন পেয়েছে। দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষকদের অধিকার নিয়ে সংলাপ ও আন্দোলন চলমান।

বিশ্লেষণ ও বিশেষজ্ঞ মতামত

শিক্ষা বিশ্লেষকরা মনে করছেন, শিক্ষকরা ন্যায্য দাবি না মানা হলে দেশের শিক্ষাক্ষেত্রে স্থিতিশীলতা বিঘ্নিত হতে পারে। শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষের সমর্থন শিক্ষকদের আন্দোলনকে শক্তিশালী করছে।

ড. রুমী হাসান, শিক্ষা বিশেষজ্ঞ, বলেন, ‘শিক্ষকদের দাবি ন্যায্য। সরকারের উচিত দ্রুত এই সমস্যা সমাধান করা। নয়তো শিক্ষাক্ষেত্রে উত্তেজনা বৃদ্ধি পাবে এবং সামাজিক পরিবেশের উপর প্রভাব পড়বে।’

ডাকসু ভিপির কথায় স্পষ্ট, শিক্ষকদের ন্যায্য দাবি মানা না হলে উত্তাল পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে। প্রশাসন ও অন্তর্বর্তী সরকারকে এখনই পদক্ষেপ নিতে হবে। শিক্ষাক্ষেত্রে শান্তি বজায় রাখা এবং শিক্ষকদের মর্যাদা নিশ্চিত করা আগামী প্রজন্মের জন্য অপরিহার্য।

এম আর এম – ১৮৪৯,Signalbd.com

মন্তব্য করুন
Advertisement

Related Articles

Back to top button