
স্কটল্যান্ডের এক নারী তুর্কি টেলিভিশন সিরিজ ‘এস্টাব্লিশমেন্ট: ওসমান’ দেখে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছেন। জুলিয়েটা লোরেনা মার্টিনেজ নামের এই নারী করোনার লকডাউনের সময় তুর্কি ড্রামা দেখার সময় ইসলাম ও তুর্কি সংস্কৃতির প্রতি গভীর আগ্রহ তৈরি হয়। পরে দীর্ঘ গবেষণার পর তিনি ইসলাম ধর্ম গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেন।
সিরিজের প্রভাব
বোজদাগ ফিল্মের প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান জানিয়েছে, মার্টিনেজ ‘ওসমান’ সিরিজটি দেখার সময় তুর্কি ইতিহাস, সংস্কৃতি এবং ইসলামের নৈতিক শিক্ষা সম্পর্কে আকৃষ্ট হন। সিরিজের কাহিনি তাকে এমনভাবে অনুপ্রাণিত করে যে সে কোরআন পড়া শুরু করেন।
মার্টিনেজ আনাদোলু এজেন্সিকে জানান, “কোভিড-১৯ লকডাউনের সময় আমি তুর্কি টেলিভিশন দেখেছিলাম। তাদের গল্প, ইতিহাস এবং ইসলামিক তথ্য আমাকে গভীরভাবে অনুপ্রাণিত করেছিল, যা আগে আমি জানতাম না।”
ইসলাম গ্রহণের প্রক্রিয়া
সিরিজটি দেখার পর তার আগ্রহ আরও বাড়ে। জুলিয়েটা বলেন,
“আমি ধীরে ধীরে ইসলামিক বিষয় নিয়ে গবেষণা শুরু করি। দুই বছরের পর, সিরিজের গল্প এবং গবেষণার আলোকে আমি শাহাদা গ্রহণ করি এবং মুসলিম হই।”
এই সিদ্ধান্তের ফলে তার জীবনে নতুন দৃষ্টিভঙ্গি আসে। তিনি কোরআন অধ্যয়ন এবং ইসলামের নৈতিক শিক্ষাকে আরও গভীরভাবে অনুসরণ শুরু করেন।
তুরস্ক সফর এবং স্টুডিও পরিদর্শন
ইসলাম গ্রহণের পরে জুলিয়েটা তুরস্ক সফর করেন। তিনি ইস্তাম্বুলে অবস্থিত বোজদাগ ফিল্ম স্টুডিও পরিদর্শন করেন। সেখানে তিনি ‘ওসমান’ সিরিজে ব্যবহৃত কাই ট্রাইব ক্যাম্পসহ বিভিন্ন চিত্রায়নের স্থান ঘুরে দেখেন।
স্টুডিও পরিদর্শন তাকে সিরিজের পেছনের ইতিহাস এবং উৎপাদন প্রক্রিয়া সম্পর্কে আরও ধারণা দেয়। এছাড়াও তিনি তুর্কি সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের সঙ্গে সরাসরি সংযোগ স্থাপন করেন।
সামাজিক মাধ্যমে প্রতিক্রিয়া
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে। অনেক ব্যবহারকারী মন্তব্য করেছেন যে, ইতিহাসভিত্তিক সিরিজ কিভাবে মানুষের চিন্তাভাবনা ও বিশ্বাসকে প্রভাবিত করতে পারে, এটি তার উজ্জ্বল উদাহরণ।
সামাজিক প্রতিক্রিয়ায় দেখানো হয়েছে যে, বিনোদনমূলক মাধ্যম কেবল মানুষের মনের বিনোদন দেয় না, বরং তা তাদের শিক্ষাগত ও আধ্যাত্মিক চিন্তাভাবনাতেও প্রভাব ফেলে।
বিশেষজ্ঞ মন্তব্য
সংস্কৃতি ও ধর্ম বিষয়ক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, আন্তর্জাতিক বিনোদন মাধ্যম মানুষের বিশ্বাস ও দৃষ্টিভঙ্গিতে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। বিশেষ করে ইতিহাসভিত্তিক ধারাবাহিকগুলো দর্শকের মধ্যে ঐতিহাসিক ও ধর্মীয় সচেতনতা বৃদ্ধি করে।
বিশেষজ্ঞরা আরও বলছেন, এই ধরনের ঘটনাগুলো দেখায়, যে বিনোদন কেবল মনোরঞ্জন নয়, বরং মানুষের সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় জ্ঞান বৃদ্ধির একটি শক্তিশালী মাধ্যম হতে পারে।
স্কটিশ নারী জুলিয়েটা লোরেনা মার্টিনেজের ইসলাম গ্রহণের ঘটনা আন্তর্জাতিকভাবে আলোচিত হয়েছে। এটি প্রমাণ করে যে, বিনোদন এবং শিক্ষামূলক সামগ্রী মানুষের চিন্তাভাবনা এবং জীবনধারার উপর গভীর প্রভাব ফেলতে পারে।
বিশ্লেষকদের মতে, এই ধরনের ঘটনা আরও দেখায় যে, সংস্কৃতি ও ধর্মীয় শিক্ষার সংমিশ্রণ মানুষের আধ্যাত্মিক যাত্রাকে প্রভাবিত করতে সক্ষম।
এম আর এম – ১৬৭৬,Signalbd.com