আঞ্চলিক

টুঙ্গিপাড়ায় ডাব পাড়াকে কেন্দ্র করে দুই গ্রামবাসীর সংঘর্ষ, আহত ১৫

Advertisement

গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় ডাব পাড়াকে কেন্দ্র করে দুই গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয়পক্ষের অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, মারামারির সূত্রপাত এক ব্যক্তিগত বচসা থেকে, যা পরে দুই গ্রামের ব্যাপক সংঘর্ষে রূপ নেয়। আহতদের মধ্যে দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

ঘটনার বিবরণ

ঘটনা ঘটে সোমবার (৬ অক্টোবর) বিকেল ৫টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত টুঙ্গিপাড়া উপজেলার পাটগাতী ইউনিয়নের শ্রীরামকান্দি ও গওহরডাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দাদের মধ্যে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শ্রীরামকান্দি গ্রামের রোহান উস্তা (২০) এবং গওহরডাঙ্গা গ্রামের সুমন খান (১৮) এক গাছের ডাব পাড়া নিয়ে বচসা শুরু করেন।

একপর্যায়ে ব্যক্তিগত দ্বন্দ্ব মারামারিতে রূপ নেয় এবং বিষয়টি দ্রুত দুই গ্রামের লোকজনের নজরে আসে। উভয়পক্ষ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এতে অন্তত ১৫ জন আহত হন। আহতদের মধ্যে দুজনকে গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বাকিদের টুঙ্গিপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।

টুঙ্গিপাড়া এলাকায় সাম্প্রতিক বছরগুলোতে গ্রামের সম্পত্তি ও উত্পাদনকে কেন্দ্র করে ছোটখাটো বিবাদ ঘটেছে। ডাব পাড়া বা গাছের মালিকানা সংক্রান্ত বিরোধ আগেও দুই গ্রামের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি করেছিল। তবে সোমবারের ঘটনা তুলনামূলকভাবে সবচেয়ে বড় সংঘর্ষের রূপ নেয়।

স্থানীয়রা জানান, দুই গ্রামের মধ্যে পূর্বে কখনও কখনও কথা-কাটাকাটি হতো, কিন্তু এবার তা সরাসরি মারামারিতে রূপ নিয়েছে।

প্রভাব ও প্রতিক্রিয়া

এই সংঘর্ষের ফলে স্থানীয় নিরাপত্তা পরিস্থিতি উত্তেজনাপূর্ণ হয়ে উঠেছে। স্থানীয় বাসিন্দারা আতঙ্কিত। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে যাতে পরিস্থিতি পুনরায় নিয়ন্ত্রণহীন না হয়।

টুঙ্গিপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুল ইসলাম জাহাঙ্গীর জানান, “বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। আহতদের সঠিক চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে এবং পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখা হচ্ছে।”

চিকিৎসা ও পুনর্বাসন ব্যবস্থা

আহতদের মধ্যে যারা গুরুতর আহত, তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে এবং বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। স্থানীয় স্বাস্থ্যকর্মীরা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন। এছাড়া পুলিশ আহতদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছে এবং সংঘর্ষের পুনরাবৃত্তি রোধে এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করেছে।

স্থানীয়রা আশা করছেন, দ্রুত সময়ে শান্তি ফিরে আসবে এবং পুনরায় গ্রামবাসীদের মধ্যে সুসম্পর্ক প্রতিষ্ঠা হবে।

বিশেষজ্ঞ মতামত

স্থানীয় প্রশাসনিক কর্মকর্তা এবং সমাজবিজ্ঞানীরা বলেন, গ্রামীণ এলাকায় সম্পত্তি বা প্রাকৃতিক সম্পদের মতো বিষয় নিয়ে ছোটখাটো বিবাদ বড় সংঘর্ষে রূপ নেয়। তারা আরও বলেন, “স্থানীয় শান্তি রক্ষার জন্য স্থানীয় কমিটি এবং পুলিশ কার্যকরভাবে কাজ করছে। ভবিষ্যতে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধ করতে সমাজ সচেতনতা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন।”

টুঙ্গিপাড়ায় ডাব পাড়াকে কেন্দ্র করে দুই গ্রামবাসীর সংঘর্ষে ১৫ জন আহত হওয়া একটি সতর্কবার্তা। গ্রামীণ এলাকায় সম্পত্তি ও প্রাকৃতিক সম্পদের দ্বন্দ্ব দ্রুত বড় সংঘর্ষের আকার নিতে পারে। স্থানীয় প্রশাসন এবং সমাজ সচেতনতার মাধ্যমে শান্তি বজায় রাখা অত্যন্ত জরুরি।

এম আর এম – ১৬৫৫,Signalbd.com

মন্তব্য করুন
Advertisement

Related Articles

Back to top button