বানিজ্য

আবারও বাড়লো স্বর্ণের দাম, ভরি ২ লাখ ছুঁইছুঁই

Advertisement

দেশের বাজারে আবারও স্বর্ণের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস) শনিবার (৪ অক্টোবর) রাতে নতুন দাম ঘোষণা করেছে। নতুন মূল্যে ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি (১১.৬৬৪ গ্রাম) স্বর্ণের দাম দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৯৭ হাজার ৫৭৬ টাকা। এই নতুন দাম রবিবার (৫ অক্টোবর) থেকে কার্যকর হবে।

বাজুসের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, স্থানীয় বাজারে তেজাবি স্বর্ণের (পিওর গোল্ড) মূল্য বৃদ্ধির কারণে নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। নতুন দামের সঙ্গে সরকার নির্ধারিত ৫ শতাংশ ভ্যাট এবং বাজুস নির্ধারিত ন্যূনতম মজুরি ৬ শতাংশ যোগ করতে হবে। গহনার ডিজাইন ও মানভেদে মজুরির তারতম্য হতে পারে।

বর্তমান স্বর্ণের বাজারের বিশদ

নতুন মূল্য অনুযায়ী, ২২ ক্যারেট স্বর্ণের দাম প্রতি ভরি ১ লাখ ৯৭ হাজার ৫৭৬ টাকা, ২১ ক্যারেটের দাম ১ লাখ ৮৮ হাজার ৫৯৫ টাকা, ১৮ ক্যারেটের দাম ১ লাখ ৬১ হাজার ৬৫১ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি দাম নির্ধারিত হয়েছে ১ লাখ ৩৪ হাজার ২৫৩ টাকায়।

রুপার দাম আপাতত অপরিবর্তিত রয়েছে। ২২ ক্যারেট রুপার দাম প্রতি ভরি ৩ হাজার ৬২৮ টাকা, ২১ ক্যারেট ৩ হাজার ৪৫৩ টাকা, ১৮ ক্যারেট ২ হাজার ৯৬৩ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতি অনুযায়ী প্রতি ভরি রুপার দাম ২ হাজার ২২৮ টাকা।

দাম বৃদ্ধির কারণ

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আন্তর্জাতিক বাজারে স্বর্ণের দর বৃদ্ধির পাশাপাশি স্থানীয় বাজারে মুদ্রাস্ফীতি এবং বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হার বেড়ে যাওয়ায় দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়া সোনার সরবরাহ সীমিত হওয়ায় দাম বৃদ্ধির প্রবণতা দেখা দিয়েছে।

বাজুস জানিয়েছে, বাজারে স্বর্ণের দাম হালনাগাদ করা হয়েছে স্থানীয় ও বৈদেশিক বাজারের সমন্বিত পরিস্থিতি বিবেচনা করে। বিশেষ করে বিনিয়োগকারীরা এবং ব্যবসায়ীরা এই পরিবর্তনের জন্য সচেতন থাকবেন।

আগে গত কয়েক দিনের দাম বৃদ্ধির ধারা

গত কয়েক সপ্তাহ ধরে দেশে স্বর্ণের দাম ধাপে ধাপে বেড়েছে। সেপ্টেম্বর মাসে মাত্র দুই দিনের ব্যবধানে ২২ ক্যারেট স্বর্ণের দাম ২ হাজার ৪১৫ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছিল। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, আন্তর্জাতিক বাজারে স্বর্ণের দাম বৃদ্ধির সাথে দেশের মুদ্রাস্ফীতি মিলিয়ে এই দ্রুত বৃদ্ধি হয়েছে।

প্রভাব ও প্রতিক্রিয়া

স্বর্ণের নতুন দাম ঘোষণা হওয়ার পর বাজারে ক্রেতা ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। ক্রেতারা সাধারণত দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় ক্রয় সংরক্ষণ বা বিনিয়োগ স্থগিত রাখছেন। অন্যদিকে, ব্যবসায়ীরা নতুন দাম অনুযায়ী জুয়েলারি সামগ্রী বিক্রি শুরু করেছেন।

অর্থনীতিবিদরা মনে করেন, স্বর্ণের দাম বৃদ্ধির ফলে মধ্যবিত্ত ও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগ পরিকল্পনায় পরিবর্তন আসতে পারে। এছাড়া, বাজারে স্বর্ণের ক্রয়-বিক্রয়কে কেন্দ্র করে সাময়িক চাপ সৃষ্টি হতে পারে।

বিশ্লেষক ও বিশেষজ্ঞ মতামত

বাজার বিশ্লেষকরা মনে করছেন, আন্তর্জাতিক বাজারে স্বর্ণের দাম ও বৈদেশিক মুদ্রার মূল্যবৃদ্ধি ভবিষ্যতেও দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম প্রভাবিত করবে। তারা বলছেন, ক্রেতাদের উচিত বাজার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে বিনিয়োগ করা।

অর্থনীতিবিদরা আরও বলেন, সরকার ও বাজুসের নিয়মিত হালনাগাদকরণ স্বচ্ছ বাজার বজায় রাখতে সহায়ক। এছাড়া, স্বর্ণ বিনিয়োগ একটি নিরাপদ আশ্রয় হিসেবে বিবেচিত হওয়ায় দাম বৃদ্ধির প্রভাব সাময়িক হলেও দীর্ঘমেয়াদে বিনিয়োগকারীদের জন্য উপকারী হতে পারে।

দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম আবারও বেড়েছে, ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি দাম ছুঁইছে দুই লাখ টাকার ঘর। স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারের প্রভাব, মুদ্রাস্ফীতি এবং সরবরাহের সীমিততার কারণে এই দাম বৃদ্ধির ধারা অব্যাহত থাকতে পারে। ক্রেতা ও ব্যবসায়ীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হলো বাজার পর্যবেক্ষণ এবং সচেতন বিনিয়োগ।

এম আর এম – ১৬১৯,Signalbd.com

মন্তব্য করুন
Advertisement

Related Articles

Back to top button