
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জকসু) নির্বাচনের সংশোধিত নীতিমালা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে চূড়ান্ত করা হয়েছে। রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের পর এটি আইন আকারে প্রকাশিত হবে।
নীতিমালা অনুমোদনের প্রক্রিয়া
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বৈঠকের পর জকসু নীতিমালা চূড়ান্ত হয়েছে। নীতিমালা সংশোধন কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বিলাল হোসাইন জানান, আজকের বৈঠকে সমস্ত সংশোধনী অনুমোদিত হয়েছে। তিনি বলেন, “কেবল রাষ্ট্রপতি মহোদয়ের অনুমোদন পেলেই নীতিমালাটি আইন আকারে প্রবর্তিত হবে। আর কোনো প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার প্রয়োজন নেই।”
তিনি আরও যোগ করেন, “নিয়ম অনুযায়ী নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগ মুহূর্তে যেসব প্রস্তুতি করা সম্ভব, তা সম্পন্ন হবে। নির্বাচন সঠিক সময়ে অনুষ্ঠিত হবে বলে আমরা আশাবাদী।”
নীতিমালার মূল পরিবর্তনসমূহ
চূড়ান্তকৃত নীতিমালায় নির্বাচনের স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করার জন্য বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সংশোধনী অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে:
- ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা বৃদ্ধি।
- প্রার্থী ও ভোটারদের তথ্য যাচাইয়ের সুস্পষ্ট নিয়ম।
- নির্বাচনী পরিচালনায় প্রশাসনিক তদারকি ও দায়িত্ব নির্ধারণ।
- বিরোধিতা বা ঝুঁকি কমাতে নির্বাচনী আচরণবিধি এবং শৃঙ্খলা বজায় রাখা।
এই পরিবর্তনগুলো জকসু নির্বাচনকে আরও সুষ্ঠু ও নিরাপদ করার লক্ষ্য রেখে প্রণীত।
জকসুর দীর্ঘ প্রতীক্ষা
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের নির্বাচন প্রতিষ্ঠার পর কখনো অনুষ্ঠিত হয়নি। শিক্ষার্থীরা দীর্ঘদিন ধরে নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলন করে আসছেন।
গত ৭ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন পাঁচ সদস্যের একটি নির্বাচন প্রস্তুতি কমিটি গঠন করে। এরপর ১৭ সেপ্টেম্বর জকসুর রোডম্যাপ প্রকাশ করা হয়। এই রোডম্যাপ অনুযায়ী, আইন প্রণয়ন হওয়ার পর আগামী ২৭ নভেম্বর নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে।
প্রভাব ও প্রতিক্রিয়া
নীতিমালা চূড়ান্ত হওয়ার খবরটি শিক্ষার্থী ও শিক্ষাঙ্গনের মধ্যে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। ছাত্র নেতারা বলছেন, “এটি দীর্ঘদিনের আন্দোলনের ফল। আমরা আশা করি, এবার নির্বাচনের মাধ্যমে ছাত্রদের স্বতন্ত্র প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত হবে।”
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনও জানিয়েছেন, তারা নির্বাচনকে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে আয়োজনের জন্য প্রস্তুত। পাশাপাশি প্রশাসনিক তদারকিও জোরদার করা হবে।
বিশ্লেষণ ও বিশেষজ্ঞ মতামত
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, জকসু নির্বাচনের চূড়ান্ত নীতিমালা শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিত্ব এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের গণতান্ত্রিক পরিবেশকে শক্তিশালী করবে।
অধ্যাপক মোহাম্মদ বিলাল হোসাইন উল্লেখ করেন, “নীতিমালা বাস্তবায়িত হলে ছাত্রদের ভোটাধিকার ও নির্বাচনে অংশগ্রহণ আরও সুসংগঠিত হবে। এটি শিক্ষার্থীদের মধ্যে দায়বদ্ধতা ও নেতৃত্ব বিকাশে সহায়ক।”
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের পর আইন প্রবর্তিত হলে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে দীর্ঘ সময় ধরে প্রার্থিত গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি নিশ্চিত হবে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে জকসু নীতিমালা চূড়ান্ত হওয়ায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ নির্বাচন এখন বাস্তবায়নের অপেক্ষায়। রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের পর এটি আইন আকারে প্রকাশিত হবে। শিক্ষার্থী, প্রশাসন ও বিশ্লেষকরা একসঙ্গে আশা করছেন, নির্বাচনের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ ও শক্তিশালী ছাত্র প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত হবে।
এম আর এম – ১৭৬০,Signalbd.com