
বাংলাদেশ-চীনের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০তম বার্ষিকীতে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, দুই দেশের জনগণের বন্ধুত্ব আরও দৃঢ় হয়েছে এবং দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা ফলপ্রসূ হয়েছে।
বাংলাদেশ-চীনের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০তম বার্ষিকী উপলক্ষে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াং-এর সঙ্গে অভিনন্দন বার্তা বিনিময় করেছেন। বার্তায় তিনি উল্লেখ করেন, গত ৫০ বছরে দুই দেশের জনগণের মধ্যে বন্ধুত্ব আরও দৃঢ় হয়েছে এবং দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক স্থিতিশীলভাবে বিকশিত হয়েছে। তিনি দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার সাফল্য উদযাপনযোগ্য বলে উল্লেখ করেছেন।
চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াংও বার্তায় বাংলাদেশের সঙ্গে বেল্ট অ্যান্ড রোড উদ্যোগে যৌথ কার্যক্রম, বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা ও সামগ্রিক কৌশলগত অংশীদারিত্বকে শক্তিশালী করার প্রস্তুতি প্রকাশ করেছেন।
দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের গুরুত্ব
ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, বাংলাদেশ চীনের সঙ্গে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতার মাধ্যমে ফলপ্রসূ অর্জন করেছে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বাণিজ্য ও প্রযুক্তি খাতে দুই দেশের পারস্পরিক সহযোগিতা বিশেষ উল্লেখযোগ্য। তিনি বলেন, দুই দেশের কৌশলগত অংশীদারিত্ব নতুন মাত্রা অর্জন করছে এবং আগামী দিনে এটি আরও বিস্তৃত হবে।
লি কিয়াং মন্তব্য করেছেন, চীন বাংলাদেশের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদী অংশীদারিত্বকে গুরুত্ব দেয় এবং দুই দেশের সম্পর্কের আরও গভীরতা আনার জন্য বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তিনি আরও বলেন, ৫০তম বার্ষিকীকে বেল্ট অ্যান্ড রোড সহযোগিতা ও অন্যান্য ক্ষেত্রে যৌথ কার্যক্রম ত্বরান্বিত করার একটি সুযোগ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
বাংলাদেশ এবং চীনের কূটনৈতিক সম্পর্ক ১৯৭৫ সালে স্থাপিত হয়। পরবর্তীতে দুই দেশ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতার মাধ্যমে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে দৃঢ় সম্পর্ক গড়ে তুলেছে। বাণিজ্য, অবকাঠামো উন্নয়ন, প্রযুক্তি ও শিক্ষা খাতগুলোতে বাংলাদেশের অগ্রগতি চীনের সঙ্গে সহযোগিতার ফল।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের আওতায় বাংলাদেশ-চীনের পারস্পরিক প্রকল্প এবং বিনিয়োগ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে আরও দৃঢ় করেছে।
প্রভাব ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
দুই দেশের এই সম্পর্ক স্থানীয় জনগণের জীবনযাত্রা ও অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, বাণিজ্যিক ও অবকাঠামোগত প্রকল্পগুলো বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সক্ষমতা বৃদ্ধি করেছে।
ড. মুহাম্মদ ইউনূস উল্লেখ করেছেন, আগামী দিনে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও প্রযুক্তি খাতে আরও সহযোগিতা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে শক্তিশালী করবে। লি কিয়াংও বলেন, চীন বাংলাদেশের সঙ্গে কৌশলগত অংশীদারিত্বকে আরও বিস্তৃত করতে প্রস্তুত।
বিশেষজ্ঞ ও বিশ্লেষক মতামত
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকরা বলছেন, বাংলাদেশ-চীনের সম্পর্ক কেবল কূটনৈতিক নয়, এটি দুই দেশের জনগণের মৈত্রী ও পারস্পরিক উন্নয়নের প্রতিফলন। তারা মনে করেন, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, বাণিজ্য ও সাংস্কৃতিক বিনিময় এই সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করছে।
বিশেষজ্ঞরা আরও যুক্ত করেছেন, বেল্ট অ্যান্ড রোড উদ্যোগ এবং যৌথ অবকাঠামো প্রকল্পসমূহ ভবিষ্যতে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সক্ষমতা বৃদ্ধি করবে এবং দীর্ঘমেয়াদে দুই দেশের বন্ধুত্বকে আরও দৃঢ় করবে।
বাংলাদেশ-চীনের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০তম বার্ষিকী উদযাপন আন্তর্জাতিক মৈত্রী ও সহযোগিতার একটি প্রতীক হিসেবে দেখা হচ্ছে। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াং উভয়েই এই সম্পর্ককে আরও দৃঢ় করার অঙ্গীকার করেছেন। বিশ্লেষকদের মতে, ভবিষ্যতে শিক্ষা, বাণিজ্য ও অবকাঠামো খাতে যৌথ উদ্যোগ বাংলাদেশের জন্য বিশেষ সুফল বয়ে আনবে এবং দুই দেশের জনগণের বন্ধুত্ব আরও দৃঢ় হবে।
এম আর এম – ১৬১৭,Signalbd.com