আঞ্চলিক

বাসর ঘরে ডাকাতের হানা, স্বর্ণালংকার লুট

Advertisement

চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলার বড়উঠান ইউনিয়নের কৈয়গ্রাম এলাকায় নববিবাহিত এক দম্পতির বাসর রাতে ভয়াবহ ডাকাতি সংঘটিত হয়েছে। ডাকাতরা পরিবারের সদস্যদের আতঙ্কিত করে প্রায় ১০ ভরি স্বর্ণালংকার, নগদ দুই লাখ টাকা ও অতিথিদের উপহার লুট করে। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে এবং একটি অস্ত্র ও তিন রাউন্ড গুলি উদ্ধার করেছে।

ঘটনা ও ডাকাতির বিস্তারিত

শনিবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে, নবদম্পতির বাসর রাতে, হায়েস গাড়িতে করে ৮ থেকে ১০ জন ডাকাত উপস্থিত হয়। তারা ডিবি পুলিশ পরিচয়ে বাসার ভেতরে প্রবেশ করে এবং পরিবারের সদস্যদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে। ডাকাতরা নতুন বউয়ের ৬ ভরি এবং বরের মায়ের ৪ ভরি স্বর্ণালংকারসহ অতিথিদের কানের দুল, আংটি, মোবাইল ফোন এবং নগদ দুই লাখ টাকা লুট করে নিয়ে যায়।

ভুক্তভোগী বর আরিফুল ইসলাম জানান, “আমার বিয়ের অনুষ্ঠান শেষে বউ নিয়ে রাত একটার দিকে ঘরে আসি। কিছুক্ষণ পর এই ডাকাতরা আমাদের ওপর হামলা চালায়। তাদের মুখে মাস্ক ছিল এবং হাতে ছিল অস্ত্র।”

পর্যবেক্ষকরা জানিয়েছেন, কিছু ডাকাত আগেই বিয়ের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিল। সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করলে সাদা গেঞ্জি ও জিন্স প্যান্ট পরা ব্যক্তিদের শনাক্ত করা সম্ভব হতে পারে।

পুলিশি অভিযান ও উদ্ধার

ঘটনার পর পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। কর্ণফুলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ শরীফ জানান, একটি অস্ত্র ও তিন রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন আলামত জব্দ করে তদন্ত প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।

ভুক্তভোগী পরিবার অভিযোগ করেছেন, ডাকাতদের সঙ্গে মুখোমুখি অবস্থায়ও পুলিশ তেমন কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। পরে পরিবারের সদস্যরা প্রাইভেটকারে ডাকাতদের পিছু নিলেও তারা পালিয়ে যায়।

চট্টগ্রামে সম্প্রতি এমন ধরনের বাসার ডাকাতির ঘটনা বেড়েছে। বিশেষ করে নববিবাহিত দম্পতিদের বাসর রাতে লক্ষ্য করে ডাকাতির ঘটনা ঘটছে। নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এসব ঘটনা সামাজিক নিরাপত্তা ও পুলিশি তৎপরতার চূড়ান্ত গুরুত্ব তুলে ধরে।

এছাড়া প্রথাগত বিয়ের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ব্যক্তিদের মধ্যেও কিছু অপরাধী পরিকল্পনা করে থাকতে পারে, যা তদন্তে উঠে এসেছে। তাই পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কৌশলগত পদক্ষেপ প্রয়োজন।

প্রতিক্রিয়া

ডাকাতির ঘটনায় এলাকার সাধারণ মানুষ আতঙ্কিত। স্থানীয়রা জানান, এমন ঘটনায় নিরাপত্তার অভাব অনুভূত হচ্ছে। সামাজিকভাবে এমন ঘটনা পরিবারের মানসিক ও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার ওপর প্রভাব ফেলছে।

পুলিশ ও প্রশাসন জানিয়েছে, ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত শনাক্ত ও গ্রেপ্তারের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। স্থানীয় প্রশাসনও পরিবারকে সমর্থন প্রদান করছে।

মতামত

সামাজিক নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা বলছেন, নববিবাহিত দম্পতিদের বাসর রাতে লক্ষ্য করে ডাকাতি চালানো একটি পরিকল্পিত অপরাধ। বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দেন, পরিবারের নিরাপত্তার জন্য কড়াকড়ি, সিসিটিভি ক্যামেরা, আত্মরক্ষার ব্যবস্থা এবং স্থানীয় পুলিশের সাথে সমন্বয় জরুরি।

আইন বিশেষজ্ঞরা আরও বলেন, এ ধরনের ঘটনা রোধে সমাজে সচেতনতা বৃদ্ধি, পুলিশি তৎপরতা ও স্থানীয় কমিউনিটির নিরাপত্তা ব্যবস্থার গুরুত্ব অপরিসীম।

কর্ণফুলীর কৈয়গ্রাম এলাকায় বাসর রাতে সংঘটিত ডাকাতি প্রমাণ করে যে, সামাজিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা এখনও পুরোপুরি কার্যকর নয়। পুলিশের দ্রুত পদক্ষেপ ও স্থানীয় প্রশাসনের সমন্বয় গুরুত্বপূর্ণ। তবে পরিবার ও স্থানীয় জনগণকে সচেতন এবং প্রস্তুত থাকা প্রয়োজন। ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা রোধে পুলিশের কার্যক্রম কতটা কার্যকর হবে, সেটাই অপেক্ষার বিষয়।

এম আর এম – ১৭৪৫,Signalbd.com

মন্তব্য করুন
Advertisement

Related Articles

Back to top button